২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৭:৩৩:৫১ পূর্বাহ্ন


মাগফিরাতের দশক শুরু
আতিকুর রহমান নগরী
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৪-২০২৩
মাগফিরাতের দশক শুরু


রমজানের একাদশ দিবস থেকে শুরু হয় মাগফিরাত লাভের পালা। রমজানের চাঁদের পূর্ণতা যেমন হ্রাস পাচ্ছে, তেমনি রোজাদার বান্দাদের পাপও মুছে যাচ্ছে। আল্লাহপাক তার বাছাইকৃত মোমিন বান্দাদের রহমতের আবরণে আচ্ছাদিত করে তাদের আমলনামা থেকে পাপরাশি মুছে ফেলার কাজে নিয়োজিত করেছেন হাজার হাজার ফেরেশতা। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ডুত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে রমজানে কিয়ামুল লাইল তথা, তারাবির নামাজ পড়বে, তার অতীতের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’-সহিহ বুখারি

তারাবির নামাজ

রমজান মাসে সিয়াম সাধনা ফরজ এবং এশার নামাজের পর ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করা সুন্নতে মোয়াক্কাদাহ। 

তারাবির নিয়ত

নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকাতাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তায়ালা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আল্লাহু আকবার। প্রতি চার রাকাত পর পর বিশ্রাম নেয়া মুস্তাহাব। এ সময় এ দোয়াটি পড়া যায় ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি সুবহানাজিল ইজ্জাতি ওয়াল আজমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়াই ওয়াল জাবারুত সুবহানাল মালিকিল হায়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা সুবহুন কুদ্দুসুন রাব্বানা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়াররুহ।’

তারাবির গুরুত্ব ও ফজিলত

হাদিসের ভাষ্যানুযায়ী আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য অর্জনের প্রধান মাধ্যম হলো ফরজ ইবাদত ও ফরজ দায়িত্বসমূহের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া। অতঃপর সুন্নত ও নফলের মাধ্যমে যে পর্যায়ের নৈকট্য লাভের কথা হাদিসে এসেছে তা-ও অন্তরকে জাগ্রত করার জন্য এবং মানবাত্মাকে ব্যাকুল করার জন্য যথেষ্ট। যার সারাংশ হলো ইখলাসে নিয়তের সঙ্গে সুন্নত ও নফলের প্রতি মনোযোগী হলে বান্দার রুচি ও স্বভাব দুরস্ত হয়ে যায়। ফলে রেজায়ে খোদাওন্দিই হয় তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তার প্রতিটি আমল হয় প্রভু সন্তুষ্টির অনুগামী।

তার প্রতি থাকে খোদায়ি মহব্বত। এ ব্যাপারে ইরশাদ হচ্ছে- ‘কেউ যদি আমার ওলির (বন্ধুর) সঙ্গে দুশমনি করে, তবে আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা দিচ্ছি।-সহিহ বুখারী ১১/৩৪০-৩৪১ ফাতহুল বারী, মাজমাউল ফাতাওয়া: ১৮/১২৯-১৩১।

তারাবির নামাজ ২০ রাকাত

সহিহ হাদিসে রাসুলে কারিম (সা.) নিজ সুন্নতের পাশাপাশি  খোলাফায়ে রাশিদিনের সুন্নতকে অনুসরণ করার এবং তা মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে- ‘মনে রেখো! আমার পরে তোমাদের যারা জীবিত থাকবে, তারা বহু মতানৈক্য দেখতে পাবে। তখন আমার সুন্নত ও আমার খলিফাগণের সুন্নতকে আঁকড়ে ধরে রাখবে। একে অবলম্বন করবে এবং মাড়ির দাঁত দিয়ে কামড়ে রাখবে... এবং তোমরা (ধর্মীয় বিষয়ের) আবিষ্কৃত বিষয়াবলি থেকে খুব সতর্কতার সঙ্গে বেঁচে থাকবে। কেননা প্রতিটি নব আবিষ্কৃত বিষয় হচ্ছে বিদায়াত। আর প্রত্যেক বিদায়াত হচ্ছে গোমরাহি।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৬০৭, জামে তিরমিজি ৫/৪৩ হাদিস নং ২৬৭৬; সুনানে ইবনে মাজা হাদিস নং ৪২) জামে তিরমিজির ২২২৬ নম্বর হাদিসে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ইন্তেকালের পর খেলাফতের মেয়াদ ৩০ বছর হওয়ার ঘোষণা স্বয়ং নবীজি দিয়েছেন। সে হিসেবে  খোলাফায়ে রাশিদিন চারজন ১. সিদ্দিকে আকবর (রা.), ২. ফারুকে আযম (রা.), ৩. উসমান (রা.) ও ৪. আলী (রা.)। খোলাফায়ে রাশিদিনের ব্যাপারে ওহির মাধ্যমে রাসুল (সা.) এটা জেনেছিলেন যে, তাদের সুন্নতসমূহ নবী-শিক্ষার ওপরই ভিত্তিশীল হবে। তাদের সুন্নতসমূহ নববী সুন্নতেরই অনুগামী হবে এবং আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি মোতাবেক হবে। এ জন্যই তিনি উম্মতকে খোলাফায়ে রাশিদিনের সুন্নত তথা আমলকে আঁকড়ে ধরার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

শেয়ার করুন