২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৭:৫৪:৫৮ পূর্বাহ্ন


বাংলাদেশে আনুমানিক ৩৫.৫ মিলিয়ন শিশু সীসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-১০-২০২৩
বাংলাদেশে আনুমানিক ৩৫.৫ মিলিয়ন শিশু সীসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত


“আন্তর্জাতিক সীসা বিষাক্ততা প্রতিরোধ সপ্তাহে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে সীসার বিষক্রিয়া একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে, যা শিশুদের মারাত্বক স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে আনুমানিক ৩৫.৫ মিলিয়ন শিশু সীসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত। প্রতি বছর প্রায় ৩১,০০০ জনের মৃত্যু হয়ে থাকে যা জাতীয় মৃত্যুর ৩.৬ শতাংশ (আইএইচএমই ২০১৯)। এই উদ্বেগজনক সংকটের প্রতিক্রিয়ায়, ‘এন্ড চাইল্ডহুড লেড পয়জনিং’ বিষয়বস্তুকে উদ্দেশ্য করে ১১তম আন্তর্জাতিক লেড পয়জনিং প্রিভেনশন উইক (আইএলপিপিডব্লিউ) উদযাপনের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে একটি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডো, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সহযোগিতায় এবং ডিজিএইচএস, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআর’বি, আইইডিসিআর এবং আইপেনের সহায়তায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

২০১২ সাল থেকে প্রতি বছর, এসডো আন্তর্জাতিক সীসা বিষাক্ততা প্রতিরোধ সপ্তাহ (২২-২৮ অক্টোবর) উদযাপন করে আসছে। সীসার বিষাক্ততার মারাত্মক সমস্যা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো এবং মানব স্বাস্থ্য, বিশেষ করে শিশুদের শরীরে সীসার বিষাক্ততার বিরূপ প্রভাব নিয়ে জনসাধারণকে জানানোই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। এরই ধারাবাহিকতায় এসডো, তরুণ সমাজকে এই সমস্যা সমাধানে উদ্বুদ্ধ করতে এবং ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।   

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শিশুদের সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশ করে। এটি তরুণ শিল্পীদের সীসার বিষাক্ততার বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে এবং বুঝতে সাহায্য করে। প্রতিযোগিতা শেষে বিচারকদের একটি বিশিষ্ট প্যানেল বাছাই প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা এবং দক্ষতা নিশ্চিত এর মাধ্যমে, ১০০ জন প্রতিযোগীর কাজ মূল্যায়ন করে। বিচারকদের একটি প্যানেল সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় বস্তুনিষ্ঠতা এবং দক্ষতাসহ নিশ্চয়তা দিয়ে জমা দেওয়া বিষয়গুলির মূল্যায়ন করে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজির লিটন বলেন, “এসডো এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সীসাযুক্ত রং নিষিদ্ধ করার একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে এবং এটি করার মাধ্যমে তারা শুধুমাত্র সৃজনশীলতাকে বিকাশ করছে না বরং সীসার বিষক্রিয়া এবং এর মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতাও বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায় এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি করে।”

ড. মোঃ মুসা বাকের, আইসিডিডিআর, বি-এর গবেষণা তদন্তকারী বলেন, "সীসার বিষক্রিয়ার ফলে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা যায়, যার মধ্যে রয়েছে আচরণগত সমস্যা, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, পেটে ব্যথা, মাথাব্যথা এবং রক্ত স্বল্পতা।"

বাংলাদেশ ইউনিসেফের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, প্রিসিলা ওয়াবিল বলেন, “আমাদের শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ এবং তাদের সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য সীসার বিষক্রিয়ার সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে এবং সীসার বিষাক্ততার সমাধান করার লক্ষ্যে সবাইকে একসাথে জনসচেতনেতা বৃদ্ধি করতে হবে।”

এসডোর এই উদ্যোগটি প্রভাবশালী সংস্থাগুলির সমর্থন অর্জন করেছে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআর, বি, এবং আইপেন সীসার বিষক্রিয়ার সমস্যা সমাধানে এই উদ্যোগের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেছে।  

এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডো একটি অলাভজনক সংস্থা, যা পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৮ সাল থেকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে, এসডো সীসাযুক্ত রং এবং সীসাযুক্ত পণ্য ব্যবহার নির্মূল করতে এবং সীসার বিষক্রিয়া সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে এসডো সবসময় এগিয়ে। এসডোর এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হল সীসাযুক্ত রঙের ব্যবহার বন্ধের জন্য আইন প্রণয়ন এবং যথাযথ প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন সংস্থার সমর্থন এবং সহযোগিতা অর্জন।




শেয়ার করুন