২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৫:২২:১৭ পূর্বাহ্ন


বিএনপি’কে নির্বাচনে নিতে দেশী-বিদেশী লবিং
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০২-২০২৩
বিএনপি’কে নির্বাচনে নিতে দেশী-বিদেশী লবিং


বিএনপি’কে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিতে এবার দেশী-বিদেশী শক্ত লবিং জোরদার করেছে সরকার। এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে বিভিন্ন ধরনের প্রশাসনিক চাপও অব্যাহত রেখেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে ২০২৩ সালের নভেম্বরে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। 

হঠাৎ হ্যাঁ...

বিএনপি’কে নির্বাচনে না আনতে সরকারের একেবারে শীর্ষ পর্যায়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে দীর্ঘদিন। কোনোভাবেই যেনো বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে ব্যাপারে সরকারে শীর্ষ পর্যায়ে একপ্রকার দৃঢ় ছিল। শোনা যায়, গত বছর একটি প্রতিবেশী দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টি উঠে আসে। সেখানে সেই প্রতিবেশি দেশটি ঔই সময়ের আবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচন করার ব্যাপারে দৃঢ়তা দেখায়। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে তার ৪ দিনের সরকারি সফর গিয়েছিলেন। শোনা যায়, সফর থেকে এসেই বেশ দৃঢ় ছিল সরকার বিএনপিকে বাদ দিয়েই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি সম্পন্ন করে ফেলার ব্যাপারে। 

কিন্তু বর্তমানে এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায় এখন বেশ ইতিবাচক বিএনপিকে নিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করতে। সরকারের এমন অভিপ্রায় ফুটে উঠেছে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতারা কথা বার্তা ও বিবৃতিতে। দেশে সংবিধান অনুযায়ী সময় মতো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। বিএনপি বা কেউ নির্বাচনে না আসলে তাতে কিছু যায় আসে না বলে মন্তব্য করেছিলেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। কিন্তু পরক্ষণেই তিনি এ-ও বলেন, ‘তবে আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সর্বোচ্চ চেষ্টা করব যাতে বিএনপি নির্বাচনে আসে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই জানা যাবে তারা নির্বাচনে আসবে কিনা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’ অন্যদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন চাই। বিএনপির মতো দল নির্বাচনে থাকুক এটা আমাদের প্রত্যাশা।

কিন্তু কেনো বিএনপি’কে নির্বাচনে চায় সরকার...

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল যেন অংশগ্রহণ করে সেই চেষ্টাই চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তাদের এখন বদ্ধমূল ধারণা হয়েছে যে সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে হবে। সেই পরিবেশও সৃষ্টি তৈরি করতে হবে বলেও ধরে নিয়েছে সরকার। আগামী নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়ার পাশাপাশি যেনো  প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় সেই চেষ্টাও করার কথা বলা হচ্ছে বলে খোদ প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। বলা হচ্ছে, বিএনপিসহ অন্যান্য সব রাজনৈতিক দল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক তা নিশ্চিত করতে চায় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। কিন্তু কেনো সরকারের হাইকমান্ড এভাবে নেতিবাচক থেকে ইতিবাচকে টার্ণ নিলো? বিএনপিকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনতে এতো আগ্রহ কেন সরকারের? গত বছরে প্রতিবেশি দেশটির সাথে বৈঠক করে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ধারণা হয়েছিলো তারা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি বিএনপি বাদেই সম্পন্ন করে ফেলতে পারবে। কিন্তু এবার কেন পারছে না সে ধরনের জোর দেখাতে? জানা গেছে, ২০২১ সালের একেবারে শেষে দিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে বছর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ রয়েছেন।

তিনি সেসময় ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও পড়েছেন তিনি। এসব ঘটনায় সরকার বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। এনিয়ে বেশ দেন দরবার চলে। বেশ চড়া দামে লবিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে বলেও শোনা যায়। কিন্তু খুব একটা ইতিবাচক ফল দেয়নি। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গত বছর ভারতে সরকারি সফরে বেশ কিছু আশ্বাস লাভ করে সে দেশটির পক্ষ থেকে। এর মধ্যে একটি ছিল যে প্রতিবেশি দেশটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তার একটা সুরাহা করবে। আর সে আশ্বাসেই ভরসা রেখেই বিএনপি’র বিরুদ্ধে শক্ত আচরণ শুরু করে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে। কিন্তু এসব কাজ করতে গিয়ে সরকারের ইমেজ নানান ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এদিকে সম্প্রতি আমেরিকা, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশ দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি জোরালোভাবে জানাচ্ছে। 

পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে চাপে রাখতে বরাবরই গণতন্ত্র, মানবাধিকারসহ তাদের অগ্রাধিকারের নানা বিষয়ে সোচ্চার। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর ডেরেক এইচ শোলে তার বাংলাদেশ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। মার্কিন এ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে মনে করা হলেও একটি বিষয় পরিষ্কার যে দেশটির পক্ষ থেকে এবারে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে তারা ছাড় দেবে না। কেননা যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। জানা গেছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মানবাধিকার সুরক্ষা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো প্রসঙ্গগুলো এসেছে এবারে ডেরেক এইচ শোলের সফরে। ডেরেক শোলে এর আগে সফর করে যাওয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের উপদেষ্টাও।

জানা গেছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে শোলের বিভিন্ন আলোচনায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মানবাধিকার সুরক্ষা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো প্রসঙ্গগুলো এসেছে। জোর দেয়া হয়েছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে। এদিকে শোলের সফর নিয়ে নানান জল্পনা কল্পনা শেষ না হতেই  আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)- এমন খবর রাজনীতিতে নতুন মাত্রা পায়। অবশ্য নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে ইইউর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ধারণা এবার যেন তেনভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে গেলে বৈশ্বিক আর্থিক পরিস্থিতির কারণে তা হবে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর ডেরেক এইচ শোলে বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সফর আর বিবৃতির মধ্যে একটি খবর রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। তা ছিল ডেরেক শোলের সফরের সময়ে বাংলাদেশ সফর করেন ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। এসময় শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে ভারতের সমর্থনের বিষয় জোর গলায় বলে যান বিনয় মোহন কোয়াত্রা। যা রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচিত হয়। কিন্তু ভারতের এমন আশ্বাসের পরও বিএনপি’কে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিতে এবার দেশী-বিদেশী শক্ত লবি জোরদার করেছে সরকার। এই লবিতে প্রতিবেশি দেশটির পাশাপাশি একটি মুসলিম রাষ্ট্রও কাজ করে যাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। 

শেষ কথা..

এমাসে দিল্লি ও ওয়াশিংটনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সফর নিয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপি’র মধ্যে নানান ধরনের আলোচনা চলছে। দু-পক্ষই হিসাব কষছে যে পরিস্থিতি তাদেরই পক্ষে। তবে বিএনপি যা-ই ভাবুক না কেন সরকার এবার একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারেই দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে বলেই রাজনৈতক মহল মনে করেন। অবাধ, স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে আন্তরিকতার সাথে যে কাজ করে যাচ্ছে তা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর ডেরেক এইচ শোলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ মুখ থেকেই শুনে গেছেন এবং আশ্বস্ত হয়েছেন বলে শোনা যায়। কারণ অবাধ, স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে আসলে কি হবে তা কেউই এখনো আচ করতে পরছে না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর ডেরেক এইচ শোলেও সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি। 

তবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র দুর্বল হলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সীমিত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি জে ব্লিঙ্কেনের উপদেষ্টা ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের  কাউন্সিলর ডেরেক এইচ শোলে। ঢাকা সফর করে যাওয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষ দূত শোলে বলা যায় প্রছন্ন সর্তক করে দিয়েই বলেছেন, কোথাও গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়লে, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার সুযোগ সীমিত হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে একটি অবাধ, স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না করতে পারলে কি পরিণতি হতে পারে তা অন্যদেশের একটি খবরই যথেষ্ট। তা হলো ‘গণতন্ত্র বিনষ্টকারী’ নাইজেরীয়দের উপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা।

নাইজেরিয়ায় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে যারা দেশটির গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করতে চাইছে তারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বুধবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলেন, (নাম প্রকাশ না করা) ওইসব ব্যক্তি যাদের উপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না। এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যরাও ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারেন। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি নাইজেরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি অবাধ, স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না করতে পারলে কি পরিণতি পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র নিতে পারে তা সময়ই বলে দেবে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।

শেয়ার করুন