২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৪:৪৬:৫০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


ইইউর নির্বাচনী রিপোর্টে অস্বস্তিতে সরকার
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৩-২০২৪
ইইউর নির্বাচনী রিপোর্টে অস্বস্তিতে সরকার


বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক মানদ- পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা মনে করছে, এই নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ রিপোর্ট নিয়ে অস্বস্তিতে আওয়ামী লীগ সরকার। নির্বাচনের পর বিভিন্ন ধরনের চিঠি এবং বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের বৈঠক নিয়ে সরকার বলার চেষ্টা করছিলো যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং নির্বাচন সবাই মেনে নিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে ইইউর রিপোর্ট প্রমাণ করেছে তারা নির্বাচনে সন্তুষ্ট নয় এবং তারা তাদের পূর্বের অবস্থানে রয়েছে।

ইউরোপীয় কমিশনের ওয়েবসাইটে ৩৩ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় ভোটাররা পুরোপুরিভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার সুযোগ পাননি। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রার্থী ও তাদের দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার কারণে ভোটারদের সত্যিকার অর্থে পছন্দের প্রার্থী বেছে নেয়ার সুযোগ ছিলও না।

এছাড়া ভোটের দিন বিভিন্ন জায়গায় ব্যালট বাক্স ভর্তি ও জালিয়াতির চেষ্টা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই প্রতিবেদনকে খুব একটা আমলে নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। তারা বলছে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান মিডিয়াকে বলেন, ‘কে কী বললো আর না বললো তাতে নির্বাচন কমিশনের কিছু আসে যায় না। ইইউ তাদের কথা বলেছে। তারা তাদের কথা নিয়ে থাকুক। অসুবিধা নাই। আমরা আমাদের কথা বলেছি আগেও। আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’

গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশের নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ বিষয়ে জানতে প্রাক-নির্বাচনী মিশন পাঠায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা বাংলাদেশে ২০ দিন অবস্থান করে রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, সাংবাদিক, সুশীলসমাজসহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে শতাধিক বৈঠক করে। ওই বৈঠকের কয়েকদিন পর তারা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানায় বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে সার্বিকভাবে নির্বাচন মূল্যায়ন করতে তাদের একটি কারিগরি দল পাঠায় বাংলাদেশে।

গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ওই কারিগরি দল বাংলাদেশে আসে। দুই মাস অবস্থান করে ৮ মার্চ শুক্রবার রাতে ইউরোপীয় কমিশনের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ পতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। তারা বিষয়টিকে বিরোধী জোট বিএনপির ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। সকালে ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বিএনপি মিথ্যা তথ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বিভ্রান্ত করছে।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওই প্রতিবেদনে নির্বাচনের পাঁচটি বিষয়ে বিশেষ নজর দিয়েছে। সেই সঙ্গে তুলে ধরেছে ২১ দফা সুপারিশ।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ নির্বাচন

প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়, ২০২৪ সালের বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিছু গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মানদন্ড পূরণ করতে পারেনি। এই নির্বাচনে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারÑযার মধ্যে সমাবেশ, সমিতি, আন্দোলন এবং বক্তৃতার মতো বিষয়গুলো প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য হলেও বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ক্ষেত্রে তা ছিলও অনেকটাই সীমাবদ্ধ। ২৭ দেশের সমন্বয়ে গঠিত এই সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে বলছে, বিচারিক কার্যক্রম এবং গণগ্রেফতারের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা মারাত্মকভাবে সীমিত হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক দলগুলোর আসন ভাগাভাগি চুক্তি এবং আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী ও দলের সঙ্গে যুক্ত ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের’ মধ্যে প্রতিযোগিতা ভোটারদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়নি। নির্বাচনের সময় এবং আগে পরে গণমাধ্যম এবং সুশীলসমাজও বাক্্স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সহায়ক ছিল না বলেও উল্লেখ করা হয় বিস্তারিত এই প্রতিবেদনে।

