মুসলিম সম্প্রদায়সহ সারা বিশ্বের সুখ-শান্তি এবং শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসব আমেজে যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৮ জুন উদ্্যাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। চমৎকার আবহাওয়া থাকায় বিভিন্ন মসজিদের ব্যবস্থাপনায় খোলা মাঠে ও মসজিদে ঈদ জামাতে মানুষের ঢল নেমেছিল। ত্যাগের মহিমা নিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন স্টেটে বসবাসরত মুসলমানরা এদিন পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। যুক্তরাষ্ট্রে সর্বত্রই ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদ জামাত। অধিকাংশ ঈদ জামাত সকাল ৭টা থেকে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মসজিদ ও ঈদগাহ প্রাঙ্গণ। নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের পরিচালনায় সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কুইন্সে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের উদ্যোগে। টমাস এডিসন হাইস্কুল মাঠে সকাল সোয়া ৮টার এ জামাতে মূলধারার রাজনীতিক এবং স্টেট ও সিটি প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এসে ঈদ মোবারক জানিয়েছেন। নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম এখানে ঈদের নামাজ আদায় ও মসুল্লিদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। জেএমসি আয়োজিত ঈদের জামাতে ইমামতি এবং বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন জেএমসির খতিব ও ইমাম মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ আর খুতবা পাঠ করেন শেখ জুনায়েদ। নামাজের আগে উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড আই উইপ্রিন। এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেএমসি পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. সিদ্দিকুর রহমান এবং ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. নাজমুল খান। এই পর্ব পরিচালনা করেন জেএমসির সেক্রেটারি আফতাব মান্নান। এই ঈদ জামাতে নারী-পুরুষ এবং নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
দারুস সালাম মসজিদ
গত ২৮ জুন জ্যামাইকা দারুস সালাম মসজিদে ঈদুল আজহার চারটি জামাত মসজিদ ভবনেই অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব ও ইমাম মাওলানা আবদুল মুকিত। ২য় জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ আলী। ৩য় জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা সিহাব উদ্দীন ও চতুর্থ জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা আবদুল্লাহ। চারটি জামাতেই বিপুলসংখ্যক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। প্রতিটি জামাতেই মুসলিম সম্প্রদায়সহ সারা বিশ্বের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
ওজনপার্কে ঈদের জামাত
আল আমান মসজিদ: সকাল ৮টায় স্থানীয় ডিওটি পার্কে অনুষ্ঠিত হয়। ইমামতি করেন বাংলাদেশ থেকে আগত মাওলানা আহমদুল হক। গত ২৮ জুন খোলা মাঠে ঈদুল আজহার জামাত ছিল শেষ জামাত। আগামী ডিসেম্বর মাসে সিটি কর্তৃপক্ষ এফোর্ডেবল হাউস তৈরি আরম্ভ করবে। জানা যায়, ২০১১ সাল থেকে মসজিদ আল আমানে বছরের দুটি ঈদের জামাত ডিওটি পার্কে হতো। ডিওটি পার্কে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার পেছনে স্থানীয় বেকডেইজের সিইও মিছবাহ আবদীনের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। মিছবা আবদীন দেশ পত্রিকার সাথে আলাপে বলেন, ডিওটি পার্কে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য আবেদন করা হলে প্রথমে মাঠ কর্তৃপক্ষকে ২৭ হাজার ডলার প্রদান করতে হয়। সে আবেদন করা হয় বেকডেইজের মাধ্যমেই। আগামীতে এরকম খোলা মাঠ পাওয়া কষ্টসাধ্য হবে বলে মিছবাহ আবদীন মনে করেন।
ফুলতলী জামে মসজিদ: স্থানীয় পিএস ৬৪ মাঠে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আলিম।
নিউইয়র্ক ঈদগাহ
