০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:১৯:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৮-২০২৪
জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি


দেশের সাম্প্রতিক শুভ পরিবর্তনের পর গোটা দেশ সংস্কারের পাশাপাশি আশু প্রয়োজন দীর্ঘস্থায়ী জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ২০০০-২০২৪ বিভিন্ন সরকারের ভ্রান্ত নীতি, অদক্ষতা এবং সীমাহীন দুর্নীতির কারণে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ খাত আজ মহাসংকটে। জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্পকারখানার পরিচালনা, সার উৎপাদন দারুণভাবে ব্যাহত। এতে করে দেশের মূল চালিকাশক্তি অর্থনীতি, সেটা প্রায় ধ্বংসের মুখে। ফলে এ খাতে এক্ষুণি আশু দৃষ্টি দেওয়া জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

প্রযুক্তির বিশ্বায়নের সময়ে বিদ্যুৎ আধুনিক সভ্যতার চালিকাশক্তি। অথচ সে খাতকে প্রযুক্তিনির্ভর না করে অদক্ষ আমলাদের নিয়ন্ত্রণে দিয়ে সর্বনাশ করা হয়েছে। দেশের মূল্যবান জ্বালানিসম্পদ মাটির নিজে অথবা গভীর সাগরে পড়ে আছে। কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আমলাদের সঙ্গে সিন্ডিকেট বানিয়ে সেক্টরকে আমদানিকৃত জ্বালানি বিদ্যুৎনির্ভর করে দেউলিয়া বানিয়ে ফেলেছে। দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ অ্যাক্টের কালাকানুন করে দুর্নীতিবাজদের ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্যান্য কাজের পাশাপাশি জ্বালানি-বিদ্যুৎ সেক্টরে কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা জরুরি। 

১ : অবিলম্বে দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ অ্যাক্ট বাতিল এবং সব কাজে জাতীয় প্রকিউরমেন্ট পলিসি অনুসরণ।

২ : এনার্জি রেগুলেটরি অ্যাক্টের সংশোধনী বাতিল করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া। সংস্থাটিকে যোগ্য, দক্ষ, মেধাবী পেশাদারদের সম্পৃক্ত করে সাজানো।

৩ : পেট্রোবাংলা, বিপিসি, বিপিডিবি, হাইড্রোকার্বন ইউনিট, জিএসবি, বিপিএমআই, বিপিআই সংস্থাগুলোকে আমলা নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করে সঠিক পেশাদারদের দায়িত্ব প্রদান।

৪ : কয়লা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা।

৫ : স্মার্ট জ্বালানি মিশ্রণসহ সমন্বিত জ্বালানি-বিদ্যুৎ মাস্টার প্ল্যান অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিমার্জন এবং সংশোধন।

৬ : জ্বালানি-বিদ্যুৎ সেক্টরের কোম্পানিগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ প্রদান।

৭ : নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের জন্য সঠিক প্রণোদনা, স্রেডাকে কোম্পানিতে রূপান্তর।

৮ : জ্বালানি-বিদ্যুৎ সেক্টরের কর্মকর্তাদের ক্রমাগত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর করা।

৯ : সাগরে পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধানের কাজে স্বচ্ছ পদ্ধতিতে সঠিক কোম্পানি নিয়োজিত করা।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়তো সীমিত সময়ে অনেক কিছু করতে পারবে না। কিন্তু কিছু মৌলিক পরিবর্তন করে খাতটিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে।

জ্বালানি-বিদ্যুৎ সেক্টরের কাজগুলো কারিগরিনির্ভর। বিশ্ব এখন আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর। এখানে সঠিক কারিগরি জনবলকে গুরুত্ব না দিয়ে আমলাদের নিয়ন্ত্রণে দেওয়া বর্তমান সংকট সৃষ্টি করেছে। দুর্নীতিপরায়ণ রাজনৈতিক নেতা, অদক্ষ আমলা, সুযোগসন্ধানী চিহ্নিত ব্যবসায়ী মহল সম্ভাবনাময় সেক্টরটিকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে। তবে সেক্টর দুটিতে এখনো অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ আছেন। তাদের স্বাধীনতা দেওয়া হলে দুই-পাঁচ বছরের মধ্যে সেক্টরটি ঘুরে দাঁড়াবে।

শেয়ার করুন