১২ এপ্রিল ২০১২, বুধবার, ১১:০৩:২৭ অপরাহ্ন


অ্যাসাইলাম ক্যাটাগরিতে গ্রিনকার্ড পেতে ৫২ সপ্তাহেরও বেশি বিলম্ব
মঈনুদ্দীন নাসের
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৩-২০২২
অ্যাসাইলাম ক্যাটাগরিতে গ্রিনকার্ড পেতে ৫২ সপ্তাহেরও বেশি বিলম্ব গ্রিনকার্ড


অ্যাসাইলাম পেয়ে যারা গ্রিনকার্ডের আবেদন করেছেন, তাদের অপেক্ষার সময় কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২৫ মাস থেকে ৫২ মাস অতিক্রম করেছে। অর্থাৎ ক্ষেত্রবিশেষে তাদের প্রায় ৫ বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে ইমিগ্রেশন ও সিটিজেনশিপ সার্ভিসের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য দেখলে তা বোঝা যায়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এজেন্সি যেসব ইমিগ্রেশন বেনিফিটের জন্য দায়ী, সেসব ক্ষেত্রে এই বিলম্ব হচ্ছে এবং এ নিযে কোনো ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দেয়া হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে গ্রিনকার্ডের আবেদনকারীদের দু’দুবার মেডিকেল রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়ে বিষয়টাকে আরো জটিল করা হচ্ছে। এই বিলম্বের কারণ আংশিক কোভিড-১৯, যদিও ইমিগ্রেশন সার্ভিসের পরিচালক উর জাড্ডো এই অপেক্ষার সময় নিয়ন্ত্রণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডুপ্লিকেট ফি হার, প্রিন্টিং রহিতকরণ এবং কাজের ভিসা নবায়নের কাজ সহজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারপরও এই ব্যাকলগ এখনো কাটিয়ে ওঠা যায়নি।

গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২০২২ সালের এক ফান্ডিং আইন সই করেন। তার মধ্যে ইমিগ্র্যান্টদের ফি দিয়ে পরিচালিত ইউএসসিআইএস বা ইমিগ্রেশন সার্ভিসের জন্য ৪০৯.৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে ব্যাকলগ কাটানোর জন্য। এর মাধ্যমে হয়তো অবশেষে ব্যাকলগ কাটবে, কিন্তু এই পরিবর্তন মাঠপর্যায়ে এখনো অনুভূত হচ্ছে না এবং এখন যেসব ইমিগ্র্যান্ট স্থায়ী বাসিন্দা বা গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করেন অ্যাসাইলাম পাওয়ার পর তাদের স্ট্যাটাস অ্যাডজাস্টমেন্টের জন্য দীর্ঘ বিলম্বের সময় অতিবাহিত করছে। অ্যাসাইলাম আবেদনকারীদের অ্যাডভোকেসি প্রজেক্টের সহকারী নির্বাহী পরিচালক কনসিটা ক্রুজ বলেন, তাদের জন্য যে সমস্যা বিরাজ করছে, তা অন্য গ্রুপের চাইতে ভয়াবহ। যেভাবে তা এখন দাঁড়িয়েছে, তাতে বিলম্ব আরো দীর্ঘায়িত হবার কথা।

বিরাজমান ব্যাকলগ পরিস্থিতি

ইউএসসিআইএস ৫ লাখ ৭০ হাজারের বেশি গ্রিনকার্ড ২০২১ অর্থবছরে প্রসেস করেছে। এই অর্থবছর সমাপ্ত হয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর। তাদের অধিকাংশ বিদেশি নাগরিকদের জন্য যারা পরিবারের মাধ্যমে বা এমপ্লয়ারদের মাধ্যমে স্ট্যাটাস অ্যাডজাস্ট করতে চায়।

ইমিগ্রেশন বিভাগ অ্যাসাইলামপ্রাপ্ত লোকদের কাছ থেকে অনেক কম আবেদন পেয়ে থাকে। অনেক কম আবেদনকারী আবেদন পাঠায়, কিন্তু  পাওনা তথ্যে দেখা যায় যে, এজেন্সি সেসব আবেদন অনেক কম গতিতে সম্পন্ন করে। যে পরিরমাণে আবেদন আসে, সে পরিমাণে তার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় না। ইউএসসিআইএস গত অর্থবছরে মাত্র ২২ হাজার অ্যাসাইলামভিত্তিক গ্রিনকার্ড প্রসেস করে। আর এ সময়ে আবেদনের সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। অর্থাৎ ইমিগ্রেশন সার্ভিস প্রাপ্ত আবেদনের অর্ধেকেরও কম আবেদন নিষ্পন্ন করেছে। এ কারণে অ্যাসাইলামের মাধ্যমে প্রাপ্ত গ্রিনকার্ডের প্রসেসিংয়ের হার সর্বনিম্ন। আর এ কারণে গত ডিসেম্বর মাস নাগাদ যেসব লোক অ্যাসাইলামের মাধ্যমে গ্রিনকার্ডের আবেদন করেছে, তাদের ৮৮ হাজার আবেদন ব্যাকলগে রয়েছে। 

ক্যাথলিক চ্যারিটির সিনিয়র ম্যানেজিং অ্যাটর্নি জেনিফার বিবি-গার্থ, যিনি একজন সাবেক অ্যাসাইলাম অফিসার, তিনি লক্ষ করেন যে, তার অনেক মামলা আছে যাদের গ্রিনকার্ড আবেদন আড়াই বছর ধরে অপেক্ষা করে আছে।

২০১৯ সালে ইমিগ্রেশন বিভাগে অ্যাসাইলাম ক্যাটাগরির ২৭ হাজারের বেশি গ্রিনকার্ড আবেদন প্রসেস করেছে, যা গত অর্থবছরের চাইতে বেশি। তারপরও সে বছর ৩৮ হাজার আবেদন স্থগিত ছিল। যা এ বছরের অর্ধেকের কম। অ্যাসাইলাম ক্যাটাগরির দীর্ঘ অপেক্ষার সময় অনেক বেশি।

অনেক লোকের, যাদের গ্রিনকার্ড বা সিটিজেনশিপ নেই, তারা অনেকে চাকরি পায় না। বিশেষ করে সামরিক বাহিনী ও ফেডারেল সরকারের চাকরি। স্টেট ইউনিভার্সিটিতে স্টেট টিউশন ফি লাভ করতে পারে না। স্থানীয় অনেক ঋণ ও অন্যান্য বেনিফিট পায় না। অবশ্য তা স্টেট থেকে স্টেটে ব্যারি করে। তারা বিদেশে বসবাসরত রিলেটিভদের স্পন্সর করতে পারে না। এক অ্যাসাইলাম পাওয়া লোক বলেন, তার বাড়ির রিফাইন্যান্স হয়নি একমাত্র তার ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসের জন্য। তিনি ২০১৪ সালে অ্যাসাইলাম আবেদন করেন চার বছর পর। ২০১৯ সালে তিনি গ্রিনকার্ডের আবেদন করেন। প্রায় তিন বছর পর তার আবেদন স্থগিত করে রাখা হয়েছে। এক ইমিগ্রেশন মুখপাত্র ম্যাথিও বুরকে বলেন, ‘হউএসসিআইএস এখনো কোভিড-১৯ এর ক্ষতিকর প্রভাবের শিকার।

অনেকেই আছেন, যারা ওয়ার্ক পারমিট পেতে প্রায় ৯ মাস থেকে ১ বছর সময় পার করে দিচ্ছে। অনেকেই ওয়ার্ক পারমিট না পাওয়ায় কাজ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। 


শেয়ার করুন