০৬ মে ২০১২, সোমবার, ০৭:০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন


তফসিল ঘোষণার পরও ঝড়ের পূর্বাভাস
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-১১-২০২৩
তফসিল ঘোষণার পরও ঝড়ের পূর্বাভাস


দেশের রাজনীতির একটু আধটুও যারা খবর রাখেন, তাদের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে দুশ্চিন্তা! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা কেন চুপ? তাহলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক দাবার গুটির চালে সব কুপোকাত। এক তফসিল ঘোষণায় দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে যে বাক্যবিনিময় ওইসব দেশের শীর্ষ ব্যাক্তিবর্গের অনর্গল ওগুলো সব ঠান্ডা? এ নিয়ে এখন ব্যাপক আলোচনা। কেউ বলছেন, আমেরিকা ইউরোপ আর কী করবে- ভারত যা চাইবে বাংলাদেশে তাই হবে। ভারতের চাওয়ার উপর দিয়ে কারোর প্রত্যাশা ধোপে টিকবে? হয়তো ভারত বলে দিয়েছে বাংলাদেশ নিয়ে কারোর মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই।’ আবার কারোর মত, ‘মার্কিনীরা ২০১৪ ও ২০১৮ সনের মত তো আর দূতাবাসকেন্দ্রিক ছিলেন না এবার। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্নস্তরের বহু প্রভাবশালী ব্যাক্তিজন বাংলাদেশে এসেছেন। ডেকে নিয়ে গেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশাসনের লোকজন। এর বাইরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়াও এসব গ্রুপে। তাহলে এক ভারতে কী সবাই চুপ হয়ে যেতে পারে? ভারত এতসব দেশের উপর এভাবে কতৃত্ব করতে কী সক্ষম?’ কারো মুখে- শেখ হাসিনা বন্দনা। ‘শেখ হাসিনা এমনই এক বিশ্ব নেতা, যিনি সবকিছুই ম্যানেজ করতে সক্ষম। তার প্রভাব অনেক।’ 

বাংলাদেশ এখন পশ্চিমমুখী 

বাংলাদেশের মানুষ এখন পশ্চিমমুখী। এ যেন অজানা এক আতংক সর্বত্র ছেয়ে গেছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্যপট। এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, ওয়ান ইলেভেন, ২০১৩ ও ২০১৮ সনের জাতীয় নির্বাচনের আগেও ছিল উৎকণ্ঠা। কিন্তু এবারেরটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এর মূল কারণ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক প্রত্যাশার যে দাবি সেই বছরখানেক আগ থেকে সেটা। আর ওই প্রত্যাশা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মিত্ররা কি তাহলে সত্যিই পিছু হটেছেন। 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার সক্ষমতা বাংলাদেশের কোনো দলেরই নেই। বিএনপিসহ সব দল এক হয়ে আন্দোলন, কঠোরতর আন্দোলন করলেও নয়। এ বিশ্বাস সাধারণ মানুষের। ফলে মার্কিন ও তাদের মিত্রদের বিভিন্ন উদ্যোগকে দেশের একটি অংশ মানুষ অগত্যা সাপোর্ট দিয়ে আসছেন। 

আসলে তফসিল ঘোষনার পরের দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ওয়াশিংটনে ফিরে গেছেন। এরপর থেকেই সব ধরনের আলোচনা, জল্পনা কল্পনা স্তিমিত হয়ে গেছে। এখন চলছে নির্বাচনের প্রস্তুতি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে তাদের মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে। এবার বাছাই করবে। এরই সঙ্গে সমমনা দলও খুঁজছে তারা। বহুদিনের সঙ্গী জাতীয় পার্টি এক পা দিয়েই রয়েছে নির্বাচনে। অন্য পা ফেলতে তাকাচ্ছে পশ্চিমাকাশে। ওইখান থেকে যদি কোনো নির্দেশনা চলেই আসে তাহলে তো পিছিয়ে পড়তে হবে। জাতীয় পার্টির ক্ষমতার বাইরে থাকার দল নয়। ক্ষমতাঘেষে থাকবেনই তারা সেটা যেভাবেই হোক। অন্য দলসমূহের মধ্যেও নির্বাচনে যাওয়ার প্রস্তুতি। যদিও এদের অনেকেই আগেও মহাজোটের সদস্য। 

