২০ মে ২০১২, সোমবার, ০৫:৩১:১৬ পূর্বাহ্ন


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল
‘কী এমন হয়েছে। কী ঘটেছে, বুঝতে পারছেন না?’
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৫-২০২৪
‘কী এমন হয়েছে। কী ঘটেছে, বুঝতে পারছেন না?’


‘দুঃখ হয়, কষ্ট হয়। যখন দেখি আমরা, আওয়ামী লীগের সভানেত্রীকে দেখি, তিনি বলেন, ‘কী এমন হয়েছে। কী ঘটেছে, বুঝতে পারছেন না?’ সমস্যাটা এখানেই। বুঝতে পারছেন না। অথবা বুঝেও না বুঝার ভান করেন। আজকে কেবল অতি বাম, অতি ডান নয়, আজকে সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যপন্থি কেবল নয়, সব মানুষ, যেকোনও পন্থারই হোক- মানুষ বুঝতে পারছে তাদের নুন্মতম অধিকারটুকুও নেই’ কথাগুলো বলেছেন শ্রমিক দলের সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  


আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে আজ পহেলা মে নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশআন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশে মির্জা ফখরুল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক বক্তব্যের উদৃতি দিয়ে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘‘উনি (প্রধানমন্ত্রী) আরেকটা কথা বলেছেন। বলেছেন, ‘আমাদের অপরাধ?’

আপনাদের অপরাধ হচ্ছে- গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন। সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠাগুলোকে ধ্বংস করেছেন। জনগণের ন্যূনতম অধিকার, প্রতি পাঁচ বছর পর তারা প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। সেই অধিকারটুকুও আপনারা কেড়ে নিয়েছেন। এখন নির্বাচনকে এমন একটা তামাশায় পরিণত করেছেন, আপনারাই বলেন ডামি প্রার্থী।’’


 
শ্রমিক দিবস উপলক্ষে শ্রমিক দল আয়োজিত র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে তিনি কারাগারে অন্তরীণ বিএনপির নেতাকর্মী, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে স্মরণ করেন।  
 
শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রাখেন।   

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ‘অতি ডান, অতি বাম সরকার পতনের জন্য এক হয়েছে কীভাবে, তিনি তা বুঝতে পারেন না’ শীর্ষক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মুলত উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন।   


বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অনেক ত্যাগ আমরা স্বীকার করেছি। অনেক ভাই গুম খুন হয়েছেন। মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়েছেন। আমাদের নেত্রী এখনও কারাগারে বন্দি। আমাদের তারেক রহমানকে সাজা দিয়ে বিদেশে নির্বাসিত করে রেখেছে। একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জোর পাঁয়তারা কারা করছে।’  


তিনি দাবি করেন, ‘এদের কৌশল একটু ভিন্ন। আগেরকার দিনের মতো সংসদে বিল পাস করে বাকশাল করতে চায় না, তারা গণতন্ত্রের একটি লেবাস রেখে দিয়ে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে, জনগণকে দমন করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে।’  
 
কঠোর রোদ ও তাপদাহ উপেক্ষা করে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এতে প্রমাণ করে বিএনপি শুধু নয়, এই দেশের সব গণতন্ত্রকামী, স্বাধীনতকামী মানুষ জেগে উঠেছে। আবার জেগে উঠবে সবাই। আমি অনেকবার বলেছি- বিএনপি হচ্ছে সেই ফিনিক্স পাখির মতো, যে ধ্বংসস্তূপ থেকে আবার জেগে উঠে। বাধা সরিয়ে জেগে উঠে আন্দোলন, স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের কথা বলে।’  
 
নেতাকর্মীদের প্রতি মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, ‘একটি কথা মনে রাখতে হবে সব সময়- আমরা কখনোই অতীতেও পরাজিত হইনি। আমরা পরাজিত হবো না। আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনবো। অনেকে বলে, এটা বিএনপির সংগ্রাম। এটা বিএনপির সংগ্রাম নয়, এটা এই দেশের মানুষের অস্তিত্বের সংগ্রাম, অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম। সে অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আরও ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে।’  


সমাবেশ শেষে একটি র‌্যালি নাইটিঙ্গেল মোড়, বিজয়নগর মোড় হয়ে নয়া পল্টনে শেষ হয়। র‌্যালিটি মালিবাগ পর্যন্ত আসার পূর্বনির্ধারিত সূচি থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নাইটিঙ্গেল মোড়ে অবস্থান নেওয়ায় সামনে যেতে পারেনি।

শেয়ার করুন