শ্রীলঙ্কায় কারফিউ তুলে নিলেও এরপর দেশটিতে জরুরী অবস্থা ঘোষনা করা হয়েছে। চরম অর্থনৈতিক দুরাবস্থার দরুন সাধারন মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এরই এক মুহুর্তে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট এর বাসভবনে অদুরে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। পরে এটা ব্যাপাক আকার ধারন করলে কারফিউ দেয়া হয়। অবশ্য সেটা বেশ কিছুক্ষন রাখার পর তুলে নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত জরুরী অবস্থা ঘোষনা করা হয়েছে।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসা এক সরকারী গেজেটে ওই ঘোষনা দেন। তিনি আরো বলেন, জন নিরাপত্তা,আইনশৃংখলা, এবং সরবরাহ ও জরুরী সেবা নিশ্চিত করার স্বার্থে জরুরী অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোতে কারফিউ
শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোতে কারফিউ ঘোষনা করা হয়েছে। দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে গেলে সাধারন মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাধারন মানুষ প্রতিবাদ জানাতে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত বাসভবনে কাছাকাছি এলাকায় জড়ো হলে সেখানে প্রচন্ড বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের পর রাতেই ওই কারফিউর ঘোষণা দেয় পুলিশ। খবর আল-জাজিরার।
প্রেসিডেন্ট ভবনের পাশে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীেেদর দেখা যাচ্ছে : ছবি রয়টার্স
শ্রীলঙ্কায় দেশটির অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি টানা ১৩ ঘন্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকা নিত্য ঘটনা। এতেই মানুষ ক্ষুব্দ হয়ে উঠেছে। এদিন লোকজন সরকারের উপরে ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাস্তা বাসভবনের বাইরে জড়ো হয় বিক্ষোভকারী। তারা রাজাপাকসের বাসভবন ঘেরাওয়ের চেষ্টা চালায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে একপর্যায়ে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এরপরই কারফিউজারীর ঘোষণা। রাজাপাকসে তার বাসভবনে ছিলেন কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। পুলিশের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। খবরে বলা হয়, স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলংকা বিদেশি মুদ্রার অভাবে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। দাম পরিশোধ করতে না পারায় জীবন রক্ষাকারী ওষুধ থেকে শুরু করে সিমেন্ট পর্যন্ত সব গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। লোকজনকে জ্বালানির জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
প্রতিদিন প্রায় ১৩ ঘন্টা লোডসেডিংয়ের কবলে। একই সঙ্গে অর্থনীতির বাজে অবস্থার জন্য কাগজের অভাবে স্কুলে পরীক্ষা ও দৈনিক পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংকটে এমনকি সড়কবাতি ও বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শ্রীলংকার সূত্র জানিয়েছে গত কয়েক দশকের মধ্যে মূল্যস্ফীতির সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে।
পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে
শ্রীলংকা ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের অনেকের কাছেই অভাব নতুন কিছু নয়। সরকার স্বীকার করে নিয়েছে বর্তমান অর্থনীতি এমন পর্যায়ে যে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। মুদ্রাবাজার স্তিতি রাখতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সহায়তা চাইছে দেশটি। কিন্তু ওই সহায়তা পেতে এ বছরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত লাগতে পারে। মানুষ আশংকা করছে, সামনে আরো কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। তথ্যসুত্র রয়টার্স