তবে বিএনপির মিত্র যারা রয়েছেন, তারা এ থেকে দূরে এবং মনযোগী সরকার বিরোধী আন্দোলনে। যদিও সরকার এখন রয়েছেন এক রুটিন দায়িত্বে। সব করছেন নির্বাচন কমিশন। সংবিধান অনুসারে সরকারে থাকা মন্ত্রীরা আছেন শুধুই রুটিন কাজগুলো করে দেশকে এগিয়ে রাখতে। তবে রাজনীতির মাঠের এমন গুমট আবহাওয়া নিয়ে অনেকেই শঙ্কায়। 

নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ 

এ ব্যাপারে সম্প্রতি কথা বলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, জনিপপ চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ। গত ১৯ নভেম্বর ইউটিউব চ্যানেলে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘মার্কিন যে রিজলভ, সেটা ইউনিক- তারা হারতে জানে না। কখনও পিছপা হতে জানে না। র‌্যাম্বো একটা কালচার আছে তাদের মধ্যে। সুতারাং তারা হয়তো টেকনিক্যালি সাইলেন্ট থাকতে পারে। বাট তারা যে লক্ষ্যে পরিকল্পনা করেছে, ধাবিত হতে সেটাতে তারা যাবেই। কেউ তাদের আটকাতে পারবে না।’ 

প্রশ্ন ছিল এ যে নিশ্চুপ থাকা, এটার কারণ কী? উত্তরে নাজমুল হাসান কলিম উল্লাহ বলেন, ‘আমি বলবো এটা ঝড়ের পূর্ব লক্ষণ। লাল পিরিয়ড। এখানে যে অবস্থানটি বিরাজ করছে, সেটা নির্ভর করবে শাসক দলের চেঞ্জিং মাইন্ডসেটআপের উপরে। দেশের যে বিরোধী দলগুলো রয়েছে তাদের স্ট্যান্ডের উপর। তাছাড়া মার্কিনী প্রশাসন এবং তাদের যে মিত্র ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের ট্যাকনিক্যাল পজিশন তার উপর। আসলে এটা তো একটা অসম লড়াই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর সেরা শক্তি। বাংলাদেশ বহুদিক থেকে একটি ছোট দেশ। যা হোক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টেক্কা দেয়ার আমাদের সুযোগ নেই।’

মার্কিন এ প্রভাবের ক্ষেত্রে ভারত তো চুপ থাকবে না, রাশিয়াও তো চুপ থাকবে না, তাদেরও তো করণীয় থাকবে- এ ব্যাপারটা প্রসঙ্গে নাজমুল হাসান বলেন, ‘দেখুন টিল টু ডেট এ বিশ্বে আমেরিকার সঙ্গে কেউ ম্যাস করছে না। আমেরিকা ইজ গ্রেট। এবং একমাত্র সুপার পাওয়ার। ইন্ডিয়ার রিজওনাল পাওয়ার, চায়না সুপার পাওয়ার বাট, মার্কিন ওই উচ্চতায় এখনও কেউ পৌঁছাতে পারেনি। রাশিয়া ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। একটা সময় ছিল পৃথিবীটা ছিল বাই পোলার। সে সময় সেয়ানে সেয়ানে যুদ্ধ হতো। এখন সে সুযোগটা আর নেই।’

রাশিয়া বাংলাদেশের নির্বাচন মনিটরিং করছে কি না এমন এক প্রশ্নের উত্তরে কলিম উল্লাহ বলেন, ‘ট্রেডিশনালী রাশান ডেমোক্রেসি তো নতুন। তারা মূলত ওয়ান পার্টি স্টেড। চায়নাও তাই। সুতারাং এখানে তাহলে হালে পানি পাওয়ার খুব একটা সুযোগ আছে বলে মনে হয়না।’

ভারত কী করতে পারে বলে ধারণা চাওয়া হলে কলিম উল্লাহ বলেন, ‘ভারত তো তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ যা চায় সেটাও তাদের প্রত্যাশা। তারা ইনফেস বা প্রকাশ্যে কিছু করবে বলে মনে হচ্ছে না।’ 

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন হয়ে যাবে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে এমনটা মনে হয় না। ওই গল্পের মত যে তুই পড়াশুনা করলেও পাস করবি না। পাস করলেও চাকরি পাবি না, চাকরি পেলেও বেতন পাবি না- এমন তো- আসলে অমন পরিস্থিতি না। কারণ ২০১৪ ও ২০১৮ সনে যা হয়েছে, এবার সেটা হবে বলে মনে হয় না। এবার ২০২৪। ২০২৪ হবে ’২৪ এর মতই। হয়তো নতুন কোনো ইতিহাস হবে। তাছাড়া যে অতীতে পরিস্থিতিতে আমরা ছিলাম। এখন সে পরিস্থিতি এখন আর নেই। কম্বোডিয়ার রেফারেন্সটা এখানে রয়েছে। নির্বাচন হয়েছে। জয়লাভ করেছে। কিন্তু নির্বাচনের তিন দিনের মাথায় ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হয়েছে। বা ভিন্ন দৃষ্টান্তও খুঁজে পাওয়া যাবে। তবে বিষয়টা হলো এই বাংলাদেশের রাষ্ট্রচরিত্রের সঙ্গে অন দেশের রাষ্ট্রচরিত্রের কোনো মিল নেই। সো আমাদের ইউনিক একটা সেটিং। আমাদের চারদিকে ভারত। একটা প্রান্তে ছোট্ট একটা সীমান্ত স্থল ও জল সীমান্ত মিয়ানমারের সঙ্গে। আমার মিয়ানমার আমাদের পাশে আছে বলেই আমাদের স্টেট গুরুত্ব অনেকটা বেড়ে গেছে। মার্কিনীরা জানেন বার্মা অ্যাক্ট প্রণয়ন করেছে। প্রচুর রিসোর্স অ্যালোকেড করা আছে। যেহেতু আমরা ফ্রন্ট লাইন স্টেড, সে কারণে আমাদের গুরুত্ব আকাশচুম্বি। এবং মিয়ানমারের কারণেই আমাদের গুরুত্ব অন্য হাইটে চলে গেছে, সেটা হয়তো আমাদের অনেকেই সেটা অনুধাবন করতে পারছি না।’ 

স্টেট ডিপার্টমেন্টের বক্তব্য 

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন যেনো জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী হয় সে লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

গত ২০ নভেম্বর সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আরেকটি একতরফা নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপ আহ্বান প্রত্যাখান প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে দেশটির অবস্থান নিয়ে এই মন্তব্য করেন ম্যাথু মিলার। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই মুখপাত্র জানান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাবে এবং একইসঙ্গে আহবান জানাবে তারা যেনো জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করে।

নির্বাচন ছাড়াও বাংলাদেশে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন এবং তাতে সরকারের সহিংস পন্থায় দমন প্রসঙ্গও উত্থাপিত হয়। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রম নীতির কথা তুলে ধরে মিলার দেশটির শক্ত অবস্থানের কথা জানান দেন। তিনি বলেন, শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলোর কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের চলমান নিপীড়নে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। 

মিলার বলেন, কোনো ধরনের সহিসংতা, প্রতিশোধপরায়ণতা এবং ভীতি প্রদর্শন ছাড়াই শ্রমিকরা যাতে স্বাধীনভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং মালিকপক্ষের সঙ্গে নিজেদের দাবি তুলে ধরতে পারে সেই অধিকার সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। 

বাংলাদেশে বেতন বৃদ্ধির বিক্ষোভে পোশাক শ্রমিক নিহত হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন শ্রম নীতি প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ব্রিফ্রিংয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘গত সপ্তাহে দেয়া বক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে বুঝা যায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারের সুরক্ষা এবং প্রসারে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বিশ্বজুড়ে সরকার, শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ এবং প্রাইভেট সেক্টরের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত রেখেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় যুক্তরাষ্ট্র তার এই তৎপরতা অব্যাহত রাখবে। প্রশ্নের উত্তরের জন্য আমি আপনাকে আবারও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পুরো বিবৃতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করবো।’

বাংলাদেশে শ্রমিকদের বিক্ষোভে প্রাণহানি এবং সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে এই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে সহিসংতা, শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়নের বৈধ কার্যক্রমকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার বিষয়গুলোতে আমরা নিন্দা জানাচ্ছি। বাংলাদেশে শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনগুলোর ওপর চলমান নিপীড়নেও উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এক্ষেত্রে আমাদের মূলনীতি হল, যেমনটা এর আগেও বলেছি - কোনো ধরনের সহিসংতা, প্রতিশোধপরায়ণতা এবং ভীতি প্রদর্শন ছাড়াই শ্রমিকরা যাতে স্বাধীনভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং মালিকপক্ষের সঙ্গে নিজেদের দাবি তুলে ধরতে পারে সেই অধিকার সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’

বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব জায়গায় এই মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে উল্লেখ করেন মিলার। ব্রিফিংয়ে আগামী নির্বাচন ইস্যুতে বাংলাদেশে চলমান সংকট এবং বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি বাহিনীর নিপীড়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে করা এক পশ্নের উত্তরে মিলার বলেন, ‘আপনি ঠিক বলেছেন। আমরা এক দলের ওপর অন্য দলকে প্রাধান্য দেইনা। বাংলাদেশের জনগণ যেমন চায় শান্তিপূর্ণ উপায়ে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হোক আমরাও তেমনটাই চাই।’ তিনি আরো বলেন, ‘সরকার, বিরোধীদল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে। এই লক্ষ্য অর্জনে তাদেরকে আহবান জানাবো তারা যেনো বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা পূরণে একসঙ্গে কাজ করে, যাতে করে শান্তিপূর্ণভাবে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান হতে পারে।’ বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলেও মন্তব্য করেন এই মুখপাত্র। 

সবশেষ

বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই শান্তিপ্রিয়। এদেশে সকল সমস্যা নিজেরাই মিটাতে চান খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে। কিন্তু সেটা হয়ে উঠছে না নানা কারণে। বিএনপি সম্ভবত এসকল বিষয় চিন্তা করেই সূচনা করেছিল অহিংস আন্দোলন। ওই পর্বে রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে মোমবাতি প্রজ্জলনও করেছেন তারা। কিন্তু গত ২৮ অক্টোবর তেমনই অহিংস এক মহাসমাবেশ উত্তপ্ত হয় নানা কারণে। সে থেকে বিএনপি চলে গেছে অবরোধ হরতালে। মানুষ এগুলো পছন্দ না করলেও একে সাপোর্ট দিচ্ছে অনেকেই। কারণ দেশের বিরাজমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিসহ নানা সমস্যা। কিন্তু এভাবে সমাধান হবে না সেটা সবারই জানা। কিন্তু কিভাবে আসবে সমাধান সেটা কেউই জানেন না। তাহলে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা কী এসে দুই পক্ষকে দমন করে এক টেবিলে বসাবেন? ইতিমধ্যে তাদের আহ্বান করা শর্তহীন সংলাপ ইতিমধ্যে প্রত্যাখান করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাই বলে মার্কিনীরা থেমে গেছে তা ভাববার সুযোগ নেই। কে জানে হয়তো আবারও হতেও পারে সংলাপ আলাপ। বা নাও হতে পারে। কী হবে সে দুশ্চিন্তা সর্বত্র। তবে পরিস্থিতি গভীর মনযোগ দিয়ে অবলোকন করছেন সকলেই, এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

শেয়ার করুন