২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৭:৪৮:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তারেক রহমান
যারা অবৈধ সরকার পতনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করবে তাদের নিয়ে জাতীয় সরকার করা হবে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৯-২০২২
যারা অবৈধ সরকার পতনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করবে তাদের নিয়ে জাতীয় সরকার করা হবে বক্তব্য রাখছেন তারেক রহমান


যারা বর্তমান অবৈধ এবং নিশিরাতের সরকার পতনে বিএনপির সাথে ঐক্যবদ্ধ বা যৌথভাবে আন্দোলন করবে তাদের নিয়েই বিএনপি আগামীতে জাতীয় সরকার গঠন করবে। গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ সব কথা বলেন। সদ্য ঘোষিত নিউইয়র্ক বিএনপির দক্ষিণের আয়োজনে এবং স্টেট বিএনপি ও মহানগর বিএনপি উত্তরের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি গত ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের ড্রাইভারসিটি প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল জ্যাকসন হাইটসে র‌্যালি, আলোচনা সভা, দলীয় সংগীত পরিবেশন এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন। অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নিউইয়র্ক মহানগর বিএনপি দক্ষিণের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম রেজার সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব বদিউল আলমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক গিয়াস আহমেদ, বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি সরফাত হোসেন বাবু, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসীম ভুইয়া, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, নিউইয়র্ক মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আহবাব চৌধুরী খোকন, সদস্য সচিব ফয়েজ চৌধুরী, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির আহ্বায়ক মওলানা অলিউল্যাহ আতিকুর রহমান, সদস্য সচিব সাইদুর রহমান সাইদ, জাসাস যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সায়েম, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সরওয়ার্দী, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতিন, বিএনপি নেতা গোলাম ফারুক শাহীন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, এমলাখ হোসেন ফয়সাল, দেওয়ান কাওছার, বিএনপি নেতা আবুল কাশেম, বদরুল হক আজাদ, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, জাসাস যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাওছার আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জনি, যুবদল নেতা আমানত হোসেন আমান, মিজানুর রহমান মিজান, জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এন হায়দার মুকুট, খলকুর রহমান, শাহাদাত হোসেন রাজু, গোলাম রহমান, জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাবেক সভাপতি নাছিম আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহেদ আলী মন্ডল, রিপন মিয়া, জাফর তালুকদার প্রমুখ।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভিডিও বার্তায় সবাইকে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানান, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহিদ হয়েছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালের এই দিনে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন এবং আমাদের একটি দেশ দিয়েছেন। তারই নেতৃত্বে আমরা দেশ এবং বহু দলীয় গণতন্ত্র পাই। তিনি বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানের মধ্যমণি হবার কথা ছিল আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার। তিনি আমাদের গণতন্ত্র দিয়েছেন এবং সংসদীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছেন। কিন্তু তাকে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পরাজিত শক্তি প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বন্দি করে রেখেছে। অথচ তিনি এই দেশ এবং দলের জন্য কাজ করেছেন। তার প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। তাকে বর্তমান নিশিরাতের সরকার, ভোট ডাকাত সরকার, মাফিয়া সরকার বিনা দোষে বন্দি করে রেখে। তিনি বলেন, গার্মেন্টস শিল্পের অবদান জিয়ার, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স জিয়ার অবদান, খাদ্যশস্যে জিয়ার অবদান। বিনামূল্য নারীশিক্ষা জিয়ার অবদান, ’৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ থেকে বাঙালিকে রক্ষায় রয়েছে জিয়ার অবদান। বাংলাদেশ ইমার্জিন টাইগার ছিল বিএনপির আমলে। তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী বলেছিলেন দেশ বাঁচান, মানুষ বাঁচান। তিনি অবস্থা বুঝেই বলেছিলেন। আজকে নিশিরাতের সরকারের মন্ত্রীদের কথায় প্রমাণ হয়েছে আমাদের হাতে গোলামির জিঞ্জির। বিএনপির ক্ষমতার উৎস জনগণ, আর নিশিরাতের সরকারের ক্ষমতার উৎস অন্য দেশ। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আমাদের শত শত নেতাকর্মীকে গুম ও খুন করছে। এটা এখন সারাবিশ্ব বলছে। তিনি আরো বলেন, আয়নাঘর তাদের ক্ষমতার উৎস। আদালত এখন আওয়ামী লীগের আইনজীবী ফোরামে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ভোট চুরির আখড়ায় পরিণত হয়েছে, দুদক দুর্নীতিবাজদের রক্ষাকবচ। এই অবস্থা থেকে দেশের মানুষ পরিত্রাণ চায়। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৪০ লাখ মামলা, যাদের বাড়িতে পুলিশ এবং র‌্যাব হানা দেয়। দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষ পরিবর্তন চায়। সুতরাং আমাদের এখন বক্তব্যের সময় নয়। আমাদের রাজপথে এবং আন্দোলনে থাকতে হবে। বিএনপি রাজপথে আছে এবং থাকবে। বিএনপি রাজপথে আছে বলেই পুলিশ এবং র‌্যাব গুলি করছে, আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে এখন ২১ কোটি ভোটার। তার মধ্যে ২ থেকে ৩ কোটি নতুন প্রজন্ম। তিনি নতুন প্রজন্মকে তাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের বাবারা দেশ দিয়েছে, আমাদের মারা গণতন্ত্র দিয়েছেন, আমরা স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন নতুন প্রজন্ম তাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। তিনি আরো বলেন, ২১ আগস্টের ঘটনা তাদেরই ষড়যন্ত্রের অংশ। ১/১১ ও তাদের ষড়যন্ত্রে হয়েছে। এই ষড়যন্ত্র এখনো বিদ্যমান। এই ষড়যন্ত্র রুখতে হবে- এটাই হোক আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শপথ। তিনি আরো বলেন, যারা বর্তমান অবৈধ এবং নিশিরাতের সরকার পতনে বিএনপির সাথে ঐক্যবদ্ধ বা যৌথভাবে আন্দোলন করবে তাদের নিয়েই বিএনপি আগামীতে জাতীয় সরকার গঠন করবে। এবার কোনো ষড়যন্ত্রে বিএনপি পা দেবে না, ফয়সালা হবে রাজপথে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন ও দোয়া পরিচালনা করেন আব্দুল লতিফ সম্রাট, দলীয় পাতা উত্তোন করেন আব্দুল লতিফ সম্রাট ও গিয়াস আহমেদ। কেক কাটেন তিনিসহ আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা। অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের বক্তব্য শেষে একটি র‌্যালি জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট পদক্ষিণ করে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মঞ্চে দাঁড়ানো নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি এবং ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, এম বাতিন, আব্দুল লতিফ সম্রাট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

অনুষ্ঠান সফল এবং সার্থক করার জন্য সভাপতি হাবিবুর রহসান সেলিম রেজা সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

শেয়ার করুন