৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০২:৫০:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সৌন্দর্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৯-২০২৩
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সৌন্দর্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ


গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় অন্যতম একটি সৌন্দর্য হচ্ছে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা। কিন্তু এই নির্বাচন ব্যবস্থার ত্রুটির কারণেই গণতন্ত্রে প্রকারান্তরে প্রতিষ্ঠিত হয় সংখ্যালঘিষ্ঠদের শাসন। সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতির নির্বাচন অনুসরণকারী দেশসমূহে আসলে গণতন্ত্রের আবরণে সংখ্যালঘিষ্ঠের শাসন চলে। এই ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হলো সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন।

নির্বাচন ব্যবস্থাকে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে শানিত করা গেলে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এসব অভিমত প্রকাশ করেন আলোচকবৃন্দ। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও শাসন বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ রচিত নতুন একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনাতয়নে আলোচনা সভাটির আলোচনা করে গ্রন্তিক প্রকাশন। 

‘সংস্কার সংলাপ সূচনা সূত্র (রাষ্ট্র, নির্বাচন, শাসন-প্রশাসন ও সংবিধান)’ শীর্ষক বইটির মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভায় ড. তোফায়েল আহমেদ ছাড়াও আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি জাস্টিস এম এ মতিন, লেখক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম, ব্রতীর প্রধান নির্বাহী ও জাতীয় নদী কমিশনের সাবেক সদস্য শারমীন মুরশিদ, কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সহকারী সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। গ্রন্থিক প্রকাশনের প্রকাশক রাজ্জাক রুবেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন একই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার। 

ড. তোফায়েল আহমেদ উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমাদের দেশে ক্ষমতা বা শাসনব্যবস্থায় প্রকৃত অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি একটি সর্বজনীন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থা। এই সংকট নিরসনের একটি সূত্র হতে পারে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন ব্যবস্থা। এই বইটিতে  এসব সংকট নিরসনে প্রধানত পাঁচটি রাজনৈতিক ও ২১ প্রশাসনিক সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। রাজনৈতিক সংস্কারসমূহ: সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট জাতীয় সংসদ, তৃণমূল পর্যন্ত প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার  পুনর্বিন্যাস, একীভূত স্থানীয় সরকার আইন এবং একক তফসিলে সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন, দেশের বাইরে থাকা বাংলাদেশি ও প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদানের সুযোগ। 

জাস্টিস এম এ মতিন বলেন, এটা খুবই সত্য যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতির নির্বাচন অনুসরণকারী দেশসমূহে  আসলে গণতন্ত্রের আবরণে সংখ্যালঘিষ্ঠের শাসন চলে। এই ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হলো সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন। তাছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনা ব্যবস্থাকে কোনো একটি দলের নিয়ন্ত্রণমূক্ত রাখতে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টও খুবই জরুরি। 

ব্রি. জে. (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নির্বাচন কেন্দ্র দখল করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে ইভিএম বা বুলেট কোনো কিছুতেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এছাড়া রাজনৈতিকগুলোর প্রার্থী নির্বাচনও হতে হবে গণতান্ত্রিক। 

হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থাায় নাগরিকের আশা-আকাক্সক্ষার প্রকৃত প্রতিফলন ঘটে না। রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, দেশের বাইরে প্রায় দেড় কোটি মানুষ কাজ করেন, দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখলেও নির্বাচনে কিন্তু এই বিশাল একটা ভোটারের কোনো ভূমিকা নেই। রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমাদের সংস্কার প্রয়োজন সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। সম্পদের সুষম সম্পদের পুনর্বণ্টন নিশ্চিত করাটা জরুরি, আর এজন্য সামগ্রিক শাসন ব্যবস্থাতেই সংস্কারটা দরকার। ড. মোবাশ্বের মোনেম বলেন, নানা কারণে প্রকৃত অর্থে আমাদের স্থানীয় প্রশাসনগুলো কার্যকর হতে পারছে না। এগুলোতে সংস্কার প্রয়োজন। শারমীন মুরশিদ বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামোতে এখনো দুর্বলতা আছে। শাসন ব্যবস্থায় গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই আমাদের সামগ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় সংস্কার প্রয়োজন। আবু আলম শহীদ খান বলেন, সত্যিকারের সংস্কারের উদ্যোগটা আসতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে।

শেয়ার করুন