যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত সব বিদেশি সিনেমার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দাবি, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আমেরিকান চলচ্চিত্র শিল্পকে উৎসাহিত করা এবং হলিউডকে পুনরুজ্জীবিত করাই মূল লক্ষ্য। গত ৪ মে সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, হলিউডসহ দেশের বিভিন্ন শিল্পখাত বিদেশি চক্রান্তের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে, যা এখন একটি জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু। তিনি এটিকে ‘সংগঠিত আন্তর্জাতিক চক্রান্ত’ বলে আখ্যা দেন এবং বিদেশি সিনেমাকে ‘প্রচারণা এবং বার্তার বাহক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে, আমেরিকার বাইরে নির্মিত যে কোনো চলচ্চিত্র আমদানি করলে সেটির ওপর নতুন শুল্ক কার্যকর হবে।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজমকে হলিউডে প্রযোজনার পতনের জন্য দায়ী করেন। যদিও গভর্নরের দফতর থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ট্রাম্প আরো বলেন, যদি তারা আমেরিকার ভেতরে সিনেমা তৈরি না করে, তাহলে তাদের সিনেমা আমদানিতে খরচ বাড়বে- এটাই হওয়া উচিত। সিনেমা নির্মাতারা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবে। করোনা ভাইরাস মহামারি ও হলিউডের শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে আমেরিকার চলচ্চিত্র শিল্প অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। ক্যালিফোর্নিয়ায় শারীরিক প্রযোজনা কমে যাওয়ার পাশাপাশি, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে করছাড় ও প্রণোদনার ফলে সেখানকার প্রযোজনা বেড়েছে। যদিও গত বছর লস অ্যাঞ্জেলেসে ফিচার ফিল্ম প্রযোজনা ১৮.৮ শতাংশ বেড়েছে, তা এখনো পাঁচ বছরের গড়ের নিচে।
চলচ্চিত্র শিল্পে পুনর্জাগরণের অংশ হিসেবে ট্রাম্প চলতি বছরের জানুয়ারিতে জন ভয়েট, মেল গিবসন এবং সিলভেস্টার স্ট্যালোনকে হলিউডের বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি বলেন, এটি একটি মহান শিল্প, তবে বর্তমানে অত্যন্ত সমস্যাগ্রস্ত। ভয়েটের ম্যানেজার স্টিভেন পল জানিয়েছেন, তারা একটি পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করেছেন, যা আমেরিকান চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রযোজনা বাড়াতে সাহায্য করবে। তবে সেই পরিকল্পনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় পৌঁছেছে কি না, তা নিশ্চিত নয়।
মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি, তবে তাদের এক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে এখনো হলিউড বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক অবস্থানে রয়েছে। এদিকে চীনও এক মাস আগে আমেরিকান সিনেমার ওপর নতুন ট্যারিফ আরোপ করেছে। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, দেশটিতে হলিউডের বক্স অফিস আয় কমে যাওয়ায় এই পদক্ষেপের আর্থিক প্রভাব সীমিত হবে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর সিনেমা থিয়েটার মালিকদের সংগঠন, বিদেশি চলচ্চিত্র পরিবেশক এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।