২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০৩:১১:৪২ অপরাহ্ন


চাকরি বালিয়াকান্দিতে, থাকেন আমেরিকায়
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৮-২০২২
চাকরি বালিয়াকান্দিতে, থাকেন আমেরিকায়


রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’জন সহকারী শিক্ষক। তারা দু’জনই বর্তমানে আমেরিকায় অবস্থান করছেন। এরমধ্যে একজন দুদিনের ছুটি নিয়ে, অন্যজন কোনো প্রকার ছুটি ছাড়াই বছরের পর বছর অনুপস্থিত রয়েছেন। ফলে শিক্ষক সংকটে বিপাকে পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় দ্রæত পদ শূন্য করে শিক্ষক পদায়নের দাবি তাদের। শিক্ষকদ্বয় হচ্ছেন- খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমাইয়া সুলতানা। অপরজন একই ইউনিয়নের দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোজিনা খাতুন। সুমাইয়া খাতুন ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ছুটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ৮ এবং ৯ তারিখ দুইদিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে যাননি রোজিনা খাতুন। উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমাইয়া সুলতানা বিগত ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি চাকরিতে যোগদান করেন। অপরদিকে একই ইউনিয়নের দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোজিনা খাতুন ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট চাকরিতে যোগদান করেন। অনুপস্থিতির মাস থেকেই তাদের বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে। 

উভয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, কোনো প্রকার ছুটি ছাড়াই সুমাইয়া সুলতানা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। পরিবার সূত্রে জানতে পেরেছি তিনি আমেরিকায় আছেন, তিনি আর চাকরি করবেন না। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসকে অবগত করা হয়েছে, পদ শূন্য হওয়ার অপেক্ষা মাত্র।  দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ২ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে আসেননি রোজিনা খাতুন। পরবর্তীতে জানতে পারি তিনি আমেরিকা গেছেন। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসকে অবহিত করা হয়েছে, একাধিকবার তদন্তও হয়েছে। বিদ্যালয় দুটির একাধিক শিক্ষক বলেন, চাকরি থেকে অব্যাহতি না দিয়ে কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকা গুরুতর অন্যায়। শুধু বিদ্যালয়ই নয়, এটা শিক্ষার্থীদেরও ক্ষতি করা। অব্যাহতি নিলে দ্রæতই পদ শূন্যসাপেক্ষে শিক্ষক পাওয়া যায়, কিন্তু বিধি মোতাবেক বরখাস্ত হতে তো দীর্ঘমেয়াদি বিষয়। 

শুধু চাকরি থেকে বরখাস্ত নয়, সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফুল হক বলেন, ছুটি ছাড়াই সুমাইয়া সুলতানা এবং রোজিনা খাতুন নামে দু’জন শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। এরই মধ্যে একাধিক তদন্তও হয়েছে। জানতে পেরেছি তারা আমেরিকা রয়েছেন। খুব শিগগিরই পদ দুটি শূন্য ঘোষণা করা হবে এবং শিক্ষক পদায়নের ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি জানান। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী বলেন, সহকারী শিক্ষক সুমাইয়ার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে চ‚ড়ান্ত বরখাস্ত হবে। রোজিনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষা অফিসার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন, এখনো প্রতিবেদন পাইনি। প্রতিবেদন পেলেই বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


শেয়ার করুন