১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ৬:২৮:৪৭ পূর্বাহ্ন


কমিশনের সংবাদ সম্মেলন
নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা দিয়ে অগ্রসর হতে চায় ইসি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৮-২০২৫
নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা দিয়ে অগ্রসর হতে চায় ইসি নির্বাচন কমিশন ভবন


নির্বাচন কমিশন (ইসি) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা বা নির্বাচনী রোডম্যাপ চলতি সপ্তাহের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। গত ১৮ আগস্ট সোমবার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

আখতার আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনী রোডম্যাপের বিষয়ে আমরা বলেছিলাম, তা এ সপ্তাহেই ঘোষণা দেবো। ইতোমধ্যে এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। এখন কমিশনে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। কর্মপরিকল্পনা মূলত আন্তঃঅনুবিভাগীয় এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সবকিছু সমন্বয়ের পর আমরা আশা করছি, এ সপ্তাহেই চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশ করা সম্ভব হবে।’

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা তো পরবর্তী বিষয়। আসল কথা হলো, সংশ্লিষ্ট সবাই যদি নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন। তবে কোনো সমস্যা হবে না। নির্বাচন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত প্রশাসন নিজ নিজ এলাকায় কাজ করছেন। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। আমাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তাই এ মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই বলে আমি মনে করি।’

মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় কীভাবে হবে, ফোকাল পারসন এখান থেকে নির্ধারণ, পরিপত্র ও নির্দেশনা ইস্যু ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে এখন একটি মিটিং চলছে। আমরা চেষ্টা করছি কো-অর্ডিনেট করে সময়ের আগেই কাজগুলো গুছিয়ে রাখতে।’

সীমানা নির্ধারণ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব বলেন, ‘মোট ৮৩টি আসন নিয়ে আপত্তি এসেছে। এসব আপত্তির শুনানি আগামী ২৪ আগস্ট থেকে শুরু হবে এবং টানা চারদিন চলবে। এরপর বিষয়টি আমরা চূড়ান্ত করবো।’

এনআইডি সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘সোমবারের মাসিক সমন্বয় সভায় এ সংক্রান্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। এনআইডি কারেকশনের জন্য যেসব আবেদন বাতিল হচ্ছে, আবেদনকারীরা আবার তা সংশোধনের জন্য জমা দিচ্ছেন। আমাদের দৃষ্টিতে কোনো তথ্য গ্রহণযোগ্য না হলে তা বাতিল করা হয়, তবে আবেদনকারীর দৃষ্টিতে তা সঠিক হতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের আপিলের সুযোগ রয়েছে এবং সেই আপিল অনুযায়ী আমরা নিষ্পত্তি করছি।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার আপিল জমা পড়েছে, তবে সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে আসছে। আমরা বিশ্বাস করি, ডাটা এন্ট্রি প্রক্রিয়া আরো উন্নত হলে এ সংখ্যা আরো হ্রাস পাবে। এরপরও পরিবর্তনের জন্য আবেদন থাকবে, কারণ এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে আমরা সংখ্যাটি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনতে সক্ষম হব।’

ফরম-২ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘ভোটার নিবন্ধনের জন্য ফরম-২ ব্যবহৃত হয়। এর বেশ কিছু ফরম এখনো স্ক্যান করা হয়নি। মূলত ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে কিছু ফরম স্ক্যানের বাইরে ছিল। সেগুলো স্ক্যান করে পোর্টালে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করেছি। স্ক্যান সম্পন্ন হলে পোর্টালে আপলোড করা হবে। এতে আমাদের তথ্যভান্ডার আরো সমৃদ্ধ হবে।’

ভোটকেন্দ্র বিষয়ে তিনি বলেন, আজকের মাসিক সমন্বয় সভায় ভোটকেন্দ্র স্থাপনের নীতিমালা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হবে না। তবে অতীতের কেন্দ্রগুলো হুবহু রাখা হবে না; যৌক্তিক প্রয়োজন থাকলে সমন্বয় করা যাবে। জাতীয় নির্বাচনে প্রতি ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ভোটারের ব্যবস্থা রাখা হয়। উদাহরণস্বরূপ বর্তমানে প্রতি বুথে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৫০০। এটিকে ৬০০ করা হলে সহজেই সামঞ্জস্য করা যাবে।

রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ২২টি দলের বিষয়ে মাঠপর্যায়ে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। যাদের আবেদন বাতিল বা বিবেচনাযোগ্য নয় তাদের চিঠি দিয়ে জানানো হচ্ছে। এবার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হবে, কোনো কারণে বা কোনো শর্ত পূরণ না করায় তাদের আবেদন গ্রহণযোগ্য হয়নি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই কাজগুলো আগেই শেষ করতে, যাতে সবার সুবিধা হয়। শেষ মুহূর্তে হুড়োহুড়ি করে কাজ করতে না হয়। আগে থেকে করলে সমন্বয় ভালো হয়। যেমন ভোটকেন্দ্র নীতিমালা এখন থেকেই পর্যালোচনা করা সম্ভব হচ্ছে। কোনো বিষয়ই চূড়ান্ত নয়; প্রয়োজন হলে পরিবর্তন হতে পারে। তবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে যেটা আগামীকাল করার কথা, তা যদি আজকেই করে রাখা যায়, তাহলে আগামীকাল আরো ভালোভাবে কাজ করার সুযোগ থাকবে।’

শেয়ার করুন