২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:৪৭:১৬ অপরাহ্ন


সেঞ্চুরী নয় সমালোচকদের লজ্জা দিলেন রিয়াদ
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১০-২০২৩
সেঞ্চুরী নয় সমালোচকদের লজ্জা দিলেন রিয়াদ সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে সেঞ্চুরীর পর রিয়াদ আকাশের দিকে আঙ্গুল তুলে কী দেখাচ্ছেন,সবই তাঁর কৃপা?/ছবি সংগৃহীত


বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্বর্ণ প্রজন্মের অন্যতম মহিরুহ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ কাল বহুদিন পর ৬ নম্বরে ব্যাটিং করে ১১১ বলে ১১১ রান করে সেই শত সিদ্ধ কথাটাই প্রমান করলো "ফর্ম ২ টেম্পরারী, ক্লাস ২ পার্মানেন্ট"। কাল মুম্বাইয়ের ওয়ানখেদে স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার একশ ছোয়া ৩৮২/৫ উইকেট রানের জবাবে বাট করতে নেমে ১২২ রানে ৭ উইকেট হারিয়েছিল। অনেক দিন পর ৬ নম্বরে খেলতে নেমে ওর সঙ্গী ছিল লেজের সারির ব্যাটসম্যানরা।  আগ্রাসী দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের বিরুদ্ধে দাপুটে ব্যাটিং করে রিয়াদ আইসিসি টুর্নামেন্টে নিজের চতুর্থ শত রান তুলে পারফরমেন্স দিয়েই টিম মানাজেমেন্টের উপেক্ষার জবাব দিলো।


ভাবুন সবাই বিবর্ণ ,বিপর্যস্ত বাংলাদেশ দলের বর্তমান অবস্থায় রিয়াদের এই অর্জন কতটুকু গুরুত্ব বহন করে। অথচ রিয়াদকে দল থেকে ছেটে ফেলার সব আয়োজন সাজিয়েছিল বিসিবি টিম ম্যানেজমেন্ট। বিসিবি সভাপতি নিজেই ২৫ জনের প্রাথমিক দলেও রিয়াদের অন্তর্ভুক্তির যুক্তি নাকি খুঁজে পাচ্ছিলেন না। আর হেড কোচ হাতুরাসিংহ আগের এ্যাসাইনমেন্ট সময় থেকেই রিয়াদকে সব ফরমেট থেকে ছেটে ফেলার ধান্দায় ছিল। মিডিয়া ,শুভাকাংখিদের ক্রমাগত চাপে দলে নেয়া হলেও কখনো ৭ কখনো ৮ নম্বরে ব্যাট করানো হয়েছে সম্পুর্ন অন্যায়ভাবে। কাল দক্ষিন আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৬ নম্বরে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে ঝক ঝকে শত রান করেই রিয়াদ অবহেলার কঠিন জবাব দিলো। তাও  এমনি এক ম্যাচে এমনি এক সময়ে যখন সবাই ব্যর্থ।  বোলাররা বেধড়ক মার খাওয়ার পর ধসে পড়েছে ব্যাটিং। রিয়াদের প্রতিটি চার ,ছয় হয়তো শেল হয়ে বিঁধেছে হাতুরা সহ টিম মানাজেমেন্টের বুকে।


অনেকের মত আমরাও বলেছি , লিখেছি বাংলাদেশের বর্তমান দলে মুশফিক ,মাহমুদুল্লাহ খেলার মান এবং অভিজ্ঞতায় টপ অর্ডারে খেলার যোগ্যতা রাখে। অথচ কোন বিবেচনায় রিয়াদকে ৭ ,৮ নম্বরে খেলানো হয়েছে সেই প্রশ্নের জবাব সুজন ,সাকিব ,হাতুরা দিতে পারে। কিন্তু কাজটি যে অন্যায় সেটি মোক্ষম জবাব দিয়েছে রিয়াদ।  জেলি মাছের মত শরণ শক্তির ক্রিকেট প্রশাসকরা সিন্ডিকেট প্রভাবেই রিয়াদকে বাদ দিতে চেয়েছিলো। আমি নিজে ২০১৫ বিশ্বকাপে রিয়াদকে দুটো শতরান করতে দেখেছি ৪ নম্বরে ব্যাটিং করে। নিয়মিত টপ অর্ডারে ব্যাটিং করলে ৮-১০ শতরান যোগ হত রিয়াদের সঞ্চয়ে।  দলের স্বার্থে নীরবে খেলেছে যখন যেখানে সুযোগ দেয়া হয়েছে। সৎ  মানুষের সৎ প্রয়াসে আল্লাহ সহায় থাকেন। তিন তিনটি ইনিংস খেলেছে রিয়াদ এবার বিশ্ব কাপে। প্রতিটি ইনিংসে নিজের জাত চিনিয়েছে।

বিশ্বকাপের দোহাই দিয়ে বহুকিছু পার পেয়েছে বিসিবি ও টিম ম্যানেজম্যান্ট। বহু পরীক্ষা নিরীক্ষার চালিয়ে অনেক বিপর্যস্ত অবস্থা হজম করেছে টিম বাংলাদেশ। নিজ মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছেও একই অজুহাত দেখিয়ে বিধ্বস্ত। সে ধারাবাহিকতা বিশ্বকাপে চললে তাহলে লাভ কী হলো? এতটা প্লানহীন গা বাচানো ক্রিকেট প্রশাসন আর কতকাল চলবে সেটাই প্রশ্ন ক্রিকেট প্রেমীর। ১০ দলের বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচ খেলা বাংলাদেশের অবস্থান এখন সবার নিচে। কি বলবে সাকিব। এভাবেই যদি বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়? কোন মুখ নিয়ে দেশে ফিরে কী বলবেন তারা?

শেয়ার করুন