২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০২:০২:৪৮ পূর্বাহ্ন


নজরদারিতে বাংলাদেশিরা
নিউইয়র্কে বাড়ির দলিল জালিয়াতি গ্রেফতার ৩
মো. জামান তপন :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০১-২০২৩
নিউইয়র্কে বাড়ির দলিল জালিয়াতি গ্রেফতার ৩


নিউইয়র্কসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নানাধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটে। অনেক আগ থেকেই নিউইয়র্কে রকমারি প্রতারণা চলে আসছে। আবার এসব প্রতারণার সাথে বাংলাদেশিরাও জড়িত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতারকদের গ্রেফতার করলে দুষ্টু চক্র আরেকপি প্রতারণার ফাঁদ পাতে। এভাবেই যেন নিউইয়র্কে প্রতারণা চলছে। একসময় ছিলো ধাক্কার ব্যবসা, তারপরে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি, মেডিকেল জালিয়াতি, করোনার সময় পিপিপি এবং এসবিএস লোন কেলেঙ্কারি। এই দুই জালিয়াতির পাশাপাশি নতুন করে শুরু হয়েছে বাড়ির দলিল জালিয়াতি। এই জালিয়াতির মাধ্যমে ইতিমধ্যেই প্রতারকরা হাজার হাজার ডলার হাতিয়ে নিয়েছে। আকার কয়েকজন গ্রেফতারও হয়েছে। এরই মধ্যে জ্যামাইকায় এলাকায় কয়েকজন বাংলাদেশিও দলিল জালিয়াতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছেন। আবার ভদ্রবেশী এক লোকজন রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর সেজে সিটির বা অন্যের খালি বাড়িগুলো দখল করছেন এবং বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা চাঁদাবাজিতে সক্ষম হচ্ছেন। এসব টাউটদের এটা নয়া কৌশল। তারা অত্যাচারে অতীষ্ঠ যারা বাড়িগুলো ব্যাংক থেকে ক্রয় করছেন, তাদের সাথে পার্টনার হন এবং অনেক সময় বাড়িতে কাজ করানোর কথা বলে বাড়ির চাবি নিচ্ছেন এবং নিজের নামে বিল করে কখনো নিজের বাড়ি বলে দাবি করছেন। এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন।

এদিকে নিউইয়র্কে অ্যাটর্নি জেনারেল রয়ালিশিয়া জেমস বাড়ির দলিল জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি গত ডিসেম্বর নিউইয়র্কের আইনপ্রণেতাদের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা সহজ করার জন্য দলিল চুরিকে একটি স্বতন্ত্র অপরাধ বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল কাজ শুরু করেছেন। তার কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, নিউইয়র্কের কুইন্সে তিনটি বাড়ির দলিল জালিয়াতি করা হয়েছে এবং মিলিয়ন ডলারের বেশি হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। এই অভিযোগে দলিল জালিয়াতি চক্রের পাঁচ সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

গত ডিসেম্বর বাড়ির দলিল জালিয়াত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন স্টেসি সেন্ডারস, এনিকাচি হারকিউলিস এবং জেরিকুরিন। এদের বিরুদ্ধে দলিল জালিয়াতির পাশাপাশি মানিলন্ডারিং, অপহরণ, ষড়যন্ত্র, প্রতারণার পরিকল্পনা এবং অপরাধমূলক ছদ্মবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্য দুজন মার্কাস উইলচার এবং ডিন লয়েড পলাতক রয়েছে। চক্রটির অজ্ঞাতনামা তিন সদস্যকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। অ্যাটর্নি জেনারেলের মতে, ধরনের অপরাধে দোষীসাব্যস্ত হলে তাদের সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে ১৫ বছর জেল। এই জালিয়াতি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছিল। যখন জ্যামাইকার উইলচার এবং সেন্ট অ্যালবান্সে অনুপস্থিত মালিকদের সাথে রান-ডাউন বাড়িগুলি শনাক্ত করতে শুরু করেছিলেন। সান্ডার্স তারপর দ্রুত বাড়ি বিক্রয়ে উৎসাহিত করার জন্য সস্তা দামে বিনিয়োগকারীদের কাছে কুইন্সের বাড়িগুলি বিক্রি করে দেয়। হারকিউলিস একজন বরখাস্ত আইনজীবী। তিনি প্রকৃত মালিকদের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ডের মতো আইনি নথি জাল করতেন এবং অভিযোগ অনুযায়ী আইনি চিঠিপত্র পাঠানোর জন্য একজন প্র্যাকটিসিং অ্যাটর্নির পরিচয় দিতেন। যাকে কেউ বুঝতে না পারে। বাড়ির ক্লোজিং এবং চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য উইলচার এবং সন্ডার্স ছদ্মবেশী মালিক সাজার জন্য লোকদের খুঁজে বের করতো। ১৬১-১৪,১২১ অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত বাড়ির দলিল জালিয়াতি ঘটনায় কুরিন বাড়ির মালিকের পরিবারের একজন সদস্য সেজে এই স্কিমের সাথে অভিনয় করেছিলেন। চক্রের সদস্য তার বোন এবং পারিবারিক এস্টেটের নির্বাহক হওয়ার ভান করে কারো সাথে তার পরিবারের বাড়ির ক্লোজিংয়ে উপস্থিত হয়েছিল। বাড়ি ক্লোজ হওয়ার পর অভিযুক্তরা প্রকৃত মালিকদের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং সেই অ্যাকাউন্টে মিলিয়নেরও বেশি বিক্রির অর্থ জমা করেন। প্রতিটি বাড়ি একটি পৃথক সীমিত দায় কোম্পানির (এলএলসি) কাছে বিক্রি করা হয়েছিল। ১১২-৩৯,১৭৬ স্ট্রিটে অবস্থিত বাড়িটি জনৈক খানের সাথে যুক্ত একটি ফার্মের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল। অপরজন রিয়েলএস্টেট এজেন্টের কাছে ১৬১-১৪,১২১ অ্যাভিনিউ ব্রোকার জনৈক আহমেদের সাথে যুক্ত একটি কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়েছে এবং ১৬৮-১১ অ্যাভিনিউ বিজেড রাইজিংয়ে গিয়েছিলেন, যার কোনো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ছিল না।

শেয়ার করুন