১৮ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৫:০৫:২৯ অপরাহ্ন


এশিয়া ও বিশ্বকাপ ক্রিকেটে কেমন দল চাই
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৫-২০২৩
এশিয়া ও বিশ্বকাপ ক্রিকেটে কেমন দল চাই


জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ সোশ্যাল মিডিয়া যত ব্যতিব্যস্ত তার থেকেও বেশি উত্তপ্ত আসন্ন এশিয়া কাপ এবং বিশ্ব কাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল নির্বাচন বিতর্কে। বাচাল ক্রিকেট কর্মকর্তা থেকে শুরু করে হয়তো মাঠের কৃষক, কলকারখানার শ্রমিক বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নির্বাচক বনে গেছে। নুন আন্তে পান্তা ফুরানোর দেশে ক্রিকেট এখন ঘরে ঘরে সমাদৃত। ক্রিকেট নিয়ে উন্মাদনায় দোষের কিছু নেই।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালি প্রজন্ম এখন অস্তাচলে। হয়তো আগামী দুই মৌসুম পরে ভালোবেসে নাম দেওয়া পঞ্চ পা-বের সবাই যাবেন অবসরে। এই প্রজন্ম সক্রিয় থাকতেই বৈষয়িক আসর থেকে বাংলাদেশ অন্তত একটি শিরোপা জয় করুক এটি দেশে প্রবাসে থাকা সব বাংলাদেশি কায়মনোবাক্যে কামনা করে। কিন্তু চাইলেই হবে না দলের বর্তমান সাফল্যের ধারা বজায় রেখে কাজের কাজটি যথাস্থানে যথাসময়ে করতে হবে। বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড বা দক্ষিণ আফ্রিকা কেউ কিন্তু বসে নেই। জানি না কোথায় হবে এশিয়া কাপ বা আদৌ এবার হবে কি না।  ধরে নিলাম হবে এবং পাকিস্তানেই হবে। ভারতে হবে বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ এর আগে আফগানিস্তান, নিউজিল্যান্ড দলের সঙ্গে দেশের মাটিতে খেলবে। প্রস্তুতির সবটুকু সেরে নিতে হবে। এবার ৫০ ওভার সাদা বল ক্রিকেটে দলের কংকালটা ইতিমধ্যে কমবেশি নির্ধারিত হয়েই আছে। কতগুলো প্রান্তিক পজিশনে নির্বাচন অনেক স্পর্শকাতর হবে।  দায়িত্ব নির্বাচকম-লীর। হেড কোচ, দলনায়কের মতামত নেওয়া হবে। এছাড়া উপমহাদেশে খেলা, স্টেডিয়াম, প্রতিপক্ষ বিবেচনায় নিতে হব।
একাদশ নিয়ে কথা বলি। বাংলাদেশের সাংবাদিকরা অহরহ বিসিবি সভাপতির সঙ্গে কথা বলেন। উনিও হয়তো কথা বলে পুলকিত হন। দুনিয়ার কোনো বোর্ড সভাপতি কিন্তু দল নির্বাচন নিয়ে এভাবে কথা বলে না। ওনার কথা কিন্তু নির্বাচকদের চাপে ফেলে।
স্কোয়াড কেমন হতে পারে
এশিয়া কাপ, বিশ্ব কাপ দুটি হবে ৫০ ওভারের। সেখানে ওপেনিং পার্টনারশিপ, মিডল অর্ডার, লেট অর্ডারে দক্ষতা, বড় আসরে কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে চাপ নিয়ে খেলার অভিজ্ঞতা, শারীরিক সক্ষমতা থাকতে হবে। তামিম ইকবাল, লিটন দাস দলের সূচনা করবে এই বিষয়ে কারো কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। তবে রিজার্ভ ওপেনার হিসেবে তুখোড় ফর্মে থাকা শেখ নাঈম এবং আনামুল বিজয় থেকে একজনকে বেঁচে নিতে হবে। সুযোগ আছে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ওদের খেলিয়ে পরখ করার। তিন, চার, পাঁচ, ছয়ে নাজমুল শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান। মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে কারো আপত্তি থাকার কথা নেই। এখন দলের অন্যতম ভরসা মেহেদী মিরাজ ৭ নম্বর পজিশনে এখন অনেকটা অটো চয়েস। এখানেই প্রশ্ন বৈষয়িক টুর্নামেন্টে লোয়ার মিডল অর্ডারে ম্যাচ জয়ী ফিনিশার কে আছে? পরিসংখ্যানে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে এগিয়ে রাখতেই হবে। স্কোয়াডে থাকলে একাদশেও ওনাকে উপেক্ষা করা যাবে না। আমার মনে হয় দলে একজন অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান রাখতে হলেও আফিফ হোসেন অথবা মোসাদ্দেককে রাখা উচিত। হয়ে গেলো ১০ জন। এবাদতকে যোগ করুন চারজন পেসারÑতাসকিন, মুস্তাফিজ, হাসান মাহমুদ এবং এবাদত। বৈষয়িক টুর্নামেন্টে উইকেট স্পোর্টিং হয়ে থাকে। বাংলাদেশকে দেখতে হবে লেজ যেন বড় না হয়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ কোনো খেলোয়াড় শেষ মুহূর্তে আহত হলে বিকল্প থাকতে হবে।  আমি সবকিছু বিবেচনায় মাহমুদুল্লাহকে বাইরে রাখার কোনো কারণ দেখি না।
হতে পারে এমন একটা স্কোয়াড
তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, শেখ নাঈম, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান এবং এবাদত হোসেন। দল প্রয়োজনে ৭ ব্যাটসম্যান ৪ পেসার নিয়ে খেলতে পারে যেহেতু দলে সাকিব, মিরাজ, রিয়াদ এমনকি প্রয়োজনে শান্ত বোলিং করতে পারবে। তাসকিন ইদানিং ভালো ব্যাটিং করে। তবে দলের জয়ে পেসারদের বড় ভূমিকা রাখতে হবে। বিশ্বকাপের খেলাগুলো এখন যে মাঠগুলোতে আইপিএল হচ্ছে সেখানেই হবে। আইসিএসি কিউরেটর সাধারণত স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে থাকে। অনেক ম্যাচ ৩০০ প্লাস রান হবে। ২৮০ -২৯০ করেও ম্যাচ জয় নিশ্চিত হবে না।  
পরিশেষে বলি দল নির্বাচনের দায়িত্ব বেতন দিয়ে নিয়োগ করা নির্বাচকদের উপর থাক। বড়  কর্তাদের এই বিষয়ে কথা না বলাই শ্রেয়।

শেয়ার করুন