২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৩:০৯:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :


জাকাত ফাউন্ডেশন দুস্থদের সেবায় ১০০ শয্যার হাসপাতাল করছে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৬-২০২২
জাকাত ফাউন্ডেশন দুস্থদের সেবায় ১০০ শয্যার হাসপাতাল করছে অনুষ্ঠানে অতিথি ও আয়োজকবৃন্দ


জাকাত ফাউন্ডেশন সারা বিশ্বে একটি পরিচিত নাম। বিশেষ করে যেখানে অসহায় এবং দুস্থ মানুষ রয়েছে, সেখানেই জাকাত ফাউন্ডেশন তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই জাকাত ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম রয়েছে। মূলত মানুষের অর্থেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন জাকাত ফাউন্ডেশন। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকায় জাকাত ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম একটু বেশি। কারণ ওইসব দেশেই অসহায় মানুষের সংখ্যা বেশি। মানুষের পাশে মানুষ, সবার সেরা মানব সেবা- এই স্লোগানকে ধারণ করেই জাকাত ফাউন্ডেশন তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালিত করছে। করোনা মহামারীর সময় নিউইয়র্কসহ পুরো উত্তর আমেরিকায় জাকাত ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ড ছিলো প্রশংসনীয়। যেখানে মানুষে ভয়ে ঘর থেকে বের হবার সাহস পাচ্ছিলো না, ঘরে খাবার নেই, মাস্ক নেই, হ্যান্ড স্যানিটাইজার নেই- সেই সময় জাকাত ফাউন্ডেশন খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছেছে। বিশেষ করে জাকাত ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ইমরান আনসারি সেই সময় মানবতার ফেরিওয়ালার দায়িত্ব পালন করেছেন।

এবার জাকাত ফাউন্ডেশন বড় কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তারা পাকিস্তানে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল করার ঘোষণা দিয়েছে। পাকিস্তানের লাহোরে এই হাসপাতাল করা হবে। হাসপাতালের জমিও ইতিমধ্যে দান করেছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভ‚ত আমেরিকান ডাক্তার মাহমুদ আলম। এই উপলক্ষে গত ৪ জুন সন্ধ্যায় ফ্রেশমেডোর একটি রেস্টুরেন্টে দাক্ষিণ এশিয়ান সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। জাকাত ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ইমরান আনসারির সঞ্চালনায় এই সময় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের জন্য জমিদানকারী ডা. মাহমুদ আলম, জাকাত ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা রাজা ফারুকসহ বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা।

অনুষ্ঠানে ডা. মাহমুদ আলম বলেন, প্রায় ৩৫ বছর ধরে আমেরিকায় রয়েছি এবং ২৫ বছর ধরে ডাক্তারি করছি। তিনি বলেন, যে দেশে আমরা জন্মগ্রহণ করেছি এবং বড় হয়েছি সেই দেশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। এখন সময় এসেছে অসহায় এবং দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। আমাদের মতো দেশগুলোতে বড় লোকদের চিকিৎসার জন্য অর্থের কোনো প্রয়োজন হয় না। গরিব-অসহায় মানুষগুলো সঠিক চিকিৎসাসেবা পায় না। বিশেষ করে নারীরা খুব বেশি অবহেলিত। জাকাত ফাউন্ডেশন একটি মানবসেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরেই মানবসেবায় কাজ করে যাচ্ছে। এবার পাকিস্তানে তারা একটি ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। আমার কাছে প্রস্তাব দেয়ার পর আমি তাদের জানিয়েছি আমি এবং আমার পরিবার হাসপাতালের জন্য জায়গা দেব। যেই পরিকল্পনা সেই কাজ। আমরা পাকিস্তানে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল করতে যাচ্ছি। আমরা সবার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চাই। তিনি বলেন, পাকিস্তানে সব কিছু আছে, মেধা আছে, ডাক্তার আছে, কিন্তু গরিবদের সেবার জন্য কিছুই নেই। তিনি আরো বলেন, আমি ইন্টারনেটে বাংলাদেশে একটি হাসপাতাল তৈরির নকশা দেখেছি। এটা আমার কাছে ভালো লেগেছে। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই হাসপাতাল তৈরি করতে আমাদের প্রায় ৭-৮ মিলিয়ন ডলার লাগবে। আমরা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছি। আর্কিটেক্ট ফাইনাল প্ল্যান করছেন। এটা জমা দেয়া হবে। আবার আমিও পাকিস্তান যাচ্ছি। পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আগামী ২ বছরের মধ্যে হাসপাতাল করার ইচ্ছা রয়েছে। প্রায় ত্রিশ একর জমির ওপর এই হাসপাতাল করা হচ্ছে। তবে চিকিৎসা শতভাগ ফ্রি নয়, এটা কোনো ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠান হবে না। এটা বলা যায় সদকায়ে জারিয়া। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো ফান্ড রেইজিং ছাড়াই আমাদের কাছে এখন ১ মিলিয়ন ডলার রয়েছে। কাজ শুরু করলে আমরা ফান্ড রেইজ করবো। এই জন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।

উপদেষ্টা রাজা ফারুক বলেন, আসলে জাকাত ফাউন্ডেশন হচ্ছে শিকাগোভিত্তিক তার্কিশ ব্যবসায়ীদের অর্থায়নে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। আমাদের কাজ হচ্ছে মানুষের সেবা করা এবং অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। করোনার সময় আমরা নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় সেবা প্রদান করেছি। সারাবিশ্বে যেখানে অসহায় মানুষ ছিলো, সেখানেই আমাদের কার্যক্রম ছিলো। বাংলাদেশেও আমাদের কর্মসূচি আছে। বাংলাদেশে আমাদের অফিস রয়েছে। সেখানে আমরা ৬-৭ বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশেও হাসপাতাল করার।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মধ্যে কয়েকজন বক্তব্য রাখেন এবং সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেন জাহিদ ইজাজ।

শেয়ার করুন