২০ মে ২০১২, সোমবার, ৬:২১:৪২ পূর্বাহ্ন


এবার বাংলাদেশ নিয়েই পিনাক রঞ্জনের উদ্বেগ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৫-২০২৪
এবার বাংলাদেশ নিয়েই পিনাক রঞ্জনের উদ্বেগ পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী


বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ভারতের যে ক’জন কূটনীতিবিদ সোচ্চার, তাদের অগ্রভাগে পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। নানা সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে মন্তব্য করে বেশ তোলপাড় করতে অভ্যস্ত এ ভারতীয়। দেশটির হাইকমিশনার হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করে যাবার সুবাদে এ দেশ সম্পর্কে তার একটু বেশিই জানা শোনা।

এ সূত্র ধরেই তিনি বিভিন্ন ইস্যুতে কথা তোলেন। সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিল মাসের ৭-৮ তারিখের দিকে দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে কড়া মন্তুব্য করেন পিনাক। তার বক্তব্য অনেকটা এমন, যে ভারতের চাপে শেষ পর্যন্ত ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছিল। এবার বাংলাদেশের সম্ভব্য নীতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে কথা বলেছেন এ ভারতীয়। 

তিনি ভারতের জন্য বাংলাদেশের কিছু নীতিকে হুমকি স্বরূপ দেখছেন বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আগামী জুলাই মাসের শুরুতে সম্ভাব্য ভারত সফরে দেশটির নতুন সরকারের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হওয়ার এক সিডিউল আলোচনার টেবিলে। একই সময় চীনও সফর করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তবে ভারতে যাওয়া নিয়ে পিনাকের কোনো প্রশ্ন না থাকলেও চীন নিয়ে তার দুশ্চিন্তা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এক দেশের নেতার অন্য দেশে সফরে যাওয়া নিয়ে এর আগে ভারতের কোনো সমস্যা ছিল না। চীন যে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী সে বিষয়টি আমরা ভালোভাবেই অবগত। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই সম্পর্ক কতটা বিকশিত হবে? সম্পর্কটা কি চীন ও পাকিস্তানের মতো হতে যাচ্ছে? আমরা জানি না হয়ত তেমনটা হবে না। কিন্তু, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।” 

এ কথাটা বলার অর্থ চীন পাকিস্তানে বিপুল পরিমাণ ঋণ সহায়তা প্রদান করেছে। ২৬.৬ বিলিয়ন। বাংলাদেশে ওই পরিমাণ না হলেও ৬ বিলিয়নের এর উপরে। এটাই মাথা ব্যাথার কারণ ভারতের। যে বাংলাদেশও কী পাকিস্তানের মত চীনের দিকে ঝুকছে? এ মাথা ব্যাথার কারণ আরো একটা আছে। বাংলাদেশে চীনের সহায়তায় ১.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি ’বিএনএস শেখ হাসিনা’ চট্টগ্রামের কক্সবাজার জেলার পেকুয়ায় গত বছর কমিশন হওয়ার পর থেকে নয়াদিল্লির “উদ্বেগ বেড়েছে”। ফলে এরপর চীন সফর মানেই সম্পর্কটা আরো বাড়ানো। তাছাড়া শেখ হাসিনা বিভিন্ন খাতে আরো সহায়তা প্রত্যাশা করে আসছে চীনের। এটা মোটেই পিনাকরা ভাল চোখে দেখছে না। 

তিনি বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক লক্ষ্য করে বলেছেন, “তারা দুই (ভারত, চীন) দেশের মধ্যে ভারসাম্য আনতে চায়। এক হাত ভারতে, অন্য হাত চীনে রাখতে চায়। প্রতিরক্ষার দিক থেকে দেখলে তাদের অস্ত্রশস্ত্রের প্রায় ৭০ শতাংশই চীনা উদ্ভূত। এভাবেই চীনারা দেশটিতে প্রবেশ করেছে যদিও বেইজিং ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তাদের স্বীকৃতি দেয়নি।” 

এ সময় তিনি আরো বলেন, “সাবমেরিন ঘাঁটিতে যদি চীনারা ’পোর্ট কল’ করে বসে তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী করবেন? তার ফলে চীনা সাবমেরিনগুলো বিপজ্জনকভাবে আমাদের জলসীমার কাছাকাছি চলে আসবে।” আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবতারণা করেন এ ভারতীয় কূটনীতিক। তার মতে, ভারত, বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে আসল সমস্যার জায়গা হলো তিস্তা প্রকল্প- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যদি চীন তিস্তা প্রকল্পে জড়িত হয়ে পড়ে, তবে আমাদের (ভারত) জন্য বাস্তবেই সেটা সমস্যা হবে। কারণ তাতে চীনা শ্রমিকরা স্পর্শকাতর (ভারতের) শিলিগুড়ি করিডোরের কাছাকাছি চলে আসবে। তারা সেখানে ডিভাইস লাগানো থেকে শুরু করে ভারতের কৌশলগত দিকে নজর রাখা পর্যন্ত সকল ধরনের কার্যক্রম চালাতে পারবে।”

শেয়ার করুন