২১ মে ২০১২, মঙ্গলবার, ০৩:০৬:০১ অপরাহ্ন


কোভিড-১৯ এর প্রকোপ বৃদ্ধি : অনেক হাসপাতালে মাস্ক বাধ্যতামূলক
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০১-২০২৪
কোভিড-১৯ এর প্রকোপ বৃদ্ধি : অনেক হাসপাতালে মাস্ক বাধ্যতামূলক নিউইয়র্কে বেলভিউ হাসপাতালে চেকআপের পর গাড়ির অপেক্ষায় একজন


ক্রিসমাসের ছুটি এবং ইংরেজি নতুন বছর বরণের পর ফ্লু, কোভিড-১৯ ও অন্যান্য রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক হাসপাতাল মাস্ক বাধ্যতামূলক করছে এবং লোকজনের আনাগোনায় সীমারেখা টানছে। ভাইরাসজনিত এসব রোগের মোকাবিলা করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, সাম্প্রতিককালের অন্যান্য শীতের মতো এতো ভয়াবহ হয়ে উঠবে না এই মৌসুম, তবে তারপরও হাজার হাজার মানুষ হাসপাতালের ভর্তি হতে পারে এবং গোটা দেশে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

নিউইয়র্ক সিটি গত সপ্তাহে এই শহরের ১১টি সরকারি হাসপাতালে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে। লস অ্যাঞ্জেলেস ও ম্যাসাচুসেটসেও গত সপ্তাহে একই ধরনের পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কিছু হাসপাতালে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে ফ্লু ও কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্রিসমাসের আগে ৩১টি স্টেটে উচ্চমাত্রার ফ্লুয়ের মতো অসুস্থতার খবর পাওয়া গেছে। গত ৫ জানুয়ারি শুক্রবার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আগাম জানিয়েছেন, জানুয়ারিতে অনেক প্রদেশে সংক্রমণ বাড়বে।

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের অধিকর্তা ড. ম্যান্ডি কোহেন বলেন, ‘জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আমরা যা দেখছি তা সত্যিই রোগ বৃদ্ধি ঘটছে, বিশেষ করে ফ্লু রোগের ক্ষেত্রে।’ কোহেন আরো বলেন, কিছু ভাল খবর রয়েছে। ফ্লু ও কোভিড-১৯ রোগ এই মাসের মধ্যে বাড়তে পারে, তবে তারপর তা নিম্নগামী হবে। ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. উইলিয়াম স্কাফনার বলেন, ‘আমার মনে হয় না পরিস্থিতি খুব বাড়াবাড়ি হবে।’

কোহেন সবাইকে টিকা নিতে অনুরোধ করেছেন এবং ফ্লু ও কোভিড-১৯-এর জন্য চিকিৎসা নিতে বলেছেন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিকা দেওয়ার হার এই বছর কম। সিডিসির টিকা সমীক্ষার সর্বসাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৪৪ শতাংশ ফ্লু’র টিকা নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্কদের মাত্র ১৯ শতাংশ মতো ডিসেম্বরের প্রথম দিকে আপডেটকৃত কোভিড-১৯ টিকা নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, করোনার নতুন উপরূপ জেএন.১ সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে বা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আক্রমণ করতে পারে, তবে বর্তমানে থাকা অন্যান্য উপরূপের চেয়ে এটি আরো গুরুতর রোগ তৈরি করতে পারে, এমন প্রমাণ নেই। সিডিসি আরো জানিয়েছে, আরেকটি মৌসুমি ভাইরাস যা রেসপিরেটরি সিনসাইটিকাল ভাইরাস বা আরএসভি নামে পরিচিত তার বিরুদ্ধে টিকাকরণের হার হতাশাজনক। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে হালকা জ্বরের উপসর্গ দেখা যায়, তবে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে।

আক্রান্তদের ৬২ শতাংশের জন্য দায়ী জেএন-১ উপধরন

যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রায় ৬২ শতাংশের জন্য দায়ী জেএন.১ উপধরন। ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সংক্রমণের প্রবণতা বিশ্লেষণ করে মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) গত ৫ জানুয়ারি শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে। সিডিসি বলেছে, বর্তমানে জেএন.১ উপধরনটি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি ছড়াচ্ছে। ইউরোপেও এর আধিপত্য দেখা গেছে। প্রকোপ বাড়ছে এশিয়াতেও।

সিডিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৫৫ থেকে ৬৮ শতাংশ এ উপধরনে ভুগছে বলে তারা ধারণা করছে। এর আগে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেওয়া পর্যালোচনায় সিডিসি বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৯ থেকে ৫০ শতাংশই জেএন.১ উপধরনে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত জেএন.১ উপধরনে আক্রান্ত হয়ে আগের চেয়ে বেশি কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সিডিসি। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত করোনার টিকাগুলোই জেএন.১ থেকে মানুষকে সুরক্ষা দেবে বলে আশা করছে তারা। সিডিসির হিসাব অনুসারে, ৩০ ডিসেম্বর নাগাদ কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার ২০ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। গত ডিসেম্বরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জেএন.১ উপধরনকে ‘ভেরিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ ঘোষণা করেছে। তারা আরও বলেছে, এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তার ভিত্তিতে বলা যায়, এই উপধরনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কম।

শেয়ার করুন