১৯ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৪:৪০:৪৬ অপরাহ্ন


হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কিতে জর্জিয়া আওয়ামী লীগের সম্মেলন পণ্ড
আটলান্টা প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৬-২০২২
হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কিতে জর্জিয়া আওয়ামী লীগের সম্মেলন পণ্ড সম্মেলনে হাতাহাতি ধাক্কাধাক্কি


হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি এবং হৈচৈর মধ্যে পণ্ড হয়েছে জর্জিয়া আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এ সম্মেলনে চরমভাবে অপদস্ত হওয়া সত্তে¡ও অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদপেক্ষ গ্রহণ না করায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানসহ নেতৃবৃন্দের কঠোর সমালোচনা শুরু বাংলাদেশি কমিউনিটিতে। প্রকাশ্যে অশ্লীল ভাষায় গালি দেয়ার পাশাপাশি চেয়ার উঁচিয়ে মারতে যাওয়া মাহমুদ রহমানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপের পরিবর্তে উল্টো তাকেই সভাপতি রাখতে ৪ সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছেন সম্মেলনে উপস্থিত থাকা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ। 

অর্থাত জর্জিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নুরুল তালুকদার নাহিদকে মেনে নিয়ে ৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গ্রহণ করা না হলে সাংগঠনিক পদপে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। অথচ ওই নাম ঘোষণার পরই সম্মেলনের নামে কথিত সভায় হট্টগোল শুরু হয়। সাড়ে ৩ বছর আগে ড. সিদ্দিকুর রহমানসহ নেতৃবৃন্দ আটলান্টায় গিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। একপর্যায়ে জর্জিয়া স্টেট আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির অংশবিশেষ অর্থাত সভাপতি, সেক্রেটারিসহ ৫ জনের তালিকা ঘোষণা করেন। সেই ৫ জনের পে এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। তার মধ্যে নতুন এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ১২ জুন সন্ধ্যায় আটলান্টাস্থ দুলোতের সনেস্তায় একটি অডিটোরিয়ামে। 


সেখানে অতিথি হিসেবে আরো মঞ্চে উপবেশন করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ফজলুর রহমান, অন্যতম ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. মোহাম্মদ আলী মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান এবং আব্দুল হাসিব মামুন, প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম দুলাল মিয়া এবং নির্বাহী সদস্য শাহানারা রহমান। 

উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে জর্জিয়া স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে মাহমুদ রহমানের নাম ঘোষণা করেন ড. সিদ্দিকুর রহমান। সকলে করতালিতে মুখরিত করেন অডিটোরিয়াম। এরপর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নুরুল তালুকদার নাহিদের নাম ঘোষণার পরই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। ঘোষিত সভাপতি মাহমুদ রহমান অকথ্য ভাষায় গালি দিতে দিতে চেয়ার হাতে নিয়ে মারতে যান ড. সিদ্দিকুর রহমানকে। সকলে চেষ্টা করেন তাকে নিবৃত্ত করতে। কিন্তু ততোণে পরিস্থিতি টালমাটাল হয় এবং বিব্রত সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েন। এভাবেই পণ্ড হয়ে যায় বহুল প্রত্যাশিত সেই কমিটি গঠনের পরিক্রমা। 

এ প্রসঙ্গে মাহমুদ রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সম্মেলনের ৯০ শতাংশ চেয়েছেন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শেখ জামালকে। এতে সম্মতিও ছিল ড. সিদ্দিকের। কিন্তু অজ্ঞাত এক কারণে অন্যজনের নাম ঘোষণাকে কেউই মেনে নিতে পারছিল না। শেখ জামাল হচ্ছেন নিবেদিত সংগঠক আওয়ামী লীগের। 

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতির পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদপে গ্রহণে রহস্যজনক নীরবতায় ক্ষুব্ধ জর্জিয়ার আওয়ামী পরিবার। তারা অভিযোগ করেছেন, বিশেষ কারো পারপাস সার্ভে ব্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কোনো কোনো সংগঠক। তারই ভিকটিম হলো ফোরিডা স্টেট আওয়ামী লীগ, ওয়াশিংটন মেট্রো আওয়ামী লীগ এবং সবশেষে জর্জিয়া স্টেট আওয়ামী লীগ। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ‘এমন অথর্ব নেতৃত্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অবমুক্তি প্রত্যাশা’ করছেন। 

জর্জিয়া স্টেট আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের অভিপ্রায়ে সাড়ে ৩ বছর আগে ৫ জনের যে তালিকা ঘোষণা করা হয়েছিল সেখানে ছিলেন সভাপতি কায়সার আহমেদ, সহ-সভাপতি সৈয়দ মুরাদ এবং এইচ আর রাসেল, সেক্রেটারি মাহমুদ রহমান এবং যুগ্ম সম্পাদক নুরুল তালুকদার। 

এদিকে সম্মেলনের নামে কমিটি গঠনের কথিত সভার অপ্রীতিকর পরিস্থিতির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে শাহ সেলিম নামক একজনের ফেসবুকের মাধ্যমে। সেই পোস্টে শাহ সেলিম উল্লেখ করেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে যেসব বেয়াদবরা বেয়াদবি করেছে তাদেরকে জর্জিয়া আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হোক, তাকে সভাপতি ঘোষণা করার পরেও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাথে বেয়াদবি করেছে। যেহেতু সে সভাপতিত্ব প্রত্যাহার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ডক্টর সিদ্দিকুর রহমান ও নেতৃবৃন্দের প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি আপনাদের সিদ্ধান্তে অটল থেকে নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক নুরুল তালুকদার নাহিদের সাথে নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দেয়া হোক।’

শেয়ার করুন