২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৬:০৩:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


বাংলাদেশ সোসাইটির ইফতারে হাজারো মানুষের উপস্থিতি
কনস্যুলেট ও কনসাল জেনারেলের বিরুদ্ধে সভাপতির অভিযোগ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৩-২০২৪
কনস্যুলেট ও কনসাল জেনারেলের বিরুদ্ধে সভাপতির অভিযোগ বিচারক, আয়োজক এবং অতিথিদের সঙ্গে পুরস্কারপ্রাপ্ত নতুন প্রজন্ম


এককথায় অসাধারণ। চমৎকার। অভূতপূর্ব। পবিত্র রমজান মাস শুরু থেকেই কমিউনিটিকে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে ইফতার মাহফিল বা পার্টি আয়োজন হয়ে আসছে। কিন্তু সব আয়োজনকে ছাড়িয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ সোসাইটির আয়োজন। বাংলাদেশ সোসাইটি যে প্রবাসে মাদার সংগঠন তা তারা প্রমাণ করেছে। হাজারো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ সোসাইটির এবারের ইফতার মাহফিল ছিল স্মরণকালের বৃহত্তম আয়োজন। এমন বৃহৎ আয়োজন প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিকট অতীতে দেখেছেন বলে মনে হয় না। নেতৃত্বের গুণ থাকলে সব অসম্ভবকেই জয় করা সম্ভব। যার নজির স্থাপন করেছেন সভাপতি আব্দুর রবি মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কমিটি। এটি শুধু ইফতার মাহফিল ছিল না। ছিল প্রবাসী বাংলাদেশিদের মিলন মেলায়। ছিল প্রবাসে জন্ম নেয়া এবং বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের মধ্যে কিরাত প্রতিযোগিতা, যা সবার প্রশংসা অর্জন করে। এই প্রতিযোগিতায় প্রায় শতাধিক শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করে। দেখে মনে হবে ফুলকুড়ির আসর। সবাই পরে এসেছেন ধর্মীয় পোশাক। অন্যদিকে বাংলাদেশে সোসাইটির কর্মকর্তারা যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এতো বিশাল আয়োজনে তারা নিজেরাই তৈরি করেছেন ইফতারের আইটেমগুলো। যে কারণে সবাই ফ্রেশ খাবার দিয়ে ইফতার করার সুযোগ পেয়েছেন। গত ২৪ মার্চ মানুষের ঢলে তিব্বতি কমিউনিটি সেন্টার পরিণত হয়েছে একখণ্ড বাংলাদেশে। ইফতার মাহফিলে বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান, সাবেক কর্মকর্তা, কমিউনিটিন নেতৃত্বাধীন প্রায় সব সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সব শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। শিশু-কিশোরদের প্রতিযোগিতায় যারা অংশগ্রহণ করেছে, তাদের মধ্যে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার। সেই সঙ্গে সবাইকে দেওয়া হয় সান্ত্বনা পুরস্কার।

বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকীর পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম আজিজ, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হাজি মফিজুর রহমান, আজিমুর রহমান বোরহান, আব্দুল হাসিম হাসনু, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, ওয়াসি চৌধুরী, খোকন মোশাররফ, আতোয়ারুল আলম, জহিরুল ইসলাম মোল্লা, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদার, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, সাবেক ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য কাজী আজহারুল হক মিলন, বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জামাল আহমেদ জনি, নির্বাচন কমিশনের সদস্য আব্দুল হাকিম মিয়া, আনোয়ার হোসেন, রুহুল আমিন সরকার, শাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান শাজ জে চৌধুরী, কুইন্স ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দুলাল বেহেদু, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহিদ মিন্টু, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের একাংশের সভাপতি বদরুল হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক রোকন হাকিম, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক, সাধারণ সম্পাদক ইউছুফ জসীম, কোষাধ্যক্ষ মহিউদ্দিন, বিয়ানীবাজার সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আলম অপু, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি রাফেল তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট সরওয়ার খান বাবু, এ কে এম রফিকুল ইসলাম ডালিম, কুমিল্লা সোসাইটির সভাপতি বদরুল হক আজাদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি প্রয়াত কামাল আহমেদের মেয়ে রুমানা কামাল, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা তপন জামান, আবুল কাশেম, জ্যামাইকা বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মইনুজ্জামান চৌধুরী, আতিকুল ইসলাম জাকির, অ্যাংকার ট্রাভেলসের প্রেসিডেন্ট এ এস এম মাঈনুদ্দীন পিন্টু, স্যানম্যান গ্লোবালের প্রেসিডেন্ট মাসুদ রানা তপন, ব্রুকলিন বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুর রব, বর্তমান প্রেসিডেন্ট রফিকুল ইসলাম, গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, শোটাইম মিউজিকের প্রেসিডেন্ট আলমগীর খান আলম, লায়ন্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট আব্দুর রশীদ বাবু, ছদরুন নূর, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা আক্তার হোসেন, আবু সাঈদ আহমেদ, সন্দ্বীপ সোসাইটির সভাপতি ফিরোজ আহমেদ, কাজূী শাখাওয়াত হোসেন, গিয়াস উদ্দিন, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সহ-সভাপতি তাজু মিয়া, শাখাওয়াত বিশ্বাস, তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী, শিল্পী শাহ মাহবুব, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা নূরুল হক, সৈয়দ আলম আমিন রাসেল প্রমুখ।