গণগ্রেফতারে আদালত পাড়ায় ব্যস্ত ছিলো বিএনপি

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের এই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। ফলে এই নির্বাচন একটি অত্যন্ত মেরুকৃত রাজনৈতিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের বিএনপি কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতা ও পরবর্তীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়গুলো উঠে আসে এই প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, বিরোধীরা সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচন পরিচালনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করলেও তা যা প্রত্যাখ্যান করে ক্ষমতাসীনরা। ২৮ অক্টোবরের পর গণগ্রেফতারের ঘটনায় দেশের নাগরিক ও রাজনৈতিক পরিবেশের উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটে বলেও উল্লেখ করা প্রতিবেদনে। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের গ্রেফতারে ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঠেকাতে ফৌজদারি অভিযোগ গঠন ব্যাপকভাবে একটি কৌশলের অংশ হিসেবে ব্যবহার হয়েছে বলে মনে করে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বলা হয় নির্বাচনের পুরো সময়ে বিরোধী দলগুলোর সমাবেশ, সমিতি, আন্দোলন এবং বক্তৃতার স্বাধীনতা কঠোরভাবে সীমিত করা হয়। গ্রেফতার এড়িয়ে যে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা বিএনপির পক্ষে অসম্ভব ছিল।

প্রতিযোগিতাহীন আসন ভাগাভাগির নির্বাচন

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরোধীপক্ষ বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও শরিক জোট নির্বাচন বয়কট করায় এই নির্বাচনে প্রকৃত প্রতিযোগিতার অভাব ছিল। সেই সঙ্গে একদিকে যেমন নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার ছিলও না, অন্যদিকে আন্দোলন করার অবাধ সুযোগও সীমিত করা ছিলও বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। আওয়ামী লীগ ও নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের বিষয়টিও উঠে আসে এই প্রতিবেদনে। যেখানে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর আসন ভাগাভাগি চুক্তি এবং আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী ও দলের সঙ্গে যুক্ত ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের’ মধ্যে প্রতিযোগিতার কারণে ভোটারদের পছন্দ মতো প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিলও না।

প্রতিযোগিতার কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়, এই নির্বাচনে ২৯৯ আসনের বিপরীতে ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ৭৪ শতাংশ প্রার্থী ন্যূনতম ভোট না পাওয়ায় জামানত হারিয়েছেন। আর মাত্র ১১ শতাংশ আসনে প্রতিযোগিতা দেখা গেছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে এই রিপোর্টে। ইইউ বলছে, নির্বাচনে কোনো স্বাধীন আন্তর্জাতিক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পর্যবেক্ষণে আসেনি। কমনওয়েলথ এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইআরআই ও এনডিআই একটি যৌথ মিশন ছোট বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে। তবে ইসি সব খরচ দিয়ে কিছু একক বিদেশি পর্যবেক্ষককে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা নির্বাচনী পর্যবেক্ষণের আন্তর্জাতিক যে নীতিমালা রয়েছে, তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। আওয়ামী লীগই ছিল একমাত্র রাজনৈতিক দল, যে বৃহৎ প্রচার মিছিলসহ যে কোনও উল্লেখযোগ্য জনসাধারণের কার্যক্রম সংগঠিত করতে পেরেছে। নির্বাচনে প্রচারণার সময় ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।

ভোটে অনিয়ম ও জালিয়াতি

নির্বাচনের দিনের বিভিন্ন অনিয়ম, সহিংসতা ও আইনবহির্ভূত আচরণের বিষয়গুলো উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটির প্রতিবেদনে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে সরকার বিভিন্ন ধরনের কৌশল নিয়েছিল। কেন্দ্রে না এলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ার সরকারি দলের নেতাকর্মীদের দেয়া হুমকির বিষয়গুলো প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। এছাড়া ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে পরিবহন ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, কেন্দ্রে লম্বা লাইন দেখানোর মতো বিষয়গুলোও বাদ যায়নি পূর্ণাঙ্গ এই প্রতিবেদনে। বলা হয়, ভোটকেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের কর্মীদের উপস্থিতির কারণে ভোটারদের জন্য নির্বাচনের পরিবেশ ছিল ভয়ের।

