২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৭:২৩:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


দেশকে তাসনিয়া ফারিণ
পবিত্র কাজে সমর্থন না থাকলে কিসের ভক্ত
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-১১-২০২৩
পবিত্র কাজে সমর্থন না থাকলে কিসের ভক্ত তাসনিয়া ফারিণ


তাসনিয়া ফারিণ। নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। সমান তালে কাজ করছেন নাটক, ওয়েব ফিল্ম এবং সিনেমায়। ২৩ নভেম্বর মুক্তি পাচ্ছে তার নতুন ওয়েব ফিল্ম। এই ওয়েব ফিল্ম এবং বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির

প্রশ্ন: বিয়ের পর প্রথম সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। কি রকম অনুভূতি হচ্ছে?

তাসনিয়া ফারিণ: যখন কোনো কিছু আপনি পরিশ্রম করে করবেন, সেটার সুন্দর ফলাফলের জন্য একটু টেনশন হবেই। এটা প্রাকৃতিক নিয়ম। এই নিয়মটা আমার বিয়ের কারণে পরিবর্তন হয়ে যাবে না। তাই ছোট করে বলা যেতে পারে আমার অন্য কাজগুলোর মতোই নতুন কাজ। এর চেয়ে বেশি কিছু না। 

প্রশ্ন: সামাজিক মাধ্যমে কি বিয়ের পর আপনার ভক্ত বা অনুসারীর সংখ্যা কমে গেছে?

তাসনিয়া ফারিণ: আমার সেটা মনে হয় না। তাছাড়া আমার জীবনের কোনো সিদ্ধান্ত নেব, ভক্তদের কথা ভাবতে হবে কেন? ভক্তরা আমার পর্দার কাজকে ভালোবাসেন। আমিও তাদের ভালোবাসি। আর প্রিয় তারকার জীবনের ভালো কোনো কাজ, পবিত্র কাজে যদি ভক্তদের সমর্থনই না থাকে, তাহলে কিসের ভক্ত! আমার মনে হয়, বিয়ের পর ভক্ত আরও বেড়েছে। বিয়ের খবর আর ছবি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করার পর সবার যে পরিমাণ সাড়া পেয়েছি, মুগ্ধ আমি।

প্রশ্ন: আপনার নতুন ওয়েব ফিল্ম ‘বাবা, সামওয়ান ফলোয়িং মি’। এর গল্পটা কেমন? 

তাসনিয়া ফারিণ: এক রাতের ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘বাবা, সামওয়ান ফলোয়িং মি’। মূলত বাবা-মেয়ের একটি ঘটনাই উঠে আসবে। এতে আমার চরিত্রের নাম বিজয়া। বিদেশে থাকা অবস্থায় বিজয়া হঠাৎ একরাতে খেয়াল করল, কেউ একজন তাকে অনুসরণ করছে। বিপদের আঁচ পেয়ে সে তার বাবাকে ফোন করে। কীভাবে তার বাবা সাহায্য করবে বা আদৌ সাহায্য করতে পারবে কি না। আসলে সে রাতে কী হয়, আদৌ কেউ অনুসরণ করছিল কি না। করলে কেন করছিল? এসব উত্তর পাওয়া যাবে ২৩ নভেম্বর রাত থেকে। সেদিন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বিঞ্জে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। পরিচালক শিহাব শাহীনের মেয়ে সফেনের সঙ্গে এমন একটা ইনসিডেন্স হয়েছিল। সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই তিনি নির্মাণ করেছেন ফিল্মটি। 

প্রশ্ন: এই ওয়েব ফিল্মে শহীদুজ্জামান সেলিমের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? 

তাসনিয়া ফারিণ: ওনার সঙ্গে আগেও কাজ হয়েছে। তবে এবার একসঙ্গে শুটিং কম হয়েছে। বেশির ভাগ দৃশ্য ছিল ফোনালাপের। আমার বেশির ভাগ শ্যুটিং হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে কোনো দৃশ্য ছিল না। দেশে একদিন শ্যুটিং হয়েছে আমাদের। বরাবরের মতো তাঁর সঙ্গে কাজ করাটা অনেক উপভোগ্য ছিল। তাঁর মতো অভিজ্ঞ অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে কাজ করলে নতুন কিছু শেখা যায়।

প্রশ্ন: শ্যুটিংয়ে যাওয়ার আগে সফেনের সঙ্গে সেই রাতের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা হয়েছিল?

