২৩ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০৫:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন


‘আয়নাঘর’র ভিকটিম তারেক রহমান -মির্জা ফখরুল
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৮-২০২২
‘আয়নাঘর’র ভিকটিম  তারেক রহমান -মির্জা ফখরুল


‘আয়নাঘর’র ভিকটিম হিসেবে নাম এসেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামও। এ তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ২৩ আগস্ট মঙ্গলবার গুলশানস্থ বিএনপি চেয়ারপারর্সনের কার্যালয়ে আয়োজিত “গুম,খুন ও ক্রসফায়ারের শিকার” পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব ওই তথ্য তুলে ধরেন। মির্জা ফখরুল বলেন,‘এই আয়নাঘর নামের টর্চার সেলে নিয়ে যাদের মেরে ফেলার পরিকল্পনা থাকে, তাদের মেরে ফেলা হয়। আর যাদের রেখে দিতে হয়, তাদের টর্চার করে, বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়। ভোলায় নুরে আলম শহীদ হয়েছেন, আবদুর রহিম শহীদ হয়েছেন। এটা গত এক যুগ ধরে চলে আসছে। আজকে আমার মনে হয়, এ দেশে গণতন্ত্র যারা চায় তারা আর নিরাপদ নয়। আমাদের (বিএনপি’র) ছয় শতাধিক নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছে। এমপি ইলিয়াস আলী, কমিশনার চৌধুরী আলম, লাকসামের এমপি হিরুর ৯-১০ বছর ধরে কোনো খবর নেই।’

‘আয়নাঘর প্রসঙ্গ’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আপনারা দেখেছেন, এই সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যায়, তারপরে দেখেছেন, নেত্র নিউজে যে খবর বেরিয়েছে- তাতে সেই টর্চার সেল আছে। তার নাম দিয়েছে ‘আয়না ঘর’। সেই আয়না ঘরে যাদের মেরে ফেলার পরিকল্পনা তাদের মেরে ফেলা হয়, যাদেরকে রেখে দিতে হয় তাদের রাখে, টর্চার করে, বছরের পর বছর তাদেরকে রাখে। যারা কয়েকজন সৌভাগ্যক্রমে বেরিয়ে যেতে পেরেছিলো, তারা বিদেশে চলে গেছেন, গিয়ে সেখান থেকে বলছেন যে, এই ধরনের একটা সেলে আমাদেরকে আটকিয়ে রাখা হয়েছিলো।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে বলেছেন, আমি নিজে একজন ভিকটিম। তাকে যখন ১/১১ সময়ে গ্রেফতার করা হয়। সেই সময়ে তাকে রিমান্ডের নাম করে নিয়ে আসা হয়েছিলো। এমন টর্চার করা হয়েছিলো যে, তার কোমড় ভেঙে গিয়েছিলো। আমরা যারা একাত্তর সালে যুদ্ধ করেছিলাম, আমরা কল্পনাও করিনি যে, এই বাংলাদেশ আমাদের দেখবে হবে। আজকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করে এজন্য কি আমরা যুদ্ধ করেছিলাম?”। “গুম,খুন ও ক্রসফায়ারের শিকার” অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।  তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের কথা দিতে পারি, আমরা যদি সরকারকে পরিবর্তন করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি, সত্যিকারের জনগণের পার্লামেন্ট আনতে পারি, তাহলে এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন; তাদের পরিবারকে পুনর্বাসনের সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

এ সময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এত নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, গুম ও খুনের পরও বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। বিএনপি সেই ফিনিক্স পাখির মতো আবার ধ্বংসাবশেষ থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে। এটাই হচ্ছে রাগের সবচেয়ে বড় কারণ, ভয়ের কারণ। সমস্যাটা এ জায়গায় শেখ হাসিনার, আওয়ামী লীগের।’

তৃণমূলে আন্দোলন

তৃণমূলে বিএনপির আন্দোলন শুরুর কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। ২২ আগস্ট থেকে সারা দেশে কর্মসূচি হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে। গোটা দেশের মানুষ দেখছে যে মানুষ কীভাবে রাস্তায় নেমে এসেছে। প্রতিটি থানা-উপজেলায় বড় বড় মিছিল হয়েছে। এর মধ্যেও তারা (আওয়ামী লীগ) থেমে নেই। গত ২২ আগস্ট সোমবার তারা লক্ষ্মীপুরে আক্রমণ করেছে। গৌরনদীতে ছাত্রদল, যুবদল, বিএনপির নেতাদের ঘর থেকে বের করে এনে মারধর করেছে।

দলের চেয়ারপার্সন প্রসঙ্গে বলতে যেয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি কারান্তরীন না হলেও গৃহে অন্তরীন অবস্থায় আছেন। এ সরকার তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দিতে চান না।  এক প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব বলেন,‘তিনি (খালেদা জিয়া) যদি বেরিয়ে আসেন, তাহলে সরকার তাঁকে সামাল দিতে পারবে না। তারেক রহমান যদি দেশে আসেন, তাহলে এখানে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসবে। এই ভয়েই তারা সেটা করতে চায় না।


শেয়ার করুন