এতে বলা হয়, এবারের সংসদে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে। আগের সংসদে এ সংখ্যা ১৮ থাকলেও এবার ১৪তে নেমে এসেছে। ইইউ বলছে, নির্বাচনের দিন ব্যালট বাক্স ভর্তি এবং জালিযাতির প্রচেষ্টাসহ নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীরা ভোটে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকটি অভিযোগের সুরাহা করা হয়। ভোট বন্ধ করা হয় ২৫টি কেন্দ্রে। তবে অন্যান্য ঘটনার যথেষ্ট তদন্ত করা হয়নি বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। নির্বাচনের দিন সহিংসতার বিচ্ছিন্ন ঘটনার কথা বলেছে ইইউ। এছাড়া ব্যালট বাক্স ভর্তি এবং জালিয়াতির প্রচেষ্টাসহ নির্বাচন কমিশনে স্থানীয় প্রার্থীরা ভোটে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন বলেও প্রতিবেদনে উঠে আসে।

চূড়ান্ত আনুষ্ঠানিক ফলাফল অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল প্রার্থীরা ২২৩টি আসন, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি, জাতীয় পার্টি পায় ১১টি আসন। আসন ভাগাভাগির চুক্তিতে আরো দুটি দল একটি করে আসন পেয়েছে। চূড়ান্ত আসনটি কল্যাণ পার্টি জিতেছে।

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা

ইইউ কারিগরি দল বলছে, আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের হাতে ক্ষমতা থাকলেও নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। প্রতিবেদনে গুরুত্ব দেওয়া হয় নির্বাচনের ভোটার উপস্থিতির হার নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটের হার ছিল ৪১.৮ শতাংশ। তবে ইইউ মনে করে ভোটের এই হার সারা দেশে ব্যাপক বৈষম্যের চিত্র প্রদর্শন করে। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের বক্তব্যের বরাত দিয়ে, ইইউ এই প্রতিবেদনে জানায়, ভোটদান এবং গণনা প্রক্রিয়ার সময় কমিশনের স্বাধীন মর্যাদা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত করা হয়নি।

তবে ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে এতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ১৮ বছর বয়সে পৌঁছেছেন এমন ব্যক্তিদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তবে ইইউ মনে করে, নির্বাচনে দাঁড়াতে অযথাই প্রার্থীদের অধিকারকে সীমিত করেছে নির্বাচন কমিশন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সুপারিশ

নির্বাচনের সার্বিক বিষয় মূল্যায়নের পাসাপাশি প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইইউ কারিগরি মিশন সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচনের জন্য মোট ২১টি পরামর্শ দিয়েছে। যেখানে আছে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ আরো স্বচ্ছ ও স্বাধীন করার বিষয়ও। যেখানে বলা হয়, নির্বাচন পরিচালনা আইন বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২সহ সংসদীয় সম্পর্কিত সমস্ত আইন এবং বিধিগুলোর একটি ব্যাপক পর্যালোচনা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আইনি নিশ্চয়তা বাড়াতে পারে।

এছাড়া বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনার বোর্ড নিয়োগের ব্যবস্থা যোগ্যতাভিত্তিক ও স্বাধীন নিয়োগের মাধ্যমে হওয়া উচিত বলেও মনে করে তারা। এছাড়া বাক স্বাধীনতার আন্তর্জাতিক মানদন্ডের বিধান মেনে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, ২০২৩-এর বিধানগুলির পর্যালোচনা করার সুপারিশ জানানো হয় প্রতিবেদনে। অস্পষ্ট এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিধিনিষেধগুলো সরানো উচিত বলে মনে করে ইইউ।

সুপারিশের সুশীল সমাজের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। ভোট ও গণনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য জন্য ভোটকেন্দ্রের আশেপাশে রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞারও সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ প্রতিবেদনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এখনো দেখিনি। আমরা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করেছি। নির্বাচনে কে আসলো না আসলো সেটা আমাদের বিষয় ছিলও না। কমিশন মনে করলে এ নিয়ে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।

আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ক্রমাগতভাবে বিএনপি মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে। তারা কে কি বলছে সেটি আমাদের দেখার বিষয় না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে পারি, তারা যেসব বলছে সেসব দেশে ঘটেনি।

শেয়ার করুন