২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৬:২৯:১২ পূর্বাহ্ন


প্রোটিয়া বিপক্ষে বেরুলো ‘ক্রিকেট কংকাল’
সালেক সুফী, অস্ট্রেলিয়া থেকে
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১০-২০২২
প্রোটিয়া বিপক্ষে বেরুলো ‘ক্রিকেট কংকাল’ বাংলাদেশের বোলারদের বেড়ধক পিটিয়ে সেঞ্চুরীর পর রুশো/ছবি সংগৃহীত


দ.আফ্রিকা : ২০৫/৫ (রুশো ১০৯, ডিকক ৬৩, সাকিব ২/৩৩)।

বাংলাদেশ: ১০১/১০ (১৬.৩ ওভার), (লিটন ৩৪, সৌম্য ১৫, মিরাজ ১১, তাসকিন ১০, এনরিক ৪/১০, শামসি ৩/১০)।

ফল: দ.আফ্রিকা ১০৪ রানে জয়ী। 


সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে গ্রুপ পর্যায়ে সাউথ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ। তুখোড় সাউথ আফ্রিকা, ব্যাট হাতে  রীতিমত ঝড় তোলে এদিন। বাংলাদেশের নড়বড়ে বোলিং লাইন ও দুর্বল ফিল্ডিংয়ের ফাঁক গলিয়ে সংগ্রহ করে ফেলে টুর্নামেন্টের এই পর্যন্ত বড় স্কোর ২০৫/৫। হতে পারতো ২২৫ - ২৩০। কিন্তু শেষের পাচ ওভারে কিছুটা কন্ট্রোল করতে বেশীদুর যেতে দেয়নি।

এরপর পাহাড়সম স্কোর সামনে রেখে খেলতে নেমে কাপতে থাকা বাংলাদেশের ব্যাটিং মুহূর্তেই তছনছ। সিডনিতে উপস্থিত বহু বাংলাদেশী অনেক আগ্রহ নিয়ে এসে এমন ব্যাটিংয়ে মাথা নত করে ফিরেছে। কারন লড়াইয়ের আগেই হার মেনে  ১৬.৩ ওভারে ১০১ রানে সবাই আউট হয়ে যায়। এতে করে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কম প্রস্তুতি ও প্লানিং নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মত কন্ডিশনে খেলতে আসা দলের ‘ক্রিকেট কংকাল’ দ্বিতীয় ম্যাচেই বেরিয়ে যায়!

অনেক আশা নিয়ে বিপুল সংখ্যায়  বাংলাদেশী ( প্রবাসী সহ ) সমবেত হয়েছিল ঐতিহাসিক সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।  জয়ের প্রত্যাশা তো থাকবেই। কারন ২০০৬ থেকে টি২০ ক্রিকেট খেলে আসছে বাংলাদেশ। এখনও লড়াইটুকু প্রত্যাশা করা যাবে না সেটা তো হয় না। কিন্তু লড়াই দূরের কথা, সবইকে লজ্জার সাগরে ভাসিয়ে নিজেদের টি২০ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্যাবধানে বিধ্স্ত হলো টিম বাংলাদেশ।  

তাসমানিয়ার হোবার্টে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে বৃষ্টি ধুয়ে নেয়ায় নিশ্চিত জয় বঞ্চিত হয়েছিল সাউথ আফ্রিকা। জয়ের জন্য আর বড় জয়ের জন্য মুখিয়ে ছিল তারা। কিছু বাংলাদেশী ক্রিকেট এনালিস্ট ভেবেছিলো বাংলাদেশ অঘটন ঘটালেও পারে। বর্তমান দলের মান,শক্তি আর অভিজ্ঞতা এতো সীমিত যে অঘটন ঘটানোর সামর্থ ওদের নেই। প্রথম ওভারে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার উইকেট তুলে নিয়ে ভালো সূচনা করেছিল তাসকিন। কিন্তু এরর পর রাইলো রুশো দুর্দান্ত সেঞ্চুরী ছিল উপভোগ্য (৫৬ বলে ১০৯ )। এছাড়া আর কুইন্টন ডি কক ( ৩৮ বলে ৬৩ ) করে বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ব্যাট চালাল। ডি কক আউট হবার আগেই ওদের স্কোর দাঁড়িয়েছিল ১৪.৩ ওভারে ২/১৭০। ডি কক ইনিংসে সাতটি চার আর তিনটি ছক্কা হাকিয়েছিলো।


রুশোর ইনিংসে ছিল সাতটি চার আর আটটি প্রচন্ড ছক্কা।  বলতে পারেন চার ছক্কার বৃষ্টি দেখলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে উৎসাহ দিতে আশা বিপুল ক্রিকেট অনুরাগী। অবশ্য শেষ পাঁচ ওভারে ভালো বল করে ফায়ার এসেছিলো বাংলাদেশ এই সময় ওরা মাত্র ২৯ রান যোগ করলো ৩ উইকেট হারিয়ে। সাকিবের বোলিং নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেন যে সাকিব আক্রমণ থেকে শুরুতে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলো কে বলবে। বাংলাদেশ বোলিং নিয়ে ইচ্ছামতো খেলেছে রুশো আর ডি কক।  রুশো পরপর দুই ম্যাচে শত রান করার বিরল গৌরবের অধিকারী হলো। 


বাংলাদেশ দলের মোসাদ্দেক। স্ট্যাম্পিং মহারাজের বলে/ছবি সংগৃহীত 



বিশেষজ্ঞরা জানেন, দক্ষিণ আফ্রিকার দুরন্ত গতির পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ টপ অর্ডার লুটিয়ে পড়বে।  হলেও তাই দুই একটি আক্রমণাত্মক স্ট্রোকেস খেলে ফিরলো সৌম্য ( ১৫) , শান্ত নর্টজের বলে উড়ে গেলো। সাকিব (১) ,আফিফ (১) ,মোসাদ্দেক ( ০) ,সোহান (২) দাঁড়তেই পারলো না। শুধু নর্টজের (৪/১০ ) নয় ,তাবরেজ শামসীর ( ৩/২০) লেগ স্পিন খেতেও আনাড়ির পরিচয় দিলো বাংলাদেশ। ক্রিকেট স্কুলের শিক্ষা নবিশরা লজ্জা না পেলেও লজ্জা পেলো খেলা দেখতে আসা বাংলাদেশী আবাল বৃদ্ধ বনিতা।  ১০৪ রানের বিপুল ব্যাবধানে এটি ছিল টি ২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পরাজয়।


শেয়ার করুন