২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০১:৫৬:১৩ অপরাহ্ন


দেশকে পূর্ণিমা
রোজার মাস শেষ হয়ে গেলে মন খারাপ হয়
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৪-২০২৩
রোজার মাস শেষ হয়ে গেলে মন খারাপ হয় দিলারা হানিফ পূর্ণিমা


দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় তারকাদের একজন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম ওয়েব সিরিজে অভিনয় করলেন তিনি। নাম ‘হোটেল রিলাক্স’। এ বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির। 

প্রশ্ন: পূর্ণিমা হঠাৎ করেই আগের চেয়ে বেশি আলোক-উজ্জ্বল। এর কারণ কি?

পূর্ণিমা: মাঝখানে আমার অনেক কঠিন একটা সময় গেছে। ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও এর বিরূপ প্রভাব পড়েছিল। সেখান থেকে বের হতে পারায় নিজেকে অনেক হালকা মনে হচ্ছে। এই কারণে আপনাদের কাছে আমাকে আগের চেয়ে উজ্জ্বল মনে হচ্ছে।

প্রশ্ন: কঠিন সময় বলতে কি দ্বিতীয় বিয়ের আগের কথা বলছেন?

পূর্ণিমা: অনেকটা সেই রকমই। প্রথম বিয়ের পর আমি অনেকটা বন্দি হয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক বিষয় নিয়ে আমাদের মানসিক দ্বন্দ্ব ছিল। ওই অধ্যায়ের সমাপ্তি টানা অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল।

প্রশ্ন: ‘হোটেল রিলাক্স’ দিয়ে ওয়েব সিরিজে প্রথম কাজ করলেন। গল্প কেমন?

পূর্ণিমা : হোটেল রিলাক্সের গল্প আর দশটি ওয়েব সিরিজের গল্পের চেয়ে একটু আলাদা। সবকিছু দেখেশুনেই কাজ করেছি ওয়েবে। শুটিং করার অভিজ্ঞতা খুব ভালো। পরিচালক কাজল আরেফিন অমি সিনেমার মতই শুটিং করেছে। আশা করছি দর্শকের ভালো লাগবে।

প্রশ্ন: এতে আপনার চরিত্র কেমন?

পূর্ণিমা : ফার্স্টলুক দেখে বুঝতেই পারছেন, এতে আমাকে পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রে দেখা যাবে। এটা মূলত একটা অতিথি চরিত্র। তবে চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ। এর বেশি কিছু বলা যাবে না। ঈদ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে পুরো বিষয়টি জানতে হলে।

প্রশ্ন: ‘আহারে জীবন’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এটার শুটিং তো শেষ। কবে মুক্তি পাবে?

পূর্ণিমা : করোনাকালীন আমাদের সবার জীবনে নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে। তখন চারপাশের সবকিছু স্থবির হয়ে ছিল। সেই সময়কার পরিস্থিতি নিয়েই ‘আহারে জীবন’। পরিচালনা করেছেন ছটকু আহমেদ। এবারই প্রথম তাঁর পরিচালনায় কাজ করেছি। ফেরদৌস, মিশা সওদাগরসহ অনেকেই আছেন। শুটিং ও ডাবিং শেষ করেছি। এখন পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। আশা করছি, কোরবানির ঈদে সিনেমাটি মুক্তি পাবে।

প্রশ্ন: হাতে থাকা অন্য সিনেমাগুলোর কী খবর?

পূর্ণিমা : ‘গাঙচিল’ সিনেমার আমার অংশের কাজ শেষ করেছি। ভারতে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। এতে আমার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস। এ ছাড়া ‘জ্যাম’ সিনেমার ২০ শতাংশ শুটিং বাকি আছে। দুটি সিনেমাই পরিচালনা করেছেন নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল।

প্রশ্ন: এক সময়ে ঈদে নিয়মিত আপনার সিনেমা মুক্তি পেত। এ বিষয়টি এখন মিস করেন কি না?

পূর্ণিমা : মিস নয়, আফসোস করি। যখন প্রতি ঈদেই আমার সিনেমা রিলিজ হতো, সে সময়টা তো এখন আর নেই। তখন ঈদের সময় মান্না ভাই, রুবেল ভাই, আমিন খান, রিয়াজ, মৌসুমী আপু, শাবনুর আপুসহ অনেক তারকার সিনেমা রিলিজ হতো। ঈদ এলেই সবার মধ্যে উত্তেজনা কাজ করত। কার সিনেমা বেশি হল পাবে, কোনটা দর্শকপ্রিয় হবে-এসব নিয়ে সারা মাস আলোচনা চলত। ভালো কাজ করার প্রতিযোগিতা থাকত নিজেদের মধ্যে। সে তুলনায় এখন তো সিনেমাই রিলিজ হচ্ছে না। হলের সংখ্যাও একেবারে কমে এসেছে। ইন্ডাস্ট্রির সে সময়ের কথা মনে পড়লে খুব আফসোস হয়।

প্রশ্ন: সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি এখন নানা সংকটে জর্জরিত। এসব সংকট দূর করতে করণীয় কী?

পূর্ণিমা : আমি তো বিজ্ঞ মানুষ নই। সমাধান জানা থাকলে তো নিজেই কাজে নেমে পড়তাম। তবে আমার মনে হয়, আমাদের মিডিয়ার মানুষের মধ্যে সমন্বয়ের অনেক অভাব। মুখে মুখে সবাই একতার কথা বললেও বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। কারও সঙ্গে কারও মিল নেই। এফডিসিকে সবাই মিলে একটা মানচিত্রের মতো বানিয়ে ফেলেছে। সংগঠনগুলো একে অপরের থেকে অনেক দূরে। মিডিয়া ও দর্শকদেরও দায় রয়েছে। আমার কাছে মনে হয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় সিনেমা নিয়ে যারা কথা বলছে, তারা সিনেমা দেখেই না। যদি দেখত তাহলে এ রকম আজেবাজে কমেন্ট না করে গঠনমূলক সমালোচনা করত। যেকোনো কিছুকে এগিয়ে নিতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হয়। আমাদের মাঝে সেই একতার খুব অভাব।

প্রশ্ন: এবার ঈদের পরিকল্পনা কী?

পূর্ণিমা : ঈদের সময় এগিয়ে এলে খুশি লাগে। সাথে সাথে রোজার মাস শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে মন খারাপও হয়। এ সময়টাতে চেষ্টা করি ইবাদত-বন্দেগি করার, সবাইকে সাহায্য করার। ঈদ নিয়ে আলাদা তেমন পরিকল্পনা নেই। পরিবারের সবাইকে নিয়েই ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে চাই।

শেয়ার করুন