২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০১:৪৮:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


ভোলার গ্যাস সিএনজি করার সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০২-২০২৩
ভোলার গ্যাস সিএনজি করার সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী


দক্ষিণ বাংলার প্রান্তিক দ্বীপ জেলা ভোলার গ্যাস সিএনজি করে ঢাকার শিল্পকারখানাগুলোতে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের অদূরদর্শী পরিকল্পনা, প্রকল্প গ্রহণ আর বাস্তবায়নে আমলাতন্ত্রের স্বেচ্ছাচার আর সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কারণে দেশব্যাপী গ্যাস জ্বালানি সরবরাহ মহাসংকটে। তার ওপর যোগ হয়েছে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের ভূরাজনৈতিক অশুভ প্রভাব। বেসামাল সরকার ভোলার গ্যাস ভোলায় এবং দক্ষিণ অঞ্চলসহ জাতীয় গ্রিডে ব্যবহার না করে সিএনজি করার অবাস্তব কার্যক্রম নেয়া আত্মঘাতী হবে। 

এমনিতেই গ্যাস সরবরাহ বঞ্চিত দক্ষিণ বাংলার ৯ জেলায় ভারী বা মাঝারি শিল্প গড়ে ওঠেনি। এমনকি খোদ ভোলায়ও গ্যাসসংযোগ দেয়া হয়নি। সেখানে কেন ভোলার গ্যাস খুলনা পর্যন্ত নির্মিত জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে না? এখানে বড় একটি প্রশ্ন থেকেই যায় যে উত্তোলন যোগ্য কত গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে? কত গ্যাসপ্রাপ্তির সম্ভাবনা আছে? ১৯৯৮-৯৯ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক তেল কোম্পানি ইউনোকোল ওয়েস্টার্ন করিডোর ইন্টিগ্রেটেড প্রজেক্ট (রিপ) নাম মার্কিন দলের ৭০০ মিলিয়ন মূল্যের একটি প্রস্তাব দিয়েছিল। আমি নিজে সেই সময় সম্পৃক্ত থেকে পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট, গ্যাস ক্রয়-বিক্রয় অ্যাগ্রিমেন্ট, গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যাগ্রিমেন্টসহ বিভিন্ন প্রকল্প দলিলের চূড়ান্ত খসড়া রচনায় অংশ নিয়েছিলাম। মাঠপর্যায়ে তিন মাস দলনেতা হয়ে ভোলার শাহবাজপুর থেকে খুলনার দিঘলিয়া পর্যন্ত পাইপলাইনের রাইট অব এ নির্বাচন করেছিলাম। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২০০৫ নাগাদ পাইপলাইন-বাহিত গ্যাস পেতো বরিশাল, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চল। ভোলায় ৬০ মেগাওয়াট, বরিশালে ১০০ মেগাওয়াট এবং খুলনায় ৩০০ মেগাওয়াট গ্যাস নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে উঠতো। আমি আমার প্রতিবেদনে প্রকল্পটির সপক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেছিলাম।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান জ্বালানি উপদেষ্টার উপস্থিতিতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে আমাদের কার্যক্রমের বিবরণ দিয়েছিলাম। আমাকে বিভিন্ন আলোচনায় ইউনোকলের ভূতত্ত্ববিদ এবং পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলীরা অন্তত দুই টিসিএফ গ্যাসপ্রাপ্তির কথা বলেছিল। ব্লক ৭ আরো গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাবনার কথা বলেছিল। অথচ তৎকালীন সরকার ভ্রান্ত পরিকল্পনায় প্রকল্পটি গ্রহণ করেনি। পরবর্তী নির্বাচনে তৎকালীন সরকার পরাজিত হয়। বিএনপি-জামাত সরকার গ্যাস নিয়ে আদৌ কোনো কাজ করেনি। বর্তমান সরকারের কার্যক্রমে ভোলায় আরো গ্যাসপ্রাপ্তি ইউনোকলের প্রকল্প প্রস্তাবনার যথার্থতা প্রমাণ করছে।

আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভোলার গ্যাস জাতীয় গ্রিড সংযুক্ত করার পর্যাপ্ত যৌক্তিকতা রয়েছে। সেটি পাশ এড়িয়ে তড়িঘড়ি করে একটি শিল্পগোষ্ঠীর স্বার্থে সিএনজি করে ঢাকায় নেয়ার সিদ্ধান্ত হবে হঠকারিতা। কিন্তু তাতে কতটা লাভবান হওয়া যাবে। এর চেয়ে দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার কাজে ওই গ্যাস ব্যবহার হলে তার মূল্যায়ন ঢের বেশিই হবে।

তাছাড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষেরও গ্যাসপ্রাপ্তির অধিকার রয়েছে। ওই অঞ্চলে গ্যাস থাকলে সেখানেও শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে। তাতে দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্ব আরো বেড়ে যাবে। দক্ষিণ অঞ্চলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাধারণ জনগণ এটা ভালোই জানেন। তারাও চাইবেন তাদের অঞ্চলকে যেন বঞ্চিত না করা হয় এটাই তো স্বাভাবিক।

শেয়ার করুন