১৭ মে ২০১২, শুক্রবার, ০৭:৩২:১৪ পূর্বাহ্ন


স্বাধীনতার প্রস্তুতি ও মার্চের সূর্যরেখা
ফকির ইলিয়াস
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৩-২০২৪
স্বাধীনতার প্রস্তুতি ও মার্চের সূর্যরেখা


বাঙালি জাতির জন্য একটি রাষ্ট্র প্রয়োজন-এই দাবি ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির পরই গভীরভাবে অনুভূত হতে থাকে। সেই সময়ে যারা রাজনীতিক ছিলেন, তাদের অনেকেই সিদ্ধান্ত নিতে ছিলেন দ্বিধান্বিত। শেখ মুজিবুর রহমান তখন তরুণ রাজনীতিক। তিনি চেয়েছিলেন সিনিয়ররা এগিয়ে আসবেন। না, তারা আসেননি! ওই সময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা মোহাম্মদ আলী, মওলানা শওকত আলী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মতো নেতারা কিন্তু ছিলেন। তারা এই স্বাধীনতার ডাক দিতে পারলেন না কেন? এই প্রশ্নের জবাব আজকের প্রজন্মকে খুঁজতে হবে। ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ এই দশ বছর বাঙালি জাতির জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়েই ‘বঙ্গবন্ধু’খ্যাতি পান শেখ মুজিব। ১৯৫২ সালের ভাষাআন্দোলনে অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু বুকে যে আগুন পুষেছিলেন, এর বহিঃপ্রকাশ ঘটে ওই একদশক সময়ে। মহান স্বাধীনতার প্রস্তুতি মূলত শেখ মুজিবুর রহমান সেই সময়েই সম্পন্ন করতে শুরু করেন। এর অনেক প্রমাণ দেওয়া যাবে।

মরহুম আবুল মনসুর আহমদের বিখ্যাত ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’ বইয়ের ৫৫৬ পৃষ্ঠায় লিখেছেন-‘শেখ মুজিব আরো দুইটা কাজ করিলেন। প্রথমত, উপসংহারে তিনি বলিলেন : আজিকার সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম। দ্বিতীয়ত, কিছুদিন ধরিয়া তিনি সব বক্তৃতা শেষ করিতেন এক সঙ্গে ‘জয় বাংলা’ ‘জয় পাকিস্তান’ বলিয়া। এই দিনকার সভায় প্রথম ব্যতিক্রম করিলেন। শুধু ‘জয় বাংলা’ বলিয়া বক্তৃতা শেষ করিলেন।”

এভাবেই বঙ্গবন্ধু একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাঙালি জাতিকে দেখাতে শুরু করেন। ১৯৭১ সালের জানুয়ারির আগেই বঙ্গবন্ধু প্রায় সব পরিকল্পনা সম্পন্ন করেন। তিনি গ্রেফতার হলে কি কি হতে পারে, কীভাবে তা মোকাবিলা করতে হবেÑএর পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তৈরি করে রেখেছিলেন।

৭ মার্চ ছিল মূলত সেই অগ্নিঝরা সূর্যমাখা দিন। যে দিনটিতেই নির্ধারিত হয়ে যায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। জাতির পিতা যে ভাষণটি দিয়েছিলেন, তা বিশ্বের গণমুক্তির একটি সেরা ভাষণ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে আজ। শেখ মুজিবের দূরদর্শিতা সেখানেই, যা বাঙালি জাতিকে একটি পতাকা একটি মানচিত্র পাওয়ার দরজা অবারিত করে দিয়েছিল।

শেয়ার করুন