২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ১০:৩৯:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


ইমিগ্রেশন কোর্টে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া বিঘ্ন হচ্ছে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৯-২০২২
ইমিগ্রেশন কোর্টে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া বিঘ্ন হচ্ছে


ইমিগ্রেশন কোর্টে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার (due process of law) যে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, তা বর্ণনা করা সহজ নয়। ইমিগ্রেশন পর্যালোচনায় নির্বাহী কার্যালয়ে (ইওআইআর) যে প্রকার সমস্যা বিরাজমান তার ব্যাপকতা নিয়ে বলাটাও সাধ্যের বাইরে। সহজভাবে বলতে গেলে এজেন্সি আবেদনকারীকে কোনো প্রকার নোটিশ না দিয়ে ইমিগ্রেশন কোর্ট মামলার শুনানি নির্ধারণ করছে। অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অ্যাটর্নিকে এই নোটিশ দেয়া হচ্ছে বা আদতে কোনো প্রকার ইনফরমেশন দেয়া হচ্ছে না বা অ্যাটর্নিরা অ্যাসাইলাম আবেদনকারীদের প্রতি তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না। এতে একদিকে অ্যাসাইলাম আবেদনকারীরা তাদের রক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারছে ন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অ্যাটর্নিরা তাদের স্থান পরিবর্তন করেছে বা আবেদনকারীদের স্থান পরিবর্তন যথাযথভাবে বদলানো হয়নি সিস্টেমে। অ্যাটর্নিরা বিভিন্নভাবে তাদের মত প্রকাশ করছে এই মর্মে যে, হাজার হাজার মামলার নোটিশ তারা পাচ্ছে না। আর তারাই তারিখে অর্থাৎ পরিবর্তিত তারিখে মামলায় হাজির থাকতে পারবে কিনা? বা তাদের মামলা সম্পন্ন করার সময় আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে আবেদনকারীরাই ভুক্তভোগী।

প্রথমত মনে হচ্ছে, এটা তারিখ নির্ধারণের সমস্যা, কিন্তু কার্যত তা নয়। এটা দুষ্টচক্রের অভূতপূর্ব পন্থায় ইমিগ্র্যান্ট, তাদের অ্যাটর্নি কিংবা আবেদন প্রস্তুতকারীদের ওপর একধরনের আঘাত এবং আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ার বরখেলাপ। সম্ভবত বর্তমান অবস্থা দেখে অ্যাসাইলামিস্ট পত্রিকায় ট্রাম্পের ইমিগ্রেশনবিষয়ক উপদেষ্টা স্টিফেন মিলারের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয় ‘কোনো নোটিশ না দিয়ে শুনানি এগিয়ে আনা এবং প্রস্তুতির কোনো সময় না দিয়ে শুনানির তারিখ ধার্য করার বিষয়টি আমি কেন ভাবিনি?’

ইমিগ্রেশন কোর্টে আবেদনকারীর কথা দূরে থাক কোনো অ্যাটর্নি নির্ধারিত তারিখে উপস্থিত থাকতে পারবে কিনা তা জানারও প্রয়োজন মনে করেনি। অন্যদিকে আবার দেখা যাচ্ছে, ইমিগ্রেশন কোর্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শুনানি পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে। কবে শুনানি হবে তার ইয়ত্তা নেই। স্বদেশে যেখানে আবেদনকারীদের ওপর জীবনের হুমকি রয়েছে বা তাদের পরিবার-পরিজন সমস্যায় জীবন কাটাচ্ছে, শত্রুপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে, তাদের শুনানি পিছিয়ে নিয়ে তাদের পরিবারদের অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। একদিকে কোনো কথা না জানিয়ে তারিখ নির্ধারণ, অন্যদিকে নির্ধারিত তারিখ পিছিয়ে দিয়ে ইউআইআর যথাযথ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে। এ সমস্যা সর্বত্র চলছে- নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, কলরাডো, ম্যারিল্যান্ড, ভার্জিনিয়াসহ বিভিন্ন স্টেটে যেখানে ইমিগ্র্যান্টদের  অবস্থান বেশি। এখন সীমান্ত অঞ্চল থেকে ইমিগ্র্যান্টদের বিভিন্ন ইমিগ্র্যান্টবান্ধব নগরীতে টেক্সাস ও ফ্লোরিডা থেকে ইমিগ্র্যান্ট ঠেলে দিয়ে বিষয়টাকে আরো জটিল করে তোলা হচ্ছে। অনেক আবেদন প্রস্তুতকারী ৫০টি থেকে ৬০টি আবেদন পেশ করেছে বিভিন্ন আবেদনকারীর পক্ষ থেকে। অনেকজনের কোনো নির্ধারিত দিন নেই। আবার অনেক জনের শুনানি ২০২২ সাল থেকে সরিয়ে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে করা হেেয়ছে। এক আইনজ্ঞ বলেছেন, এক সপ্তাহে আবার ৭টি মামলার শুনানি নির্ধারণ করা হয়েছে, আবার এক মাসে ৪৭টি মামলার তারিখ দেয়া হয়েছে। অনেক আবেদনকারী দিন-তারিখ পাচ্ছে না বা তাদের তারিখ পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে আত্মহত্যার মতো জঘন্য পরিণতির কথাও ভাবছেন বলে কোনো কোনো অ্যাটর্নি জানিয়েছেন। অনেক অ্যাটর্নি, যারা পোর্টাল পেজে গিয়ে মামলায় তারিখ দেখতে পারেন, তারা তারিখ দেখে সে মামলা প্রস্তুতকরণ কিংবা প্রস্তুতির জন্য অ্যাসাইলাম আবেদনকারীর সাথে যোগাযোগ করার সময়ই পাচ্ছে না। আর সে রকম পর্যাপ্ত সময় না দিয়েই তারিখ নির্ধারণ করা হচ্ছে! অবশ্যই যখন তারিখ পিছানো হয়, তখন বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষা করার পর আবেদনকারী যখন অনেকটা আশা করছেন তার মামলার শুনানি হবে, তখনই তা পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে, যা অনেকের কাছে মৃত্যুসম যন্ত্রণা নিয়ে আসে। শুনানির অন্তত ৬ সপ্তাহ আগে তারিখ সম্পর্কে জানানো উচিত, যাতে আবেদনকারীকে সমসমায়িক অ্যাভিডেন্স আনার সুযোগ দেয় যায়। একটা সে কোন মামলার প্রস্তুতিতে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ ঘণ্টা সময় লাগে। যদি তা যথাযথভাবে তৈরি করতে হয়। অনেক সময় অ্যাটর্নিরা তাদের সাথে যারা প্যারালিগ্যাল হয়ে কাজ করে তাদের উপর নির্ভর করে মামলা প্রস্তুতিতে। কিন্তু তাদের আরো বেশি সময় লাগে। ট্রাম্পের আমলে এ কাজ হলে ভালো ছিল আর এখন এধরনের কাজ নেহায়েত সমস্যাসঙ্কুল। 

শেয়ার করুন