০২ মে ২০১২, বৃহস্পতিবার, ১১:৫০:৫১ পূর্বাহ্ন


বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সাধারণ সভা
১ লাখ কবরের স্থান চূড়ান্ত : জুলাই থেকে কার্যক্রম
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০১-২০২৪
১ লাখ কবরের স্থান চূড়ান্ত : জুলাই থেকে কার্যক্রম বক্তব্য রাখছেন জাহিদ মিন্টু


প্রবাসের অন্যতম আদর্শিক সংগঠন বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি। বর্তমানে প্রবাসে যে কয়েকশ আঞ্চলিক সংগঠন রয়েছে তার মধ্যে বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি অন্যতম। এই সংগঠনের সঙ্গে প্রবাসের অন্য কোন সংগঠনের তুলনা চলে না। বলা যায় অপ্রতিরোধ্য এবং অদ্বিতীয়। নেতৃত্বের গুণ এবং সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বন্ধনে বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি যেন একটি পরিবার। বিশ্বাস এবং আস্থায় আটুট এই সংগঠনের নেতৃত্ব। এই নেতৃত্ব যিনি দিচ্ছেন তিনি হচ্ছে বৃহত্তর নোয়াখালীবাসীর গর্ব, মানবতার ফেরিওয়ালা, পরোপকারে দরাজ মনের অধিকারী জাহিদ মিন্টু। অসাধারণ, সৎ নেতৃত্ব এবং মানব কল্যাণে যিনি নিবেদিত তিনিই হচ্ছেন জাহিদ মিন্টু। ২০১৪ সালে জাহিদ মিন্টু এই সংগঠনের সম্পৃক্ত বা নেতৃত্বে রয়েছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন সৎ উদ্দেশ্য এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলে অসম্ভবকেও সম্ভব করা সহজ তা প্রমাণ করেছেন জাহিদ মিন্টু। সত্য, ন্যায়নিষ্ঠা এবং মানব সেবা যদি ব্রতী হয়, তাহলে যে প্রাচীর ডিঙানো সম্ভব। পথ যতো কঠিনই হোক না কেন আল্লাহপাক তাকে মোকামে পৌঁছাবেন। যোগ্য নেতৃত্বের পক্ষেই সম্ভব একটি সংগঠনকে তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে। মানুষের পাশে আছেন বলেই মানুষ তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। যে কোন কাজে বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির নেতৃত্ব এবং মানুষ তার সঙ্গে রয়েছে। মানুষের শক্তিই বড় শক্তি। সেই শক্তির জোরে অনেক বড় বড় কাজ করা যায়। তার সৎ নেতৃত্বের গুণেই তিনি বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষের মন জয় করেছেন। যে কোনো চ্যালেঞ্জে তার পাশে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক, বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারমান হাজি মফিজুর রহমানসহ বর্তমান কার্যকরি কমিটি। জাহিদ মিন্টু বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কিন্তু তাকে ছাড়া যেন এই সংগঠনের বড় কোনো প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। সবাইকে যেন চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকেন জাহিদ মিন্টুর দিকে। তিনি যা বলবেন তা যেন শিরোধার্য-বৃহত্তর নোয়াখালীবাসী তা অকপটে মেনে নেন। তাকে বাদ দিয়ে যেন বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটিকে কল্পনাই করা যায় না। সংগঠনের স্বার্থে তিনি আলোকিত হাত বাড়ালেই, এগিয়ে আসে আরো অনেক আলোকিত হাত। জাহিদ মিন্টুর হাতেই যেন সবাই নিরাপদ, সবার অর্থ নিরাপদ। যে কারণে যখনই সংগঠনের স্বার্থে মানুষের কাছে হাত বাড়িয়েছেন, তখনই তিনি সফল হয়েছেন। মানুষের বিশ্বাস এবং আস্থার জায়গা জাহিদ মিন্টু। যে কারণে সবাই তার আহ্বানে সাড়া দেন। পাশে দাঁড়িয়ে কাজ সহজ করে দেন। স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্বপ্নিল ভূমিকা পালন করেন। এই সংগঠনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২৬ জানুয়ারি কনিআইল্যান্ডের একটি বড় অডিটোরিয়ামে। সেই সাধারণ সভায় বক্তারা প্রকাশ্যে বলেছেন, আমরা জাহিদ মিন্টুকে নিয়ে গর্ববোধ করি। আমরা আরো জাহিদ মিন্টু চাই। পদের প্রতি লোভ নেই বলেই সকলের অনুরোধকে উপেক্ষা করে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে সরে গিয়েছিলেন। তার জন্য সংগঠনের গঠনতন্ত্রও পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি রাজি হননি। বলেছেন, আমি না থাকলেও সংগঠনের স্বার্থে দায়িত্ব পালন করে যাবো। তিনি তার কথা রেখেছেন। এক লাখ কবরের প্রজেক্ট নিয়ে তিনি বৃহত্তর নোয়াখালীবাসীর সামনে হাজির হয়েছেন। প্রজেক্ট নিয়ে কথা বলেছেন সাধারণ সভায়।