তাসনিয়া ফারিণ: সফেনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তবে এ ব্যাপারে কথা হয়নি। চিত্রনাট্য পড়ে ও নির্মাতার সঙ্গে কথা বলেই চরিত্রটি ধারণের চেষ্টা করেছি। 

প্রশ্ন: আপনিও তো দেশের বাইরে বেড়াতে যান। এমন কোনো বিপদের মুখে পড়েছেন কখনো?

তাসনিয়া ফারিণ: কেউ আমাকে অনুসরণ করছে, এমন ঘটনা ঘটেনি। তবে প্রথমবার লন্ডনে শ্যুটিংয়ে গিয়ে বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ক্যাডমন নামের একটা জায়গায় শ্যুটিং হচ্ছিল। এলাকাটা যে নিরাপদ নয়, সেটি বুঝতে পারিনি। শ্যুটিং শেষে একাই ঘুরতে বেড়িয়েছিলাম। একটি হ্যাটের দোকানে গিয়ে দাম জিজ্ঞাসা করে চলে আসছিলাম। দাম জিজ্ঞাসা করে কেন হ্যাটটি নিলাম না, এ কারণে বিক্রেতা অনেক রেগে যায়। একপর্যায়ে সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়া শুরু করে। আমি যখন বাগ্বিতন্ডায় জড়িয়ে গেলাম, তখন খেয়াল করলাম, সে আমার ছবি তুলছে। বলছে, আমাকে পুলিশে দেবে। আমি জানি না, কেন সে এমন করেছে। বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বলা যায় একপ্রকার দৌঁড়ে সেখান থেকে চলে আসি। এরপর সে এলাকায় একা একা আর বের হইনি। 

প্রশ্ন: এর বাইরে এখন আর কি কাজ করছেন?

তাসনিয়া ফারিণ: শিহাব শাহীনের পরিচালনায় আরেকটি ওয়েব ফিল্মের কাজ শেষ করেছি। নাম ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’। এতে আমার বিপরীতে আছেন প্রীতম হাসান। এটি আগামী বছরের শুরুর দিকে মুক্তি পাবে। এ ছাড়া কাজল আরেফিন অমির ‘অসময়’ ওয়েব ফিল্মের কাজ শেষ করলাম কিছুদিন আগে। সিনেমাটি এ বছরের শেষেই দেখা যাবে।

প্রশ্ন: সম্প্রতি লন্ডন গিয়েছিলেন। শ্যুটিংয়ে, নাকি বেড়াতে?

তাসনিয়া ফারিণ: বেড়াতে গিয়েছিলাম। টানা অনেক দিন শ্যুটিং করার পর লম্বা একটা ছুটি পেয়েছিলাম। ভাবলাম, ছুটি কাজে লাগাই। লন্ডন থেকে সার্বিয়া হয়ে দেশে ফিরেছি। ভালো সময় কেটেছে। 

প্রশ্ন: লন্ডনে চঞ্চল চৌধুরীর ‘পদাতিক’-এর প্রিমিয়ার দেখেছেন। কেমন লাগল পদাতিক ও চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয়?

তাসনিয়া ফারিণ: পদাতিক-এর প্রিমিয়ারের সময় আমি লন্ডনে ছিলাম। তাই প্রথম শো দেখার সুযোগ হয়েছে। চঞ্চল দাদার অভিনয় আর সৃজিত মুখার্জির পরিচালনা-দুটোই খুব ভালো লেগেছে। পদাতিক দেখার পর ফেসবুকে আমার মুগ্ধতার কথা শেয়ার করেছি। মনে হয়েছে, একটি বায়োপিককে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করা হয়েছে। শুধু মৃণাল সেনের জীবন নয়, বরং তাঁর পরিচালনার ধরন, সিনেমা, দর্শন, আদর্শ-সবকিছুর মেলবন্ধন ঘটেছে। এ ছাড়া যাঁরা মৃণাল সেন সম্পর্কে খুব একটা জানেন না, তাঁদের জন্য ভালো সুযোগ হবে পদাতিক।

শেয়ার করুন