০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০২:৬:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


ট্রাম্প এখন মারডক মিডিয়া ও রাজনীতির কাছে ‘বর্জ্য’
মঈনুদ্দীন নাসের
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-১১-২০২২
ট্রাম্প এখন মারডক মিডিয়া ও রাজনীতির কাছে ‘বর্জ্য’ ডোনাল্ড ট্রাম্প


রিপাবলিকান শিবিরে শোর উঠেছে ‘ট্রাম্পটি ডাম্পটি’। অর্থাৎ ট্রাম্প বর্জ্য। এই নির্বাচনে রিপাবলিকানদের হতাশাব্যঞ্জক পরিণতির পেছনে ট্রাম্পপ্রীতি, তাকে দিয়ে কাজ হবে না। রিপাবলিকান শিবিরের অন্যতম প্রভাবক রূপার্ট মারডক ট্রাম্পের ওপর থেকে নজর ফিরিয়ে এখন ফ্লোরিডার গভর্নর ডিসান্টিসের ওপর ফোকাস করছেন। স্পষ্টতই রূপার্ট মারডকের সাথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। এই মিডিয়া মোগল ট্রাম্পকে ডাকছে লুজার অর্থাৎ সোজা বাংলায় ‘হেরো’  (যে হেরে যায়)। অন্যদিকে ‘মিঞা ট্রাম্প’ টুইট করেছেন, ‘ফক্স নিউজ, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, নিউইয়র্ক পোস্ট সবাই গড়পরতা গভর্নর ‘ডি-সেঙ্কটিমোনিয়াস’ অর্থাৎ অকেজো ডিসেন্টিসের পক্ষে কাজ করছে। তার মেধা নেই কিন্তু ভালো গণযোগাযোগ রয়েছে। ট্রাম্প ও মিডিয়া মোগল রূপার্ট মারডকের মধ্যে এসব কিছু ঘটেছে যখন ট্রাম্প মনোনীতরা সাম্প্রতিক মধ্যবর্তী নির্বাচনে পাত্তারি গুটিয়েছেন। মার এলগোতে বসে তার আমন্ত্রিতদের নিয়ে ট্রাম্প শোর চিৎকার করেছে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে। এখনো তার হুঙ্কার চলছে। আর তার ফলশ্রুতিতে ঘটেছে রূপার্ট মারডক ও ট্রাম্পের মধ্যে সম্পর্কের ভাঙন। ট্রাম্পের যারা আশীর্বাদ পেয়েছে, তাদের মধ্যে নেভাদার গভর্নর পদে নির্বাচিত ব্যক্তিছাড়া বোধহয় সবাই ধরাশায়ী হয়েছে। এতে রক্ষণশীল রাজনীতি ও মিডিয়ার মধ্যে ভূকম্পন শুরু হয়ে যায়।

তার প্রকাশনা ও মিডিয়াকে নিয়ে মারডক দ্রুত ট্রাম্পের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। চিত্র করে দেখানো হয় হাম্পটি ডাম্পটির মতো বাল্যকালের ছড়ার প্যারোডি করে যে ট্রাম্প ‘দেয়াল থেকে পড়ে গেছে’। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সম্পাদকীয়তে লেখা হয় ট্রাম্প ২০১৮ সালে, ২০২০ সালে, ২০২১ সালে ও ২০২২ সালের নির্বাচনে পর পর কুপোকাত হয়েছে। রিপাবলিকানদের সে সর্বনাশ ডেকে এনেছে। ফক্স নিউজের অনলাইন ভার্সনে রিপাবলিকান দলকে ট্রাম্পের পথ থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। 

বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাম্প লিখেন নিউইয়র্ক পোস্ট আর তেমন সংবাদপত্র নয়। তারা ফ্লোরিডা গভর্নর ডিসেন্টিসের ওপর নজর দিয়েছে। এইে ভাঙন শুরু হয়েছে ট্রাম্পের ২০২৪ সালের হোয়াইট হাউস পুনর্দখলের ঘোষণা দেয়ার পূর্বেই। তার উপদেষ্টারা ইতিমধ্যে তাকে তার নির্বাচনী প্রচারণায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে অপেক্ষার উপদেশ দেয়। সে কুমীরের মতো চিৎকার করে দাঁত বের করে ও আল-জিহ্বা বের করে। ট্রাম্প লিখে ডিসেন্টি তার প্রতি লয়েল নয়। সে তাকে নিয়ে খেলছে। ট্রাম্প গভর্নর যেভাবে করোনা ভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা করেছে তার সমালোচনা করে। নিউজ করপোরেশনের এক সাবেক কর্মকর্তা বলেন মারডক বিজয়ীদের বেছে নিতে আগ্রহী ‘হেরো’দের নয়। 

মারডকের বায়োগ্রাফারাও বলেছেন মারডক অনেক সময় ট্রাম্পের প্রতি বিরাগভাজন। ট্রাম্পকে সবসময় মারডক সমর্থন জানায়নি। তার সমর্থন ছিল অসঙ্গত। অনেক সময় মারডক ছিল তার প্রতি নিরাসক্ত।

২০১৫ সালে এক লাঞ্চপার্টি দিয়েছিলেন ইভাঙ্কা ট্রাম্প। সেখানে ট্রাম্প মারডককে বলেন, সে প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়াতে চায়। মারডক তার সুপেয় বাটি থেকে চোখ তুলেও তাকায়নি ট্রাম্পের দিকে সে সময়। নিউইয়র্ক টাইমসে এই তথ্য পরিবেশন হয়। সে সময় ট্রাম্প মেক্সিকান ধর্ষকদের সমালোচনা করে নির্বাচনের বিতর্কে আসে। সে সময় মারডক টুইটারে লিখেছিলেন, ‘কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বন্ধুদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলা থেকে বিরত হবে? সারা দেশেই তারা আছেন।’ 

ফায়ার অ্যান্ড ফিউরিতে মাইকেল ওলফ লিখেছেন, ২০১৬ সালে নির্বাচনের পর ট্রাম্প সম্পর্কে মারডক বলেছিলেন, ‘ফাকিং ইডিয়ট’। তবে উভয়ের মধ্যে টেনশন বন্ধ করেন ইভাঙ্কার স্বামী জেরেড কুশনার। তার বইতে জেরেড তা দাবি করে। ফক্স নিউজ হয়ে পড়ে ট্রাম্পের বন্ধু চ্যানেল। ফক্সের দর্শক বাড়তে থাকে। কিন্তু ২০২০ সালের নির্বাচনে যখন ফক্স নিউজ বললো যে, অ্যারিজোনায় বাইডেন জিতবেন তখন নতুন করে সমস্য সৃষ্টি হলো। রূপার্টের উত্তরাধিকারিণী লালোন কখনই ট্রাম্পের ভক্ত ছিল না বলে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস উল্লেখ করে। 

কিন্তু এখন বিষয়টা ভিন্ন। মারডক মিডিয়া শুধু ট্রাম্পের সমালোচনাই করেনি। নিউইয়র্ক পোস্ট লিখেছে ‘ডি ফিউচার’। অর্থাৎ ডিসেন্টিই হবে ভবিষ্যৎ। মারডক দৃশ্যত এখন ডানপন্থী পাওয়ার গেমে তার সমর্থন ট্রাম্পকে রেখে ডিসেন্টমুখী। তবে ভবিষ্যতে আর পরিবর্তন হবে কিনা দেখা দরকার। অনেকে বলে ট্রাম্প থেকে ডিসেন্টিমুখী হওয়া তাদের জন্য তেমন কোনো পার্থক্য বয়ে আনবে না। দু’জনই প্রশ্নবিদ্ধ চরিত্র। এক্ষেত্রে ডিসেন্টি আপাতত জিতেছে বলে মারডকের সমর্থন, মারডককে অন্য কেউ ভিন্নভাবে বোঝাতে পারলে হয়তো আবারো পরিবর্তন হবে।

এর মধ্যে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সিনেটর মিট রমনী ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে লিখেছেন, ‘ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে যেদিন প্রার্থিতা ঘোষণা করবে, সেদিন ২০২৪ সালের নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে।’ অর্থাৎ রিপাবলিকানরা ২০২৪ সালে হারবে।

শেয়ার করুন