সংগঠনের সভাপতি নাজমুল হাসান মানিকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইউছুপ জসীমের পরিচালনায় সাধারণ সভায় মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদ মিন্টু, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল বাশার, সহ-সভাপতি তাজু মিয়া, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হাজি মফিজুর রহমান, সদস্য খোকন মোশাররফ, রফিকুল ইসলাম ভূইয়া, সালামত উল্যাহ, রমেশ চন্দ্র মজুমদার, প্রফেসর করিম, আবু নাসের প্রমুখ।

সাধারণ সভার শুরুতেই কোরআন তেলওয়াত ও দোয়া পরিচালনা করে বেলাল মসজিদের ঈমাম মাওলানা মুফতি আসনারুল করিম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক। সভাপতির বক্তব্যের পরই কোষাধ্যক্ষ মহিউদ্দিন দুই বছরের আর্থির রিপোর্ট পেশ করেন। রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে সংগঠনের ব্যাংক একাউন্টে রয়েছে তিন লাখ ৬ হাজার ৭৫৪.৬৭ ডলার। রিপোর্ট নিয়ে সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেন। সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখেন অডিট কমিটির চেয়ারম্যান শাহ নাসের স্বপন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হেলাল উদ্দিন, মাওলানা জয়নাল, সিএমবিবিএর প্রেসিডেন্ট রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারি, আনোয়ার হোসেন লিটন, কোম্পানীগঞ্জ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সবুজ, জাহাঙ্গীর সরওয়ার্দী, মোস্তাফা কামাল পাশা বাবুল।

