১২ এপ্রিল ২০১২, বুধবার, ০১:৪৫:৩৮ অপরাহ্ন


মেয়র এরিক অ্যাডামস বললেন
বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করতে পেরে সম্মানিতবোধ করছি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৪-২০২৩
বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করতে পেরে সম্মানিতবোধ করছি বক্তব্য রাখছেন মেয়র এরিক অ্যাডামস


নিউইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিজয় রথ চলছেই। চারিদিকে শুধু বাংলাদেশিদের বিজয় গান। বাংলাদেশের বিজয় গান এবং বিজয় নিশান। মাত্র এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটে নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ স্ট্রিট নামে। তার কয়েক দিনের মাথায় বাঙালির আরেক বিজয় ম্যানহাটনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উত্তোলন করা হয় বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা। পতাকাটি উত্তোলন করেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস। আমেরিকার জাতীয় পতাকার সঙ্গে বাংলাদেশে জাতীয় পতাকা। দেখলেই বাংলাদেশির বুক গর্বে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। এমন একটি দিনের জন্যই প্রবাসী বাংলাদেশিরা অপেক্ষা করছিলেন। গত ৩০ মার্চ পড়ন্ত বিকালে লোয়ার ম্যানহ্যাটানের দক্ষিণ প্রান্তে নদীর তীরেই বাউলিং গ্রিনে জাতীয় সংগীতের সুরে সুরে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করলেন মেয়র এরিক অ্যাডামস, সঙ্গে ছিলেন প্রথম বাংলাদেশি আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিল সদস্য শাহানা হানিফ, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট মাজেদা উদ্দিন এবং কুইন্স ডেমোক্রেটিক লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী। এই প্রথম বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্ক সিটির মতো কসমোপলিটন সিটিতে মেয়রের উদ্যোগে বাংলাদেশের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হলো। এর আগে আমেরিকার ন্যাশনাল এ্যানথেম স্টার স্প্যাংগেল্ডর সঙ্গে লাল-নীল-সাদার জাতীয় খচিত পতাকা উত্তোলিত হয়। এই পতাকা ৩০ মার্চ বিকাল থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ওড়ে বাউলিং গ্রিনে।

বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা ম্যানহাটানে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে উড়ছে ১৯৭৪ সালে সদস্যপদ লাভের দিন থেকেই। এর বাইরে ম্যানহাটানে রকেফেলার সেন্টারে স্কেটিং রিংকের চারদিকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পতাকা উড়তো একদা। বাংলাদেশের পতাকা ’৯০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত উড়েছে প্রমিথিউসের ভাস্কর্যের ওপরে। এতোদিন পরে এই প্রথম মেয়রের উদ্যোগে এই পতাকা উত্তোলিত হলো নিউইয়র্ক সিটিতে। আর এর মূল উদ্যোক্তা বাংলাদেশ কমিউনিটির অ্যাকটিভিস্ট, সেইফেস্টের সভাপতি মাজেদা উদ্দিন।

পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, পৃথিবীতে একটি মাত্র দেশ আছে, যেখানে যে কেউ যে কোনো দেশ থেকে এসে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন। বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্টরা তাদের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি তার অফিসের বাংলাদেশি কর্মকর্তা মীর হাসানের নাম উল্লেখ করে বলেন, তিনিও ইমিগ্র্যান্টদের স্বপ্ন পূরণের প্রমাণ। মীর হাসান মেয়রের পাশেই ছিলেন। 

মেয়র বলেন, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ কমিউনিটি গ্রেসি ম্যানসনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে। তারা তাদের বর্ণাঢ্য সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে।

মেয়র অ্যাডামস বলেন, আমি বাংলাদেশিদের নতুন বন্ধু নই। ব্রুকলিন বরো প্রেসিডেন্ট হিসাবে আমি প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশিদের সঙ্গে কাজ করছি। আমি দেখেছি ব্যবসার প্রতি, ফ্যামিলির প্রতি, পাবলিক সেফটির প্রতি তাদের নিষ্ঠা ও ভালোবাসা। তিনি আরো বলেন, এটা আমার জন্য সম্মানের যে আমি বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করার সুযোগ পেয়েছি। তিনি পতাকা তোলার আগে বলেন, Happy Happy Independence Day for this great community. এর পর বাংলাদেশের পতাকা মেয়রের উদ্যোগে তোলার উদ্যোক্তা ও রূপকার মাজেদা উদ্দিন তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মেয়র অ্যাডামসকে বাংলাদেশিদের ‘ভাই’ বলে উল্লেখ করে বলেন, এটা আমাদের জন্য শুধু একটি বিজয় নয়, এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। তিনি এই বিল পাসে সহায়তা করার জন্য কাউন্সিলউয়োম্যান শাহানা হানিফকে অভিনন্দন জানান।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শাহানা হানিফসহ কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। মেয়রকে পরিচয় করিয়ে দেন মেয়র অফিসের ডিরেক্টর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মীর হাসান।

প্রথমে আমেরিকার ন্যাশনাল এ্যানথেমের সঙ্গে আমেরিকার পতাকা, তারপর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা, উত্তোলন করার পর দুই দেশের পতাকা পতপত করে উঠছিল বাতাসে।

সমবেত কণ্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন সবিতা দাশ, চন্দ্র রায়, শামীম সিদ্দিকী, মনিকা রায় চৌধুরী, রুনা রায়।

শেয়ার করুন