১৯ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ৬:৫৭:৫৬ অপরাহ্ন


খালেদার মুক্তির দাবিতে আসছে বড়ো কর্মসূচি
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৮-২০২২
খালেদার মুক্তির দাবিতে আসছে বড়ো কর্মসূচি খালেদা জিয়া/ফাইল ছবি


বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বড় ধরনের কর্মসূচিতে যাচ্ছে দলটি। এর পাশাপাশি অন্য রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও অর্ন্তভুক্তি হচ্ছে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

জানা গেছে, আগস্টে খালেদা জিয়ার সাথে তার জন্মদিন উপলক্ষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেখা করতে যান। খালেদার সাথে কথা বার্তার এক পর্যায়ে তিনি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে জানতে চান, জাতিসংঘের  মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাচলেটের বাংলাদেশ সফরের সময় দলের কর্মসূচি কি রাখা হয়? উত্তরে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক ধরনের ভ্যাবাচ্যাকা খেলেও পরে সামলে নেন। খালেদা জিয়াসহ আর সব বন্দীদের নিয়ে মাঠ কাঁপানো কর্মসূচি ছিলো কিনা। এর বিপরিতে কোনো উত্তর দিতে সক্ষম হননি বিএনপি মহাসচিব। তবে ওই সময় দেশনেত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন মির্জা ফখরুল যে- (খালেদা জিয়াকে) তার মুক্তি কে প্রধান এজেন্ডা করে শিগগিরই বিএনপি মাঠে নামছে।

জানা গেছে, বিএনপির মহাসচিব খালেদা জিয়ার মুক্তিটা দলের অগ্রগণ্য কর্মসূচি হিসেবে  দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন। এরপর দলের বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকের পর এনিয়ে বিস্তর আলাপ আলোচনা হয়। এবং সিদ্ধান্ত হয় তৃণমূলেও বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে সবধরনের আন্দোলন করা হবে।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের  মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাচলেটের বাংলাদেশ সফরের সময় মুক্তি দাবি করে রাজপথে কর্মসূচি না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ ব্যাপারে বিএনপির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে তিনি দোষারোপও করেছেন। 

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা ও সাজানো মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন।  তবে ২০২০ সালের মার্চে বয়স ও মানবিক বিবেচনায় শর্ত সাপেক্ষে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান। সে সময় থেকে তিনি অনেকটা গৃহবন্দি হিসেবে গুলশানস্থ ফিরোজায় থাকছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজায় কারাজীবন শুরু করেন খালেদা জিয়া। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয় এবং তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে।

এদিকে দুর্নীতির একটি মামলায় কয়েক ধরে কারাগারে ছিলেন বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার রাজনৈতিক জীবনে কখনো এত দীর্ঘসময় ধরে কারাভোগ করেননি। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাভোগ করেছেন। এর মধ্যে বিএনপি তার মুক্তির দাবিতে আইনি এবং রাজনৈতিক বেশ কিছু কর্মসূচি দিলেও তেমন জোড়ালো কর্মসূচি ছিল না। 

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিতে প্রথমে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যেমন উপস্থিত থাকতেন তেমনি সারাদেশ থেকেও এসে ঢাকার বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি কেমন জানি চাপা পড়ে যাচ্ছে বলে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে নিচের দিকের নেতা কর্মীরা মনে করছেন। দলের মহাসচিব খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টা প্রধান্য দিতে হবে এমনটা কখনই তেমন মাথা ব্যাথা দেখাননি বলে অভিযোগ উঠে। দলের এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি শীর্ষ পর্যায়ের মধ্য থেকে নেতাকর্মীদের এই ধারণা দেয়া হচ্ছে যে- দেশে আদৌ আইনের শাসন আছে কি না, এবং এই মুহূর্তে সেটাই বড়ো প্রশ্ন। তাই আইনের শাসন থাকলে অনেক আগেই দেশনেত্রী কারামুক্ত হতে পারতেন।  

তবে বিএনপির এক শ্রেণীর নেতারা মনে করেন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টা প্রধান্য না দেয়া একটা কৌশল হতে পারে। এটাতে কে কে লাভবান হবে সেটা নিয়েও চুলচেরা বিশ্লেষণ। আর তার মুক্তির বিষয়টা আড়ালে ফেলে দেয়া মানেই রাজনৈতিকভাবে কৌশলে খালেদা জিয়াকে মাইনাস করে দেখানোর  সরকারি কৌশলেই বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কেউ কেউ এমন ভাবে চুপচাপ থাকে কি-না সে আলোচনা এখন তীব্রতর হচ্ছে। তবে বিএনপি চেয়ারপার্সনের দিক নির্দেশনা ও তার ইচ্ছাশক্তির কারণে বর্তমানে ওই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাইতো এ মুহূর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি ক্রমশই সোচ্চার হচ্ছে। 

শেয়ার করুন