০৩ মে ২০১২, শুক্রবার, ০২:২২:০১ পূর্বাহ্ন


দীর্ঘ বিলম্বে হলেও অফশোর বিডিং
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৩-২০২৪
দীর্ঘ বিলম্বে হলেও অফশোর বিডিং সাগরে তেল অনুসন্ধান


নানা ধরনের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সামাল দিয়ে সাগর সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির একযুগ পরে অবশেষে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন পিএসসি বিডিং রাউন্ড ঘোষণা করা হলো। সংশোধিত মডেল পিএসসিতে নানা ধরনের প্রণোদনা থাকায় আশা করা যায় অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সাগর সীমায় এবারের উদ্যোগে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তেল কোম্পানিগুলো সাড়া দেবে। অথচ সরকার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কাজ বিবেচনা করে আজ থেকে ৭-৮ বছর আগে একই ধরনের উদ্যোগ নিলে গ্যাস /প্রাথমিক জ্বালানি নিয়ে বর্তমান সংকট সৃষ্টি হতো বলে মনে হয় না।

দুই প্রতিবেশী দেশ মায়ানমার এবং ভারত তাদের জলসীমায় অনুসদ্ধান চালিয়ে ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করেছে। কি কারণে কেন বাংলাদেশ পারেনি সেই প্রসঙ্গে পিছু ফিরে না তাকিয়ে এখন উচিত সমন্বিত প্রচেষ্টায় উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করার। 

স্বীকার করতেই হবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসাবে বাংলাদেশ সাগরে তেল অনুসন্ধান শুরু করলেও বাংলাদেশের পিএসসি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম গতিশীল হয়নি, অনেকটা এই ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পেশাদারিত্ব গড়ে না ওঠায়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তেল কোম্পানিগুলোকে আস্থায় নিয়ে বাংলাদেশের গভীর সাগরে ঝুঁকি বিনিয়োগে অনুপ্রাণিত করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। সেক্টরে হাতেগোনা কয়েকজন মেধাবী কর্মকর্তাদের নিয়ে যথাসময়ে দরপত্র মূল্যায়ন, চুক্তি নিয়ে দরকষাকষি এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে তেল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি বাস্তবায়ন মনিটরিং করার জন্য পেট্রোবাংলাকে কারিগরি আর্থিক, আইনগত দিক দিয়ে শক্তিশালী হতে হবে. আমি নিজে একসময় মাঠ পর্যায়ে ইউনোকোল/শেভরন/কেয়ার্ন কাজ তদারকি করেছি, চুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে দরকষাকষি করেছি। আশা করি বর্তমান পরিচালক (পিএসসি) শাহনেওয়াজ পারভেজ, ফারহানা শাওন, আইনুল কবির, ফজলুল হকদের মত কুশলী কর্মকর্তাদের সমন্বিত করে শক্তিশালী কমিটি গঠন করবে। একজন পেট্রোলিয়াম অ্যাকাউন্টেন্ট, একজন পেট্রোলিয়াম আইনবিশারদ প্রয়োজন হবে। 

বিদ্যমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নানা ধরনের চাপ, চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হবে। পরাশক্তিগুলো চাইবে সাগর সীমায় তাদের দেশের কোম্পানিগুলো অবস্থা গ্রহণ করুক। সরকার প্রধান চাপের কাছে নতি স্বীকার করেন না। তবুও এই বিষয়ে কৌঁসুলি হওয়ার প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে মায়ানমারের পরিস্থিতির দিকে নজর দিতে হবে। 

এমনি মুহূর্তে পেট্রোবাংলার উচিত দেশে বা প্রবাসে থাকা অভিজ্ঞ প্রাক্তন পেট্রোবাংলার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করা। এলএনজি আমদানি থেকে লাভবান সিন্ডিকেট কিন্তু নানাভাবে সাগরে গ্যাস-তেল অনুসন্ধান প্রভাবিত করতে চেষ্টা করবে। ভুলে গেলে চলবে না সরকারে লুকিয়ে থাকা একটি চক্রের কারসাজিতে সাগরে বহুমাত্রিক সার্ভে কাজ দীর্ঘকাল বিলম্বিত হয়েছিল।

শেয়ার করুন