০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০১:৩৮:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্টিত , সহজ গ্রুপে ব্রাজিল - যুক্তরাষ্ট্র ডি গ্রুপে স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া


চ্যালেঞ্জের বোঝা নিয়েও এগিয়ে যাচ্ছে দেশ
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০২-২০২৩
চ্যালেঞ্জের বোঝা নিয়েও এগিয়ে যাচ্ছে দেশ


বাংলাদেশের গণতন্ত্র, উন্নয়নসহ যাবতীয় বিষয়ে নানাজনের ভিন্নমত আছে। আমার নিজেরও অনেক সন্দেহ, সংশয় আর প্রশ্ন আছে। তবুও দুই মাসের (ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৩) বাংলাদেশ সফর থেকে বলবো অনেক সমস্যা-সংকট কাঁধে নিয়েও ধীর লয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপরিচালনার কিছু মৌলিক বিষয়ে (স্ট্র্যাটেজিক এরিয়া) জাতীয় ঐকমত্য থাকলে উন্নয়নের পথ অনেক সুগম হতো। জনগণের কল্যাণে সত্যিকার জবাবদিহিমূলক জনতার সরকার বর্তমান বাস্তবতায় কবে প্রতিষ্ঠিত হবে জানি না। তবে অর্জনসমূহের কথা বললে সেটা অন্যান্য সরকারের তুলনায় বর্তমান সরকার মন্দের ভালো। যদি বর্তমান সরকার তার তিন টার্মে ধুরন্ধর আমলা আর সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটদের কবল মুক্ত হয়ে দক্ষ অভিজ্ঞ পেশাদারদের ওপর নির্ভর করতো, যদি সর্বস্তরে দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতো, তাহলে উন্নয়নের সুফলগুলো জনতার দোরগোড়ায় পৌঁছে যেতো। 

এবার স্বপ্রাণোদিত হয়ে আমি মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি শিক্ষক এবং ছাত্রদের সঙ্গে জ্বালানি বিদ্যুৎ বিষয়ে মতবিনিময় করেছি। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি গ্রিন ক্যাম্পাস সফর করে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থাপনাসমূহ দেখে আশান্বিত হয়েছি। 

গ্যাস, বিদ্যুৎ সেক্টর। সড়ক যোগাযোগ সেক্টরের মেগাপ্রকল্পসমূহ পরিদর্শন করেছি। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জ্বালানি, বিদ্যুৎ আর খেলাধুলা নিয়ে কথা বলেছি। পটুয়াখালীর দূর দ্বীপচর মোন্তাজ সফর করেছি। খুলনা-মংলা সফর করার প্ল্যান রয়েছে। এর পাশাপাশি গ্যাস বিতরণ এলাকা মেঘনা ঘাট, আশুলিয়া, মাওনা, কালীগঞ্জ ব্যাপক সফর করে শিল্পখাতে জ্বালানি বিদ্যুৎ সংকটের প্রকৃত রূপ দেখেছি। আমার মতে, জ্বালানি সংকটের সময়ে সৌরবিদ্যুৎ, গ্যাসের বিকল্প এসএনজি (sng) ব্যবহারের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। সরকারের উচিত অন্যান্য খাতে ব্যয় বরাদ্দ সমন্বয় করে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় করা, কয়লা আমদানি করা।   

ঢাকা শহরকে যানজট, শব্দজট, ধূলিকণা মুক্ত, মশা মুক্ত করার বিষয়ে আমার ব্যাপক হতাশা আছে। এক্ষেত্রে ঢাকার দুই মেয়রের করণীয় রয়েছে অনেক। ঢাকা সিটি করপোরেশনের সব এলাকায় উন্নয়ন ছোঁয়া পৌঁছানো প্রয়োজন। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। যদিও এখানে আর্থিক সংকটের একটা অজুহাত রয়েছে। কিন্তু ওইসব এলাকার মানুষকে বোঝানোর দায়িত্ব কার? মেয়রদের উচিত যেখানে উন্নয়নের আওতায় নিতে সময় লাগবে তাদেরকে বোঝানো, সান্ত¦না প্রদান, আশা দেখানো, কিন্তু সেটা হচ্ছে না। সাধারণ মানুষ সেখানে ক্ষিপ্ত, যা আগামী জাতীয় নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে ক্ষমতাসীনদের ভোটে। সব মিলিয়ে ঢাকার দুই মেয়র খুব সফল বলবো না। প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে সমন্বয়ের খুব অভাব। এছাড়াও জনসাধারণের বন্ধু বলা হয় পুলিশকে। কিন্তু সে পুলিশ কিন্তু আসলেই জনবান্ধব নয়। মানুষ পুলিশের কাছে যেতে ইতস্তত করে।   

বর্তমান অবস্থায় বাস্তবায়নাধীন কিছু মেগাপ্রকল্প যেমন মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে, বাস রেপিড ট্রানজিট স্বাভাবিক গতিতে শেষ হলে ঢাকার যানজট সহনীয় হবে বলেই আমি মনে করি। এর পাশাপাশি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, কর্তফুলী নদীর তলদেশের ট্যানেল, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি গ্যাস-বিদ্যুৎ হাব, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ দ্রুত শেষ করার জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্ব মূলক সরকার ক্ষমতায় আসা জরুরি।  

আমি নানা পর্যায়ে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে আলোচনা করে আশার আলো দেখতে পেয়েছি। এবারের সফর শেষে আমি আশাবাদী হয়েই ফিরে যাবো আবাসস্থল অস্ট্রেলিয়ায়। জানি না, আবার কখন মায়ের দেশে ফিরে আসার সুযোগ হবে।  তবে নিশ্চিত করেই বলতে পারি বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং প্রত্যাশা এ ধারা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যাবে প্রাণের বাংলাদেশ।

শেয়ার করুন