বাংলাদেশ সোসাইটির ইফতার মাহফিলে সভাপতি আব্দুর রব মিয়া হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট এবং কনসাল জেনারেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেন। বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ রব মিয়া কনস্যুলার সেবা প্রদানে কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদার দায়িত্বহীনতার অভিযোগ আনেন। মোহাম্মদ রব মিয়া বলেন, বাংলাদেশিদের ট্যাক্সের অর্থে কনস্যুলেট পরিচালিত হয়। পাসপোর্ট নবায়ন, নতুন পাসপোর্ট, নো ভিসা ইস্যুসহ নানা কনস্যুলার সেবা দেওয়া তাদের দায়িত্ব। কর্মজীবী প্রবাসী বাংলাদেশিরা কর্মদিবসে কাজ বন্ধ করে সেবা নিতে কনস্যুলেটে যেতে পারেন না। অতীতে এ জন্য কন্স্যুলার সেবা প্রদানে কুইন্স, ব্রুকলিন ও ব্রঙ্কসে ছুটির দিনে মোবাইল কনস্যুলার ক্যাম্প স্থাপন করতো। শতশত মানুষ সেবা নিতেন। কিন্তু নতুন কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা দায়িত্বে আসার পর তা বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকর্তারা একাধিকবার তার সঙ্গে দেখা করে কনস্যুলার সেবা প্রদানের আহ্বান জানায়। তিনি সহায়তার হাত বাড়াননি। আব্দুর রব মিয়া ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আগের কনসাল জেনারেলরা পারলে তিনি পারবেন না কেন? তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে বিমাতাসূলভ আচরণ করছেন। তিনি বলেন, প্রয়োজনে আমরা কনস্যুলেট অফিসের সামনে গিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করবো।

সভাপতি রব মিয়া যখন এ বক্তব্য দিচ্ছিলেন ইফতার পার্টিতে উপস্থিত কনস্যুলেটের কর্মকর্তা আসিফ আহমেদ তা শুনছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি সোসাইটির প্রচার সম্পাদক রিজু মোহাম্মদকে ডেকে মঞ্চে গিয়ে কিছু বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু সময়ের অভাবে তিনি সে সুযোগ পাননি। 

এ ব্যাপারে কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, সভাপতি রব মিয়া জনসম্মুখে সঠিক বক্তব্য তুলে ধরেননি। তবে তিনি বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। আমি তাকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে বলেছি, একই শহরের ভেতর মোবাইল টিম পাঠিয়ে কনস্যুলার সেবা প্রদানে ঢাকা থেকে আসা অডিট টিম আপত্তি তুলেছে। এ ধরনের কনস্যুলার ক্যাম্প স্থাপনে অর্থ খরচের ব্যাপার থাকে। এতেই অডিট টিমের আপত্তি। নিউইয়র্ক সিটির বাইরে, যেমন বাফেলো, আটলান্টিক সিটি, বোস্টন বা কানেকটিকাটে ক্যাম্প স্থাপনে তাদের কোনো বাধা নেই। অতীতে তো সিটির ভেতর বিভিন্ন ব্যরোতে হয়েছে। এখন বন্ধ করলেন কেন? জবাবে নাজমুল হুদা বলেন, অডিট ডিপার্টমেন্টের আপত্তির কারণেই। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা অডিট ডিপার্টমেন্টের নির্দেশনা পেলে সিটির বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল টিম পাঠিয়ে কনস্যুলার সেবা আমরা দিতে পারবো। 

শিশু-কিশোরদের কিরাত প্রতিযোগিতা পরিচালনা করেন মওলানা শহীদুল্লাহ এবং প্রধান বিচারক ছিলেন জ্যামাইকা বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টারের ঈমাম মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ।

শেয়ার করুন