বাংলাদেশি অধ্যুষিত নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসস্থ ডাইভারসিটি প্লাজায় নিউইয়র্ক ঈদগাহর ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি জামাতেই বিপুল মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। দূরে কোরবানি করতে যাওয়া মুসল্লিদের সুবিধার্থে ও তাদের অনুরোধে ১ম জামাতটি সকাল ৬টায় অনুষ্ঠিত হয়। শেষ ও ৫ম জামাতটি সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়। মুসল্লিদের কারণে বেলা ১১টায় জামাত ধরতে আসা মুসল্লিদের জন্য পরে মোহাম্মদী সেন্টার মসজিদে আরেকটি জামাতের ব্যবস্থা করা হয়। জামাত পাঁচটির ইমামতি করেন যথাক্রমে- ইমাম কাজী কায়্যূম (১ম), ইমাম শাইখ আবদুল্লাহ মামুন (২য়), ইমাম শাইখ মুসতানজিদ বিল্লাহ রাব্বানী বদরপুরী (৩য়), ইমাম শাইখ হাফিজ মোশাররফ হোসাঈন (৪র্থ) এবং ইমাম শাইখ ক্বারী আবুল খাইর ৫ম ও শেষ জামাতটি পরিচালনা করেন। প্রতিটি জামাতে ইংরেজি খুতবায় কোরবানির ঐতিহ্য ও বিশেষত্ব তুলে ধরা হয়। আমেরিকার মুসলমান, মুসলিম বিশ্বের ঐক্য এবং বিশ্বমানবতার কল্যাণ, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য দোয়া করা হয় প্রতিটি জামাতেই।
উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে স্থানীয় মোহাম্মদী সেন্টার জ্যাকসন হাইটস মুসলিম কমিউনিটির জন্য ঈদের নামাজের আয়োজন করে আসছে।
আল আমিন জামে মসজিদ
গত ২৮ জুন বুধবার আল আমিন মসজিদের উদ্যোগে সকাল ৮ টায় ৩৬ স্ট্রিট বিটুইন ৩৬ ও ৩৭ এভিনিউ এর মাঝে ঈদুল আযহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক মুসল্লীর উপস্থিতিতে ঈদ জামাত পূর্ব বক্তব্য মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন মুসলিম উম্মাহর ঐক্য কামনা করে বলেন, ইসলামি শিক্ষা, ত্যাগ তিতিক্ষা, পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন সৃষ্টি করার মধ্য দিয়ে ঈদের শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। আগামী প্রজন্মকে ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে আল-আমিন মসজিদে যে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে তাতে সর্ব সাধারণের সার্বিক সহযোগিতার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, সন্তানের কম্যুনিটি তথা অভিভাবকদের নিকট পবিত্র আমানত তাদেরকে সঠিক ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে ব্যর্থ হলে শুধু পিতা-মাতা নন, সর্বমহলের অভিভাবকও। কম্যুনিটির নেতৃবৃন্দ ঔ শাস্তির হাত থেকে রেহাই পাবেন না। প্রতিবেশিদের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করে ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে প্রতিটি মুসলিম নর-নারীকে ভূমিকা পালন করার আহ্বানও জানান তিনি। জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা লুৎফুর রহামন চৌধুরী।
ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার জামে মসজিদ
ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার জামে মসজিদের উদ্যোগে খোলা মাঠে পবিত্র ঈদুল আজহার বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের নিকটবর্তী খোলা মাঠে (পিএস ১০৬, ২১২০ সেইন্ট রেমন্ডস অ্যাভিনিউ, ব্রঙ্কস, নিউইয়র্ক ১০৪৬২)। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় এ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরাসহ বিপুল মুসল্লি এই ঈদ জামাতে অংশ নেন। ঈদ জামাতে ইমামতি করেন বাংলাবাজার জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ইয়াহইয়া। মসজিদের সভাপতি ডা. আবদুস সবুরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক লালন আহমেদের পরিচালনায় জামাতের পূর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর ন্যাথালিয়া ফার্নান্দেজ এবং উপদেষ্টা মোহাম্মদ এন মজুমদার। বক্তারা বাংলাবাজার জামে মসজিদের বহুতল ভবন নির্মাণে সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি মো. আহসান রাসুল নাসির, মোহাম্মদ হাসান, সহ-সাধারণ সম্পাদক শামিম উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন, সহ-কোষাধ্যক্ষ সোহেল চৌধুরী, কার্যকরি সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান, মোহাম্মদ আজিজুল হক, মোহাম্মদ বখতিয়ার খোকন, মিজানুর রহমান, ওয়ালিউর রহমান, জাফর তালুকদার, সেবুল খান, ফারুক আহমেদ ও মো. জসিম উদ্দিন। সহযোগিতায় ছিলেন উপদেষ্টা আব্দুর রব ধলা মিয়া, ইকবাল হোসেন মাহবুব প্রমুখ।
