০২ মে ২০১২, বৃহস্পতিবার, ১১:৪১:৪১ পূর্বাহ্ন


বাপার সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ
পুঁজিপতিদের কাছে সরকারের মাথা নত
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৯-২০২৩
পুঁজিপতিদের কাছে সরকারের মাথা নত বাপার সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ


বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সহ-সভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেছেন, বর্তমানে আমরা জনস্বাস্থ্যকে আত্মাহুতি দিতে দেখছি। সরকার পুজিপতিদের কাছে নত হয়ে পরিবেশ দূষণকারী সকল দাবি মেনে নিচ্ছে। 

বাপা’র উদ্যোগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সাগর রুনি মিলনায়তন, সেগুনবাগিচায় “বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয়”শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

স্থপতি ইকবাল হাবিব আরো বলেন, এর ফলে মানুষের গড় আয়ু আট বছর কমেছে। সরকার পুঁজিপতিদের স্বার্থে বাযূদষূণের মাত্রা ইচ্ছামত পরিবর্তন করছে। দেশ বিকলাঙ্গ প্রজন্ম তৈরির কারখানা হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আগামী নির্বাচনের আগে এসকল কাজে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদেরকে নমিনেশন না দেওয়া এবং পরিবেশ সংরক্ষণে সর্বচ্চো গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি দলের নিকট থেকে নির্বাচনী ইস্তেহার প্রদানের দাবি জানান সকল দলের প্রতি।

বাপা’র সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও (ক্যাপস)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য রাখেন বাপা’র সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম, এবং বাপা জাতীয় কমিটির সদস্য ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি)’র পরিচালক, গাউস পিয়ারী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাপা’র সহ-সভাপতি মহিদুল হক খান, যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমন, নির্বাহী সদস্য জাভেদ জাহান, জাতীয় কমিটির সদস্য হাজী আনছার আলী, মুনসেফা তৃপ্তী প্রমুখ।

মূল বক্ত্যবে অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, আমরা অবহেলার জন্য প্রতিনিয়তই এই বায়ুমন্ডলকে দূষিত করছি। তিনি, বায়ু দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০২২ এ বস্তুকণা ২.৫ এর পূর্ববর্তী মান প্রতিঘনমিটারে ১৫ মাইক্রোগ্রাম বজায় রাখা; উন্নয়ন সহযোগিতা প্রদানকারী দেশগুলো নিজ দেশে যেভাবে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে ইমিশনের মাত্রা বজায় রাখে একইভাবে বাংলাদেশেও তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে ইমিশনের মাত্রা বজায় রাখা; পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত বায়ু দূষণ নির্দেশিকার ১৬ নং পৃষ্ঠার ১৯ নং ক্রমে উল্লেখিত কম সালফারযুক্ত (৫০ পিপিএম) ডিজেল আমদানি ও ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং সকল কয়লা, তেল ও গ্যাস ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্লাান্টকে পূর্বের মত লাল শ্রেণীভুক্ত রাখার জন্য জোর দাবি জানান।

অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, বায়ু ও পরিবেশ ধ্বংসের জন্য কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, আমলা ও মন্ত্রী-এমপি দায়ী। তাদের মুনাফার জন্য দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তারা যেন দেশের পরিবেশ ও অর্থনীতি ধ্বংসকারী কোন প্রার্থীকে নমিনেশন না দেয়; এবং দেশের জনসাধারণকে এসকল ব্যক্তিকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানান।

ড. এম. শহীদুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ, নদী, বায়ু, শব্দ, দৃষ্টিসহ সকল দূষণে দেশের মানুষ জর্জরিত। পলিসি মেকারদের মধ্যে বিবেক দূষণের কারণে দেশের সকল দূষণ বলে তিনি মনে করেন। অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে মুনাফাখোরীরা দেশের মানুষকে বায়ু দূষণের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে মেরে ফেলছে। তিনি আরো বলেন, আমরা পলিউটার পে পলিসি চাই না। নো পলিউটার পলিসি চাই।

আলমগীর কবির বলেন, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণ কাজের ফলে ঢাকার দূষণ বেশি হচ্ছে এবং এই দূষণ কমানোর জন্য ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করা যেতে পারে। 

গাউস পিয়ারী বলেন, দেশের দূষণ নিয়ন্ত্রনের যায়গাতে বেশি দুর্বলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দূষণকারিদের বিরুদ্ধে যথাযত আইন প্রয়োগের কোন উদ্যোগ নেই বলে মনে করেন। ঢাকা শহরের মত আর অন্য কোন শহর যেন নতুন করে দূষণের শিকার না হয় সেবিষয়ে সরকারকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান।

শেয়ার করুন