দশ বছর পর পুলিশের অনুমতি নিয়ে ঢাকার সমাবেশ করলো জামায়াতে ইসলামী। শনিবার বেলা আড়াইটায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিন জামায়াতের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্যের ঊধর্গতি, আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে এই সমাবেশ হয়। শেষ হয় বিকাল পৌনে ৫টায়।
এই সমাবেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসাইন প্রমূখ নেতারা ছিলেন।
দলের নেতাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় তারা দীর্ঘ এক যুগ কোনো সভা-সমাবেশ করতে পারিনি। সর্বশেষ তারা পুলিশের অনুমতি নিয়ে ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রয়ারি মতিঝিল সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছিলো।
তবে পুলিশের অনুমতি না মিললেও জামায়াত মগবাজার ও রামপুরা সড়কে ২০১৮ সালে ঝটিকা মিছিল করেছিলো কয়েকটি। সেসব কর্মসূচি থেকে তাদের নেতা-কর্মীও আটক করা হয়েছিলো বলে জামায়াত নেতাদের অভিযোগ।
দুপুর আড়াইটায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে এই সমাবেশে ঢাকা মহানগর জামায়াত ও ছাত্র শিবিরের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীরা অংশ নেয়। মিলনায়তনে নেতা-কর্মীদের ভিড় মিলনায়তন প্রাঙ্গনেও ছড়িয়ে পড়ে। সমাবেশে দক্ষিন জামায়াতের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীরিআবু মুসা, সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিম প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।নেতা-কর্মীরা জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তিতে মুহুর্র মুহুর্র শ্লোগান দেয়।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘‘ আপনারা যারা সরকারে আছেন, আপনারাও বলছেন নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা। আমরাও চাই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। গণতন্ত্রের কথা হচ্ছে নিরপেক্ষ নির্বাচন। কিন্তু ডালমে কুচ কালা হে। ২০১৪ সালের নির্বাচন, ২০১৮ সালের নির্বাচন গেছে। এবার সেভাবে হতে দেয়া হবে না। এবার নির্বাচন হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। আলোচনায় আসুন। সমাধান পাবেন।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতিষ্ঠায় রাজপথে জামায়াত আন্দোলন করবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘‘এবারের নির্বাচন হবে একমাত্র তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে…. তত্তাবধায়কের অধীনে। এর জন্য যা যা করা দরকার... আন্দোলন করা দরকার, সব করবো।”
দলের কারাবন্দি নায়েবে আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে তাহের বলেন, ‘‘ আমাদের নির্দোষ নেতাদের আলেম ওলামাদের জেলে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা সকলের মুক্তির দাবি করতে চাইনা, অবিলম্বে আমাদের নেতাদের মুক্তি দেন। তা না হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হবে।”
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘‘ আমাদের সবার প্রিয় দল জামায়াতে ইসলামের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছে। জামায়েতে ইসলামের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশের ন্যায়ের প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরিয়ে দিতে হবে।”
জামায়াতের এই সমাবেশ উপলক্ষে দুপুর থেকে মতস্যভবন, শাহবাগ সড়কে ব্যাপক পুলিশ মোতা্য়েন করা হয়। রায়ট কার, প্রিজন ভ্যানসহ সাদা পোষাকে সদস্যরাও ছি্লো সর্বত্র। রমনা জোনের সহকারি কমিশনার মোহাম্মদ সালমান ফার্সী বলেন, ‘‘ জামায়াত ইসলাম তাদের সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করেছে। যথা সময়ে তারা সমাবেশ করে চলে গেছে।”