নামাজে বাংলাবাজার জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ গিয়াস উদ্দিনের আত্মার মাগফিরাতসহ বিশ্বমানবতার কল্যাণ ও শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।
নর্থ ব্রঙ্কস ইসলামিক সেন্টার অ্যান্ড জামে মসজিদ
যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে ২৮ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্্যাপিত হয়েছে। বিভিন্ন মসজিদের ব্যবস্থাপনায় খোলা মাঠে ও মসজিদে অনুষ্ঠিত ঈদ জামাতে নেমেছিল মানুষের ঢল। অধিকাংশ ঈদ জামাত সকাল ৭টা থেকে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
নিউইয়র্কে নর্থ ব্রঙ্কস ইসলামিক সেন্টার অ্যান্ড জামে মসজিদের উদ্যোগে বুধবার সকাল ৯টায় মসজিদ নিকটবর্তী ওভাল পার্কের খোলা মাঠে বিশাল ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বিপুলসংখ্যক মুসল্লি এই জামাতে অংশ নেন। নামাজে ইমামতি এবং ঈদুল আজহার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মসজিদের খতিব, আইএসএনবিআইসির ডাইরেক্টর আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামিক স্কলার শায়েখ আল্লামা মুহাম্মদ সাইফুল আজম বাবর আল আজহারী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ ইকবাল হোসাইন। বক্তব্য রাখেন মসজিদ কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা সৈয়দ জুবায়ের আহমেদ, মসজিদের ইমাম ও খতিফ হাফিজ মুসাদ্দেক আহমেদ।
নামাজ শেষে মিলাদ ও মুসলিম বিশ্বমানবতার কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন শায়েখ আল্লামা মুহাম্মদ সাইফুল আজম বাবর আল আজহারী। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মসজিদ কমিটির সভাপতি সৈয়দ জামিন আলী, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহ জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুব হুসেইন, সহ-কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ রাহুল ইসলাম, কার্যকরি সদস্য সৈয়দ ইসাক আলী, মো. আব্দুল হক হেলাল, নজমুল খান, মো. আব্দুল ছালেক, মো. মহি উদ্দিন, লুৎফুর শাহজাহান, মো. আতাউর রহমানসহ কমিটির সদস্যরা।
পার্কচেস্টার জামে মসজিদে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে মহিলাদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিল।
প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম ও খতিফ মাওলানা জুবাইর রাশিদ। দ্বিতীয় জামায়াতে ইমামতি করেন মৌলভি নূরুল ইসলাম।
আমেরিকান মুসলিম সেন্টার (এএমসি)-এর উদ্যোগে ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম তিনটি জামাত হয় মসজিদ ভবনে যথাক্রমে সকাল ৬টা, ৭টা, ৮টায়। এরপর চতুর্থ ও পঞ্চম জামাত অনুষ্ঠিত হয় জ্যামাইকার রুফস কিং পার্কে যথাক্রমে- সকাল ৯টা এবং সকাল ১০টার দিকে। তবে এখানকার চতুর্থ জামাত আদায়ের সময় ইমামের অসাবধানতাবশত ভুলের কারণে দুইবার নামাজ আদায় করতে হয়। এ নিয়ে কয়েকজন মুসল্লি তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
জ্যামাইকার মসজিদ আল আলাফা (আরাফা ইসলামিক সেন্টার)-এর উদ্যোগে পবিত্র ঈদুল আজহার একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮টায় স্থানীয় সুসান বি এন্থনী স্কুলের খোলা মাঠে। এতে ইমামতি করেন ইমাম মোহাম্মদ শোয়েব। এখানে সর্বস্তরের শত শত পুরুষ ও মহিলা জামাতে অংশ নেন।
জ্যামাইকার ‘হাজি ক্যাম্প মসজিদ’ নামে পরিচিত মসজিদ মিশনে ঈদুল আজহার চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় যথাক্রমে- সকাল সাড়ে ৬টায়, সকাল সাড়ে ৭টা, সকাল সাড়ে ৮টা ও সকাল সাড়ে ৯টায়। জামাতগুলোতে ইমামতি করেন যথাক্রমে- হাফেজ রফিকুল ইসলাম, হাফেজ তানভিরুল ইসলাম, মওলানা মঞ্জুরুল করীম ও হাফজ মারওয়ান।
