৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ৬:৬:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


টেস্ট ক্রিকেটে টেকসই উন্নয়ন না হওয়ার জন্য বিসিবি দায়ী
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৫-২০২২
টেস্ট ক্রিকেটে টেকসই উন্নয়ন না হওয়ার জন্য বিসিবি দায়ী শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে আউটের আবেদন বাংলাদেশী ফিল্ডারদের/ছবি সংগৃহীত


২২ বছর ধরে ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলিং ফরমেট টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ খাবি খাচ্ছে। কোনো ধারবাহিকতা নেই। বিদেশের মাটিতে সাফল্য দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়। এখন দেশের মাটিতেও নিয়মিত হেরে যাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় লজ্জাজনক ধবল ধোলাইয়ের পর সুযোগ এসেছিলো দেশের মাটিতে অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণ নিয়ে খেলতে আসা শ্রীলংকা দলের বিরুদ্ধে সিরিজ জয় করবে।

চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গে সুযোগ পেয়েও নানা কারণে হয়নি। আর এখন নিজেদের ক্রিকেটের অভয় অরণ্য বা দুর্গম দুর্গ যা-ই বলেন, শের ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এ পর্যায়ে পরাজয় এড়াতে লড়বে বাংলাদেশ। ম্যাচের পঞ্চম দিনে এসে এ অবস্থা কেন হবে। ম্যাচে হার এড়াতেও পারে। কিন্তু সেটা যা-ই হোক, দেশে অর্থনৈতিকভাবে বির্পযস্ত শ্রীলঙ্কাকে এবার যে সুযোগ ছিল সেটাতে সফল হতে না পারা- এবং আমি বাংলাদেশের এই বর্তমান অসহায়ত্বের জন্য সম্পূর্ণ ভাবে একটি ব্যাবসায়ী সংগঠন নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে দায়ী করবো। 

২৩ বছর আগে ১৯৯৯ বিশ্বকাপ চলাকালে  বাংলাদেশের তৎকালীন হেড কোচ কিংবদন্তি ক্যারিবীয় ক্রিকেটার স্যার গর্ডন গ্রিনিজ বিলেতি মিডিয়াকে বলেছিলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামো টেস্ট ক্রিকেট খেলার জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠেনি। অবকাঠামো বলতে শুধু গুটি কয়েক খেলার ম্যাচ , কিছু বিশ্ব মানের খেলোয়াড় বুঝায় না। ভালো উইকেট, ভাল মাঠ ,উন্নত অনুশীলন সুবিধা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলক প্রথম শ্রেণীর লঙ্গার ভার্সান ক্রিকেট লীগ বা টুর্নামেন্ট, উন্নত মানের আম্পায়ারিং , ক্রিকেট শিক্ষিত মিডিয়া সব কিছু বোঝায়। 

সাবের হোসাইন চৌধুরী তখন বিসিবি সভাপতি, বর্তমান আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের দ্বায়িত্বে। সৈয়দ আশরাফুল হক বিসিবি সাধারণ সম্পাদক। আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। সত্যি কথাটি অকপটে বলার জন্য জন্য অপমানজনক ভাবে গ্রিনিজকে অব্যাহতি দেয়া হলো। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ম্যাচ জয়ে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার পরেও অধিনায়কত্ব হারলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।  

আজ ২০২২ এসে এখনো কি বলা যায় না- বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট সংস্কৃতি বা ক্রিকেট সংস্কৃতি গড়ে উঠে নি। দেশে লংগার  ভার্সান ক্রিকেট হয় দায় সারা গোছের। মাঠের সংখ্যা সীমিত। বাউন্স কম থাকা , ধীর গতির উইকেটে পেস বোলারদের কিছু করার থাকে না। কয়েক ওভার পরেই ব্যাটিং স্বর্গে স্পিনার্স রাজত্ব করে। দুর্বল পক্ষপাত আম্পায়ারিং , উন্নত অনুশীলন ব্যাবস্থার অপ্রতুলতা আছেই। 

