৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৫:২৬:২০ অপরাহ্ন


নাগরিকত্ব পেতে যুক্তরাষ্ট্রে রিয়েলিটি শো!
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৫-২০২৫
নাগরিকত্ব পেতে যুক্তরাষ্ট্রে রিয়েলিটি শো! যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নোএম


যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট (ডিএইচএস) একটি নতুন রিয়েলিটি টিভি শো তৈরির প্রস্তাব বিবেচনা করছে, যেখানে অভিবাসীদের নাগরিকত্ব পেতে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। এই পরিকল্পনাটি ইতোমধ্যে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। শোর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে ‘দ্য আমেরিকান’। এর প্রস্তাবক রিয়েলিটি টিভি প্রযোজক রব ওয়ারসফ, যিনি এর আগে ‘ডেটিং নেকেড’, ‘ডাক ডাইনাস্টি’ এবং ‘দ্য মিলিয়নিয়ার ম্যাচমেকার’-এর মতো বিতর্কিত অনুষ্ঠান তৈরি করেছেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানান, এটা কোনো ‘হাঙ্গার গেমস’ নয়। এটা এমন কিছু না যে, আপনি হেরে গেলে আপনাকে জাহাজে তুলে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। বরং এটি আমেরিকান নাগরিকত্বের মর্যাদা ও সৌভাগ্য উদযাপনের একটি প্ল্যাটফর্ম।

প্রতিযোগীদের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ভ্রমণ করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ইতিহাস ও সংস্কৃতিনির্ভর চ্যালেঞ্জে অংশ নিতে হবে। বিজয়ীরা নাগরিকত্ব লাভ করবেন, আর যারা জিততে পারবেন না, তাদের জন্য সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে থাকছে এয়ারলাইন পয়েন্ট, গ্যাস কার্ড কিংবা স্টারবাকস গিফট কার্ড। ডিএইচএস জানিয়েছে, এই প্রস্তাব তারা পেয়েছে এবং এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এটি না চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, না বাতিল করা হয়েছে। তবে এরই মধ্যে মানবাধিকার সংস্থা ও অভিবাসন আইনজীবীরা কড়া সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, নাগরিকত্বের মতো একটি মৌলিক অধিকারকে বিনোদন অনুষ্ঠানে রূপ দেওয়া গভীরভাবে অনৈতিক ও অপমানজনক। এখনো নিশ্চিত নয়, এই শো বাস্তবায়িত হলে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বর্তমান সচিব ক্রিস্টি নোএম এতে কোনোভাবে যুক্ত থাকবেন কি না।

ইমিগ্র‍্যান্ট অধিকারকর্মীরা বলছেন, এটি হতে পারে অভিবাসন প্রক্রিয়াকে বাণিজ্যিকীকরণ ও রাজনৈতিকীকরণের আরো একটি নজির। উল্লেখযোগ্য যে, ট্রাম্প প্রশাসনের বহু সদস্যই রিয়েলিটি টিভি ও বিনোদনজগত থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে এনবিসির জনপ্রিয় ‘দ্য অ্যাপ্রেন্টিস’ শোর সঞ্চালক ছিলেন দীর্ঘ ১৪ বছর। পরিবহন সচিব শন ডাফি এমটিভির ‘দ্য রিয়েল ওয়ার্ল্ড’-এ অংশ নেন। অন্যদিকে ড. মেহমেত ওজ ‘দ্য ওপ্রাহ উইনফ্রে শো’তে তার জনপ্রিয়তা অর্জনের পর নিজস্ব মেডিকেল টকশো পরিচালনা করেছেন এবং বর্তমানে মেডিকেয়ার ও মেডিকেইড বিভাগের প্রশাসক।

নতুন এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তা শুধু রাজনৈতিক বিতর্ক নয়, বরং হাজারো প্রবাসী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীর জীবন ও সম্মান নিয়ে এক ধরনের নির্মম উপহাসে পরিণত হতে পারে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এই শো ‘আমেরিকান ড্রিম’-এর ভাবমূর্তিকে হাস্যকর করে তুলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার শেষ পর্যন্ত এই বিতর্কিত প্রকল্পের অনুমোদন দেয় কি না।

শেয়ার করুন