ম্যানহাটানের মদিনা মসজিদের উদ্যোগে মসজিদ ভবনে ঈদের দুটি জামাত হয় যথাক্রমে- সকাল সাড়ে ৮টায় ও সাড়ে ৯টায়।
আটলান্টিক সিটি থেকে সুব্রত চৌধুরী: নিউজার্সির আটলান্টিক সিটিতে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ত্যাগের মহিমায় পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্্যাপিত হয়েছে। গত ২৮ জুন সকালে আটলান্টিক সিটির ৫৪৫, আলবেনি অ্যভিনিউতে অবস্থিত সেন্ড ক্যাসেল স্টেডিয়ামের সুবিশাল প্রান্তরে প্রবাসী বাংলাদেশি আমেরিকান মুসলিম সম্প্রদায়সহ বিপুলসংখ্যক মুসলিম ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য সমবেত হন। এখানে হাজার হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। পুরুষদের পাশাপাশি নামাজের জন্য ভিন্ন ব্যবস্থা থাকায় বিপুলসংখ্যক মহিলাও এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ঈদ জামাতে ইমামতি করেন ইমাম কামাল আল সায়েগ। নামাজ শেষে মানব জাতির কল্যাণ কামনার পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
আটলান্টিক সিটির মসজিদ আল তাকওয়া, ইসলামিক সেন্টার অব আটলান্টিক সিটি, গ্যালাওয়ে টাউনশিপের দারুস সালাম একাডেমি, প্লিজেনটভিলের মসজিদ বায়তুন নসরের যৌথ উদ্যোগে এই বিশাল ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ ঈদ জামাতে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি আমেরিকান শাহনাজ বেগম তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে এই প্রতিবেদককে জানান, সেন্ড ক্যাসেল স্টেডিয়ামের খোলামেলা পরিবেশে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে তিনি যারপরনাই খুশি। তিনি ভবিষ্যতেও এমন বিশাল ঈদ জামাতে নামাজ আদায়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এই বিশাল ঈদ জামাতের আয়োজন প্রসঙ্গে ইসলামিক সেন্টার অব আটলান্টিক সিটির প্রতিষ্ঠাতা ইকবাল হোসাইন জানান, নিউজার্সির মুসলিমদের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং আন্তরিকতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আটলান্টিক সিটি এবং পার্শ্ববর্তী অন্যান্য মসজিদের মুসল্লিদের সমন্বয়ে একটি ঈদের জামাত করার জন্য দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার ফসল আজকের এই বিশাল ঈদ জামাত। তিনি ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে ঈদ জামাত আয়োজনের স্বপ্ন দেখেন।
এদিন সকাল থেকেই প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিমরা ঈদ আনন্দে শরিক হতে নিজেদের উজাড় করে দিয়েছিল। ঈদের নামাজ আদায় শেষে ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত হয়ে মুসল্লিরা পরস্পরের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
মসজিদ আল হেরা: আটলান্টিক সিটির ২৪২৬, আটলান্টিক অ্যাভিনিউয়ের বাংলাদেশি আমেরিকানদের অর্থায়নে নির্মিত ও তাদের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত আল হেরা মসজিদে ঈদের জামাতে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিমসহ অন্যান্য কমিউনিটির মুসলিমরাও অংশ নেয়। বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিম মহিলাও ঈদের জামাতে অংশ নেয়। ঈদের নামাজ আদায় শেষে দেশবাসী ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সুখ-সমৃদ্ধির জন্য দোয়া করা হয়। এখানে ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মসজিদ আল হেরার খতিব আবু সুফিয়ান ও হাফেজ নজরুল ইসলাম। এখানে দুটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
নিউইয়র্কে আল আমিন মসজিদ, বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টার, আসসাফা ইসলামিক সেন্টার, বায়তুল জান্নাহ মসজিদ, সানিসাইড মসজিদ, মসজিদ আবু হুরায়রা, দারুস সুন্নাহ জামে মসজিদ, আল ফোরকান জামে মসজিদ, আমেরিকান মুসলিম সেন্টার, শাহজালাল মসজিদ, গাউছিয়া মসজিদ, পার্কচেস্টার ইসলামিক সেন্টার, ব্রঙ্কস মুসলিম সেন্টারসহ অন্যান্য মসজিদের ব্যবস্থাপনায় ঈদের বৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।