১৯৭০ , ১৯৮০ দশকের কথা ব্যাদ দিলাম , ১৯৭০ এর আগে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা শহর ময়মনসিংহ, রাজশাহী, কুমিল্লা, ফরিদপুর, রাজশাহী, সিলেট , রংপুর , দিনাজপুর ,পাবনা , খুলনা ,যশোরে নিয়মিত ক্রিকেট হতো শীত মওসুমে। ২০০০ এর পর থেকে সীমিত হতে হতে এখন শুন্যের কোঠায় , বিসিবি জুড়ে চর দখলের মতো বসে আছে কিছু ভুঁইফোড় সবজান্তা ক্রিকেট প্রশাসক। একশ্রেণীর সুবিধাবাদী প্রাক্তন ক্রিকেটার সম্পৃক্ত থেকেও কাজের কাজ করতে পারছে না। বহু অর্থ খরচ করে নামে দামি বিদেশী প্রশিক্ষক এনেও কিছু হচ্ছে না। মাঝে মধ্যে দু’একটা সাফল্য ঝড়ে বগ মরার মত। 

ঢাকা টেস্টের কোথায়ই ভাবুন। এই উইকেটে ব্যাটিং শুরু করে ৭ ওভারের মাঝে ২৪ রানে ৫ উইকেট নেই। প্রথম ইনিংসে ৬ জন রানের খাতেই খুলতে পারলো না। মুশফিক লিটনের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপণ্যে সন্মানজনক ৩৬৫ রানে।  একই উইকেটে বাংলাদেশ দলকে হাতে কলমে ব্যাটিং তালিম দিয়ে শ্রীলঙ্কা ৫০৬ রানের বিশাল সংগ্রহ করে বিপদে ফেলে দিলো বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ইনিংসে আবারো ব্যাটিং বিপর্যয় ২৩ রানে নেই ৪ উইকেট ১৩ ওভার শেষে ৩৪ /৪। উইকেট শেষ ভরসা মুশফিক লিটন। আজ প্রথম সেশনে খেলা শেষ হলে অবাক হবো না। 

প্রশ্ন করেছি, বার বার দক্ষিণ আফ্রিকায় ভূমিধস টেস্ট সিরিজ ধবল ধোলাই থেকে কি শিখেছে বাংলাদেশ? বিসিবির কি কোনো দায়িত্ব নেই?  বিসিবি প্রধানের কি লজ্জা হয় না? কেন মুমিনুলের মতো উচুঁমানের ব্যাটসম্যানের বাটে দীর্ঘস্থায়ী রান খড়া ? কেন এক ইনিংস ভালো খেলে পর পর ইনিংস গুলোতে বার্থ জয়? ক্রমাগত ব্যর্থ শান্তকে আর কত সুযোগ দেয়া হবে? তামিমের রিফ্লেক্স অনেক কমে গেছে। এই টেস্ট দলের মুশফিক , লিটন, সাকিব, তাইজুল, এবাদত, তামিম  ছাড়া কাউকেই টেস্ট মেটেরিয়াল মনে হচ্ছে না। কেউ কি বলবেন, কেন বার বার বাংলাদেশের খেলোয়াড় আহত হচ্ছে? 

বিসিবি সভাপতি বলেন সবার বিকল্প আছে সাকিব ছাড়া। বর্তমান মুহূর্তে টেস্ট দলে মুশফিক আর লিটনের বিকল্প কারা ? লেট অর্ডারে মাহমুদুল্লাকে কি মিস করছে না বাংলাদেশ?

আমি বলছি- হবে না বর্তমান বিসিবিকে দিয়ে। আমি এই দলের আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর নিয়ে আশাবাদী হতে পারছি না। ওদের পেস আক্রমণ কিন্তু অনেক সমৃদ্ধ। বাংলাদেশ ব্যাটিং ( মুশফিক থাকবে না) টেস্টে কি করবে ভাবতেই পারছি না। অনেক তো হলো- এবার পাপন বাহিনী আপনা থেকে বিদায় নিলেই ভালো। ওদের হাতে ক্রিকেট পতনের ষোলোকলা পূর্ণ করতে আর বেশি বাকি নেই। 


শেয়ার করুন