জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সভাপতি বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, আজকে বাংলাদেশের শাসক শ্রেণির যে সংকট দেখা যাচ্ছে তার শুরু ১৯৭২ সাল থেকে। ঘুষ, দুর্নীতি চোরাকারবারি লুণ্ঠন দখলের মধ্য দিয়ে ১৯৭২ সাল থেকে এই শাসকশ্রেণির জন্ম ও বিকাশ। আওয়ামী লীগ এই শাসকশ্রেণিরই প্রতিনিধি। এরা দ্রুত জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে ১৯৭৫ সালে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে।
ফ্যাসিবাদী শাসন, বাজারি শোষণ, লুণ্ঠন দুর্নীতি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের এক সমাবেশে তিনি একথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ সমাবেশে বদরুদ্দীন উমর আরো বলেন, চারটি দৈনিক রেখে সব সংবাদপত্র বাতিল করে। এভাবে শাসক দল আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় এক ক্যুদেতা সংঘটিত হয়ে সরকার উৎখাত হয়। দেশে কায়েম হয় সামরিক শাসন।
বদরুদ্দীন উমর বলেন, আজকে শাসকশ্রেণির যে সংকট দেখা যাচ্ছে তেমনি জনগণের সংগঠনেরও সংকট রয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসন উচ্ছেদের সংগ্রাম বেগবান করতে হলে তাই শ্রমজীবী জনগণের সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। সংগঠন ছাড়া ফ্যাসিবাদী শাসন মোকাবিলা করা যাবে না।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসন উচ্ছেদের সংগ্রাম গড়ে তুলতে শ্রমিক কৃষক নিপীড়িত জাতি ও জনগণের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। গণআন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানে পরিণত করা ছাড়া পরিস্থিতি পরিবর্তন করা যাবে না।
এতে পার্টির নেতা সজীব রায় বলেন, লুটেরা সন্ত্রাসী ব্যবসায়ী শ্রেণির স্বার্থে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। এদের স্বার্থেই দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন। ফ্যাসিবাদী শাসন উচ্ছেদের সংগ্রাম তাই এই লুটেরা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত করতে হবে।
মুজিবর রহমান গ্রামের গরিবদের সংগঠিত করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রাম বেগবান করায় গুরুত্ব দিতে বলেন। ভুলন ভৌমিক বলেন, জনগণের হাতে ক্ষমতা আনার সংগ্রাম গড়ে তুলতে ১৮ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সমাবেশে ২৩ ফেব্রুয়ারি হতে ২৩ মার্চ মাসব্যাপী প্রচার ও জনসংযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সভাপতি হাসিবুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি মিতু সরকার, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, বাঙলাদেশ লেখক শিবিরের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল, ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ওয়ার্কার্স ফ্রন্টের সহসাধারণ সম্পাদক প্রমোদ জ্যোতি চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রায়, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আমীর আব্বাস। সমাবেশ শেষে এক মিছিল শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে।