২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ১১:২৫:৩৭ পূর্বাহ্ন


সরকারি দলের ‘হেলমেট’ বাহিনী ককটেল নিক্ষেপ করেছে : আফরোজা
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-১১-২০২৩
সরকারি দলের ‘হেলমেট’ বাহিনী ককটেল নিক্ষেপ করেছে : আফরোজা আফরোজা আব্বাস


গত ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে মির্জা আব্বাসের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায় সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা ‘হেলমেট’ বাহিনী জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস। মঙ্গলবার সকালের ঘটনার পর শাহজাহানপুরের বাসায় গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই অভিযোগ করেন।

আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনলাম। আমি ঘরে ছিলাম। দারোয়ানকে ফোন করলাম। সে বললো, কালো পোষাক ও হেলমেট পরে দুজন হামলা করেছে। তারা একই মোটরসাইকেলে ছিল। বিস্ফোরণের পর সে (দারোয়ান) দেখলো যে, ওরা পালিয়ে যাচ্ছে। ওই সময়ে বাসার বাইরে পুলিশের তিন থেকে চারটি মোটরসাইকেল ছিল। তাদেরকে বললো আপনারা একটু ধরেন ওরা পালিয়ে যাচ্ছে, একটু হেলফ করেন। পুলিশ সেটা করলো না। তারা ওদেরকে স্কট দিয়ে পালিয়ে যেতে সহায়তা করল।’ শাহজাহানপুরের বাসায় নিরাপত্তায় থাকা কর্মীরা জানান, সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে বাসার ভেতরে দুইটি ককটেল ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয় এবং আরেকটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় থাকে। পরে পুলিশ এসে অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘আমরা এখানে এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে আছি। পুলিশ যখন বাসায় আসলো তখন তাদেরকে বললাম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। বার বার এরকম অবস্থা হচ্ছে বাসার ভেতরে, বিভিন্ন সময়ে ইটপাটকেল মারছে, জোরে জোরে গেইটে ধাক্কা দিচ্ছে, আমাদের অন্য যে বাড়ি আছে সেখানে এরকম করছে আজকে যে ভাবে ওরা মারলো সেটাতে ওই সময় যদি থাকতাম অথবা আমার নাতি-নাতনি থাকতো তাদের গায়েও লাগতে পারতো। আমার স্টাফরা তাদের গায়েও লাগতে পারতো যে কেউ মারা যেতে পারতো।’ তিনি বলেন, ‘ওরা (পুলিশ) শুধু বলে যে, ছাত্রদল-যুবদল করছে দেখেন যে, আব্বাস (মির্জা আব্বাস) জেলে, বাসার মধ্যে আমি বাসার মধ্যে এরকম এর আগেও করেছে ওরা, এখনো করছে এরকম একটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি আরকি। আমি আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে, দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই। যেভাবে ওরা তান্ডব করছে সেটা তারা বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে এটা থেকে আমরা নিস্তার চাই।’ মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, আমরা এর কেনো দিনও সুষ্ঠু বিচার পাইনি। আজকে পুলিশ যখন আসলো আমি বললাম দেখেন আপনারা ছাড়া ওদের আছে কে? ওদের যদি সাহস থাকে মির্জা আব্বাসের বাসায় হামলা করবে আসুক না- আমরা তো আছি। আমাদের কারো কাছে তো কোনো অস্ত্র নেই। আমরা মানসিকভাবে ওদেরকে মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। ওদের তো প্রশ্রয় দিচ্ছেন আপনারা (পুলিশ), আপনারা হেলপ করছেন। সামনে থাকেন আপনারা, পেছনে থাকেন আপনারা ওরা এসে একটা অঘটন ঘটিয়ে চলে যায়। এরকম করে কত নিরহ প্রাণ চলে যাচ্ছে। এটা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। দেশ তো আমাদের, এটা কারো একার দেশ না। দেশের জন্য যদি কথা বলি, প্রতিবাদ করি সেটার জন্য ধরে নিয়ে যাবে, তুলে নিয়ে যাবে কিভাবে নির্যাতনগুলো করছে দেখেন-এই যে ছেলেপেলেরা করল-এরা অবশ্যই সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা করছে এবং প্রশাসসেনর সহায়তায়। এদের কি বিচার হবে? এদের বিচার হবে না তো। তিনি বলেন, এরা নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়াবে, লেখাপড়া করে না তো। এরা সন্ত্রাস সন্ত্রাস করে করে মানুষকে ঠকাবে, এরা মানুষের জীবন নিয়ে খেলে। আমি গণমাধ্যমের কাছে সহযোগিতা চাই। আমরা তখা এদেশের মানুষ যেন পরিবার নিয়ে নিরাপদে তাদের বাসা-বাড়িতে বসবাস করতে পারে।

আফরোজা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, ২০ নভেম্বর সোমবার সারা রাত আমার বাসার আশপাশে ছাত্রলীগ-যুবলীগের লোকজন ঘোরাঘুরি করেছে। তারা সাংবাদিক পরিচয়ে ঘোরাফেরা করেছে। আমাদের বাসায় চারদিকে সিসি ক্যামেরা আছে, বাসায়ও আছে, রাস্তায়ও আছে। এটার (এই ঘটনার) জন্য হয়তো দেখবেন আমাদের ছেলেদের (ছাত্রদল-যুব দল) দোষারোপ করা হবে। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় শাহজাহানপুর থানায় করা মামলায় ৩১ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন মির্জা আব্বাস। তিনি এখন কেরানীগঞ্জ কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

শেয়ার করুন