১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ৬:০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন


তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন সহজ নয় : পরিকল্পনা উপদেষ্টা
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৪-২০২৫
তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন সহজ নয় : পরিকল্পনা উপদেষ্টা পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ


প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে বাংলাদেশের মানুষের অন্যতম প্রত্যাশা ছিল তিস্তা প্রকল্পে ওই দেশের সহযোগিতার ব্যাপারে কতটা সফলতা বয়ে নিয়ে আসতে পারেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চিনের বিভিন্ন স্তরে আলাপ-আলোচনা শেষে তার একটা রূপরেখাও পাওয়া গেছে। চীন সহায়তার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু এমন প্রেক্ষাপটে অতিসম্প্রতি পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ জানান দিলেন, তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতের সহায়তা ছাড়া সম্ভব না। 

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ সাবেক প্রধানমন্ত্রীই নিয়েছিলেন। চেয়েছিলেন চীনের সহায়তা। চীন সে সময় দিয়েছিল মাস্টার প্ল্যান। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ভারত সেখানে ভেটো দিয়ে বসে এবং এ প্রকল্প তারাই বাস্তবায়ন করে দেওয়ার প্রস্তাবনা দেয়। শেখ হাসিনাও ইউটার্ন। এর কিছুদিন পরই ক্ষমতাচ্যুত। কিছুটা গ্যাপে এরপর গেলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এখন তারই এক উপদেষ্টা শোনালেন নতুন এ কথা। 

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, তিস্তা প্রকল্প, যে পানি আসে ভারতের সহযোগিতা ছাড়া এটা আসলে কি হবে? সত্যিকার অর্থে আমরা যতটুকু পানি পাই সেটার পূর্ণ ব্যবহার কীভাবে করতে পারি, জলাধার কিছু নির্মাণ করা যায় কি না, কিছু পানি আটকে রাখা যায় কি না, এটার পূর্ণাঙ্গ কোনো পরিকল্পনা এখনো তৈরি হয়নি।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, পায়রা সমুদ্রবন্দর প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। তাই অর্থনীতির ভবিষ্যৎ চাহিদা মাথায় রেখে চট্টগ্রামের সমুদ্র উপকূলে বে-টার্মিনালের অবকাঠামো প্রস্তুত করা হবে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। 

বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে বিদায়ী সরকার পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু করে। কিন্তু মাঝপথে তার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বলা হচ্ছে, নিয়মিত ড্রেজিংয়ে বিশাল অঙ্কের খরচের চাপ আর কম গভীরতায় জাহাজ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। 

এমন অবস্থায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতির ভবিষ্যৎ বিবেচনায় মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর ও চট্টগ্রামে বে-টার্মিনাল স্থাপনে জোর দিচ্ছে সরকার। সমুদ্রের উপকূলে বাঁধ দিয়ে মেরিন অবকাঠামো নির্মাণে ৯ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। পরে যুক্ত হবে ৪টি টার্মিনাল। যার ২টি পিপিপিতে নির্মাণ করবে আরব আমিরাতের ডিপিওয়ার্ল্ড ও সিঙ্গাপুরের ঠিকাদার। 

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সমুদ্রের মধ্যে যাতে বড় ঢেউ না আসে, সেজন্য বে-কোয়ার্টার নির্মাণ করতে হয়। আর বন্দরের পেছনের দিকে পরিকাঠামো লাগে। এগুলো তৈরির প্রকল্প, এটা বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় হবে।

এ সময় উপদেষ্টা জানান, আমেরিকার ট্রাম্প প্রশাসনের যে নীতি, তাতে রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের সহায়তার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় আছে। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তিস্তা প্রকল্পের সম্ভাব্যতাও যাচাই হয়নি এখনো।

একনেক সভায় মোট ১৬ প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২৪ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শনে চলমান প্রকল্পের জনবল রাজস্ব খাতে নিতে চায় সরকার।

শেয়ার করুন