২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৯:৫৩:৫৩ পূর্বাহ্ন


গাদ্দাফিতে রীতিমত বিধ্বস্ত সাকিবরা
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৯-২০২৩
গাদ্দাফিতে রীতিমত বিধ্বস্ত সাকিবরা হারিস রউফের পেসে বোল্ড তৌহিদ রিদয়। বাংলাদেশের ব্যাটিং পাকিস্তানের পেসেইর ডুবেছে/ছবি সংগৃহীত


পাকিস্তানী বাহিনীর তোপে বাংলাদেশের অসহায় আত্মসমর্পণ
সালেক সুফী
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের দুর্দান্ত পেস বোলিং আক্রমণের মোকাবিলায় দুমড়ে মুচড়ে বিনা লড়াইয়ে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করলো বাংলাদেশ টাইগার বাহিনী। নিস্প্রান উইকেটেও গতির ঝড় তুলে হারিস রউফ ( ৪/১৯) , নাসিম শাহ ( ৩/২৪ ) ,শাহীন আফ্রিদি (১/৪২ ) ফাহিম আশরাফ (১/২৭) ৩৮.৪ ওভারেই ১৯৩ রানে গুটিয়ে দিয়েছিলো বাংলাদেশকে। মামুলি এই টার্গেট প্রতিরক্ষা করা বাংলাদেশ বোলিং স্কোয়াডের জন্য সাদ্ধ এবং সামর্থের অতিরিক্ত। ইমাম উল হক (৭৮) এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান (৬৩*) হেসে খেলেই পৌঁছে দিলো দলকে লক্ষ্ মঞ্জিলে ৩৯.৩ ওভারে ৬৬ বল হাতে রেখে। বাংলাদেশ আহত, লজ্জিত এবং অপমানিত হয়ে ৭ উইকেটে পরাজিত হলো। পাকিস্তান দলকে পাকিস্তানে কোনো ফরম্যাটে পরাজিত করা অধরাই রয়ে গেলো। বাংলাদেশ এখন মুখ রক্ষার জন্য খেলবে শ্রীলঙ্কা এবং ভারতের বিরুদ্ধে নিয়ম রক্ষার জন্য।  এই দল নিয়ে  বার বার বাংলাদেশের স্বপ্ন ভঙ্গ হতেই থাকবে। যতদিন টীম ম্যানেজমেন্ট থেকে নাদানদের, বেশি কথা বলা অর্থবদের সরানো না হবে, ততদিন বাংলাদেশ ক্রিকেটে টেকসই উন্নতি হবে না। শুরুতে ৪৭ রানে চার উইকেট হারানোর পর ১০০ রানের জুটি গড়ে তুলেছিল সাকিব এবং মুশফিক। ১৪৭ রানে সাকিব আত্মাহুতি দেয়ার পর ৪৬ রান যোগ করে ৯ ওভারে ১৯৩ রানে গুটিয়ে গেলো।


পাকিস্তানের উঁচু মানের বোলিং বাংলাদেশ বাটিংয়ের কঙ্কাল বের করে দেখালো। উইকেটে পেস , বাউন্স কিছুই নেই। ব্যাটিং স্বর্গে পাকিস্তানের উঁচু মানের বোলিং মোকাবেলায় মুশফিক, সাকিব ছাড়া কেউ দাঁড়াতেই পারলো না. সাকিব নিজেও উইকেটে সেট হয়ে উইকেট ছুড়ে দিলো। মিডল অর্ডারে রিয়াদের অভাব আবারো প্রকট হয়ে দেখা দিলো।  রিয়াদ থাকলে মুশফিকের সঙ্গে জুটি বেঁধে ৫০ ওভার পর্যন্ত খেললে ২৬০-২৭০ হতে পারতো। আবারো প্রমান হলো শামীম বা আফিফ রিয়াদের বিকল্প হতে পারে না। ৩৪.৪ ওভার থেকে ৩৮.৪ মাত্র ৪ ওভারে বাংলাদেশ ১৯ রানে ৫ উইকেট হারালো। কি অজুহাত আছে সাজানো দলটিকে এমন এলোমেলো করে দেয়ার ?


শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ এবং নাসিম শাহ সবাই ১৪৫+ গতিতে ক্রমাগত গতির ঝড় তুলে প্রতিপক্ষের পরীক্ষা নিয়ে থাকে। কাল ওদের সঙ্গে যোগ করা হয়েছিল পেস বোলিং অল রাউন্ডার ফাহিম আশরাফকে। দলে কিন্তু ব্যাক আপ ফাস্ট বলার আছে ওয়াসিম জুনিয়র। উইকেট যেমনি থাকুক ওরা তিন জন ভিন্ন মাত্রার ফাস্ট বোলারের বিরুদ্ধে মেক শিফট ওপেনার তূরীর সাথে উড়ে যাবে সেটাই স্বাভাবিক।


আগের ম্যাচের মেহেদী মিরাজ শূন্য রানে ফিরে যাবার পর লিটন, নাঈম কিছু স্ট্রোক খেলার পর নিজেদের সংযত করা সমীচীন ছিল। পারেনি ওরা। তাওহীদ হৃদয় এই প্রথম উঁচু মানের পেস আক্রমণের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়াতেই  পারলো না। ৯.১ ওভারে ৪৭ রান করতেই ৪ উইকেট খোয়ালো বাংলাদেশ। ধ্বংস স্তুপে দাঁড়িয়ে ভালো লড়াই করছিলো সাকিব -মুশফিক জুটি। ৫ম উইকেট জুটিতে ১০০ রান যোগ হবার পর ধৈর্য্য হারালো সাকিব। ফাহিম আশরাফের যে বলে উইকেট বিলিয়ে দিলো শাকিব সেটি তখন না করলেও পারতো।  ১৪৭ রানে ৫ম উইকেট হারানোর পর হারিস রউফ এবং নাসিম আক্রমণে ফিরে এসে ভূমি ধস ঘটালো। তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়লো বাংলাদেশ ৪৬ রানে বাংলাদেশের শেষ ৬ উইকেট। 


ব্যাটিং স্বর্গে পাকিস্তানের দুরন্ত ব্যাটিং লাইন আপের বিরুদ্ধে ১৯৪ রানের টার্গেট নিতান্তই মামুলি। অনেকটা হেসে খেলেই ৩৯.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান করে ৭ উইকেটের বিশাল জয় তুলে নিলো পাকিস্তান। ইমাম উল হক (৭৮) এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান অপরাজিত (৬৩) করে ভালো অনুশীলন করলো। তাসকিনের জন্য বাবরের উইকেটটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের বোলারদের করার খুব একটা ছিল না।
জানিনা এহেন শোচনীয় পরাজয়ের কি অজুহাত দিবে টিম ম্যানেজমেন্ট। পাকিস্তান কিন্তু এশিয়া কাপ অর্জনের জন্য দারুন ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে শ্রীলংকা এবং ভারত দলের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই। হয়তো এই দল নিয়ে কিছু স্বপ্ন দেখা এখন অবান্তর।

শেয়ার করুন