জাহিদ মিন্টু বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা প্রথমে ওয়াশিংটন মুসলিম মোমোরিয়ালে ৫০০ কবরের জায়গা ক্রয় করেছিলাম। সেই কবরের পুরো অর্থ আমরা পরিশোধ করি। যা ওই সময়ে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। এখনো সেখানে আমাদের প্রায় ২৫০টির মতো কবর রয়েছে। কিন্তৃ মহামারি করোনার সময় আমরা মানুষের কষ্ট দেখেছি। সেই সময় অবশ্য বাংলাদেশ সোসাইটিসহ কয়েকটি সংগঠন এগিয়ে এসেছিল। তিনি বলেন, আমরা শুধু নোয়াখালীবাসীর কবরের জায়গা নিয়ে চিন্তিত নই, আমরা এখন পুরো বাংলাদেশি কম্যুনিটির কবরের দায়িত্ব নিতে চাই। আমরা ইতিমধ্যেই আপস্টেটে ১২৬ একর জায়গা ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেখানে প্রায় ১ লাখ মানুষের কবরের জায়গার ব্যবস্থা হবে। যদিও আমরা বেশ কয়েকটি জায়গা দেখেছিলাম, কিন্তু পরীক্ষা করার পর বাদ দিয়েছি। এখন আমরা যে জায়গা ক্রয় করছি ব্রুকলিন থেকে সেই জায়গার দূরত্ব ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের মতো। গত ৭ নভেম্বর আমরা এই জায়গার কনট্রাক্ট সাইন করেছি। গত ২২ জানুয়ারি ছিল ঐ শহরের টাউন প্ল্যানিং বোর্ডের সঙ্গে আমাদের বৈঠক। সেই বৈঠকে তারা সম্মত হয়েছে। ইতিমধ্যেই আমরা ডিজাইনার, ইঞ্জিনিয়ারসহ সবাইকে নিয়োগ দিয়েছি। কাগজপত্র পেলেই আমরা মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কাজ শুরু করবো। আশা করি আপনাদের সহযোগিতা পেলে আগামী জুনের মধ্যে আমরা কবর দেওয়ার কাজ শুরু করতে পারবো। ১২৬ একরের জায়গাটি তিনভাবে বিভক্ত। একটি অংশে রয়েছে ৩২ একর। যেখানে ৪০ হাজার মানুষকে কবর দেওয়া যাবে। এই প্রকল্পের আগে আমরা ৫০৫ ম্যাকডোনাল্ড অ্যাভিনিউয়ের ৬ তলার বাড়িটিও ঋণমুক্ত করেছি। আমরা আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ঐ জায়গায় কবর দিতে পারবো। এখন প্রয়োজন অতীতের মত আপনাদের সহযোগিতা। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন এগিয়ে এসেছেন। চুক্তি অনুযায়ী আগামী দুই মাসের মধ্যে আমাদের অর্থ পরিশোধ করতে হবে। আমাদের প্রয়োজন প্রায় ২ মিলিয়ন ডলার। ইতিমধ্যে আমরা হাফ মিলিয়নের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। আশা করি আপনারা এগিয়ে আসবেন।

আব্দুর রব মিয়া বলেন, এটা আমাদের তৃতীয় নয় চতুর্থ প্রকল্প। প্রথম প্রকল্প ছিল প্রথম বাড়ি, দ্বিতীয় প্রকল্প করব, তৃতীয় প্রকল্প দ্বিতীয় পাতি এবং চতুর্থ প্রকল্প হচ্ছে বাংলাদেশ সেমিট্রি এবং ফিউনারেল হোম। আশা এই কাজেও আমরা সফল হবো এবং প্রবাসে নতুন ইতিহাস রচনা করবো। তিনি নোয়াখালী ভবনে ভ্রম্যমান কন্স্যুলেটে সেবা নিয়ে বলেন, আমরা গত সপ্তাহেও কন্স্যুলেট অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। যেখানে জাহিদ মিন্টুও ছিল। তারা আমাদের জানিয়েছে, তারা এখানে কন্স্যুলেট সেবা দেবে না। কে বা কারা অভিযোগ করেছে আমরা নাকি কন্স্যুলেট সেবার নামে অর্থ নিচ্ছি। এই মিথ্যা অভিযোগ আমরা খন্ডানোর চেষ্টা করছি।

হাজী মফিজুর রহমান একজন দুই জন বক্তার বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, (আনোয়ার হোসেন লিটন) যারা কাজ করে তাদের সমালোচনা হয়। কিন্তু যারা কাজ করে না তাদের সমালোচনা হয় না। তাদের কাজই হচ্ছে সুযোগ পেলে সমালোচনা করা। কিন্তু কোন দিন সংগঠনের ফান্ডে কোন অর্থ দেয়নি। ভাল কাজে এগিয়ে আসেননি। এমনকি নিয়তি চাঁদা দিয়ে সদস্য পদও রাখেননি। তিনি বলেন, জাহিদ মিন্টু আমাদের গর্ব। সে আছে বলেই এই কাজগুলো করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে। আমরা আরো জাহিদ মিন্টু চাই।

সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। তবে যারা সদস্য নন, তাদের বক্তব্যের সুযোগ দেওয়ার জন্য অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এবং সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন।

শেয়ার করুন