২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৩:২৯:২১ পূর্বাহ্ন


দেশ’কে রাজিন সালেহ
ব্যাটসম্যান মুমিনুলকে বড্ড বেশি প্রয়োজন
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৬-২০২২
ব্যাটসম্যান মুমিনুলকে   বড্ড বেশি প্রয়োজন


বিসিবি দীর্ঘদিন ধরেই মুমিনুল হককে টেস্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে সিলেক্ট করে দিয়েছে। জাতীয় দলের অন্যকোনো ভার্সানে তার খেলার সুযোগ নেই। বা বিবেচনাও করা হয় না। ওয়ানডেতে ২০১৮ তে আবুধাবিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ানডেতে তার শেষ ম্যাচ। এরপর থেকেই টেস্টেই মনযোগ তার। স্বাভাবিকভাবেই বিসিবি মুমিনুলের কাছ থেকে বেটার পারফরমেন্স প্রত্যাশা করছে। দলের দায়িত্বটাও তার কাধে। কিন্তু মুমিনুলের যে মূলদায়িত্ব ব্যাটিং। সেটাতে রান নেই দীর্ঘদিন। দলের পারফরমেন্সও সুবিধাজনক নয়। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই টেস্টে খুবই বাজে অবস্থা। ঘরের মাঠে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজেও ব্যাটিং ব্যার্থতা ও সিরিজ হার। 

এতে বিসিবি নড়েচড়ে বসেছে। মুমিনুলের ব্যাপারে একটা আভাস ছিল হয় ব্যাটিং নতুবা ক্যাপ্টেনসী। একটি বেছে নিতে হবে। মুমিনুল তার ক্যারিয়ার যেটার উপর দাঁড়িয়ে সেটাই বেছে নিয়ে নিজ থেকেই ঘোষণা দিয়েছেন টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়ার। গত ৩১ মে মঙ্গলবার বিকেলে ওই ঘোষণা দেন তিনি বিসিবিতে যেয়ে বোর্ড সভাপতির সঙ্গে কথা বলে। তাহলে মুমিনুলের অবস্থান এখন কী। 

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক,  টেস্ট ক্রিকেটার রাজিন সালেহ’র কাছে। দেশ’কে তিনি বলেন,‘একটা দলের ক্রমাগত ব্যার্থতার দায়ভার দিন শেষে যেয়ে অধিনায়কের উপরই বর্তায়। সেক্ষেত্রে যেভাবেই হোক মুমিনুলের সরে যাওয়াতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে ওর পারফরমেন্স নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। কারণ একজন খেলোয়াড়ের ব্যাটপ্যাচ আসবে। সেটা সে আবার ওভারকাম করে ফেলবে। এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি মনে করি ক্যাপ্টেনসী ছেড়ে দিয়ে মুমিনুল যেন তার সেই দুর্দান্ত পারফরমেন্সে ফিরে আসে।


জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, টেস্ট ক্রিকেটার  রাজিন সালেহ/ছবি সংগৃহীত 


বিসিবিও যেটা সম্ভবত চাচ্ছে। কারণ ব্যাটিং লাইনে মুমিনুলের প্রয়োজনীয়তা অনেক। ব্যাট হাতে সে যে পারফরমেন্স করেছেন ইতিপূর্বে, সেটা ক’জন ব্যাটসম্যান করতে পেরেছেন। টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে সে দুর্দান্ত। তাছাড়া ওর বয়সও বা কী। এখনও বাংলাদেশ দলে টানা দশ বছর খেলে যাওয়ার বয়স ও সামার্থ ওর আছে।’ রাজিন বলেন,‘দলে যে ক’জন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান বা খেলোয়াড় রয়েছে মুমিনুল তার অন্যতম। মুশফিক ভাল করছেন। তামিম রয়েছেন। সাকিব রয়েছেন। তবু মুমিনুলের স্থানে তার বিকল্প নেই। ফলে টিম বাংলাদেশে ব্যাটসম্যান মুমিনুলের বড্ড প্রয়োজন।’ 

বাংলাদেশ দলের হয়ে ৫৩ টেস্ট খেলা মুমিনুল ক্যাপ্টেনসী করেছেন ১৭ টেস্টে। যার তিনটিতে জয়ের মুখ দেখেছে বাংলাদেশ। বাকি ১২ টাতে পরাজয় ও দুটি ম্যাচে ড্র। 

এক প্রশ্নের উত্তরে রাজিন সালেহ বলেন,‘দলের বর্তমান পারফরমেন্সে অনেকেই সন্তুষ্ট হতে পারছেন না এটা ঠিক। কিন্তু আমি মনে করি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট (চার দিনের ম্যাচ) এটাকে আরো গুছানো উচিৎ। ভারতে আড়াইমাস ধরে লংগারভার্সান ম্যাচ হয়। আমাদের দেশে ৬টি ম্যাচ হয়। অন্তত ১০ থেকে ১৪ টি ম্যাচ বছরে হলে সেখানে সব খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক ও হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলা হলে ক্রিকেটারদের গুণগত মানের আরো উন্নত হওয়া সম্ভব। কারণ দেশের সব স্টেডিয়ামের উইকেট একরকম নয়। এতে করে কোনোটাতে স্পিন ভাল,কোনোটা স্পোটিং। বা ব্যাটিং। ঘুরে ফিরে সবাই সব উইকেটে খেলে ম্যাচে দলের জন্য জয়ের চেষ্টা করা, বা পরাজয় এড়ানো। কিংবা সম্মানবাচানো ড্র করার লড়াই করে করে অভ্যস্ত হলে সেসকল খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলতে যেয়ে ওই মেজাজে খেলতে পারেন। যা দলের রেজাল্টের উপর প্রভাব পরবে।’ 

রাজিন সালেহ বলেন,‘শুধু খেলোয়াড়দের পারফরমেন্সের দিকে নজর দিলেও চলবে না। দেশে এখন অনেক ভালো কোচ রয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা ক্রিকেটার ও কোচিং প্যানেলকেও ভাল সম্মানীর ব্যাবস্থা প্রয়োজন। এতে তারা ক্রিকেটারদের উন্নতিতে আরো বেশি মনযোগী হতে পারেন। যা বাংলাদেশের ক্রিকেটেরই স্বার্থেই যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘শুধু বিদেশী কোচই নয়। দেশের কোচদেরকেও আরো বেশি মূল্যায়ন,তাদের পর্যাপ্ত পারিশ্রমিক ও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা তৈরি করলে ভবিষ্যতে ক্রিকেটের মান আরো বৃদ্ধি হবে।’  

উল্লেখ্য, রাজিন সালেহ টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় ২০০৩ এ করাচিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৮ এ শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেন তিনি। মোট ২৪ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন তিনি।  এছাড়া ওয়ানডে খেলেছেন ৪৩ টি। তার ক্যারিয়ারে একবার ইংল্যান্ড সফরে দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নিয়েছিলেন এ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।


শেয়ার করুন