মার্ক মার্টিনেজ
অ্যারিজোনার মারিকোপা শহরের একমাত্র মসজিদ, বিলাল ইবন রাবাহে সহিংস হুমকি দেওয়ার ঘটনায় মার্ক মার্টিনেজ (৩৬) গত ২৩ সেপ্টেম্বর আদালতে উপস্থিত হয়ে দোষ স্বীকার করেছেন। পুলিশের বরাতে জানা গেছে, মার্টিনেজ শহরের মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ভয়ংকর হুমকি দিয়ে ফোন করেছিলেন, যা শহরের নিরাপত্তা এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ৩ আগস্ট সকালবেলায় মার্টিনেজ মসজিদে ফোন করেন এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে একটি ‘ক্রুসেড’ চালানোর হুমকি দেন। সে সময় মসজিদে রোববার স্কুল চলছিল, তাই অনেক শিশু উপস্থিত ছিলেন। ফোনের সময় তিনি রাগান্বিত ছিলেন এবং বারবার অপমানজনক শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। পুলিশের বরাতে জানা গেছে, কলের সময় তিনি বলেছিলেন যে তিনি ‘একজন আক্রমণকারীর অংশ’ হবেন।
ঘটনার পর ২৯ আগস্ট মার্টিনেজকে তার বাড়ি, দ্য ভিলেজেস থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন। আদালতের বাইরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে মার্টিনেজ তার কলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি খুব খারাপ লাগছিল। জানতাম না তখন সেখানে শিশুরা আছে। আমার উদ্দেশ্য কখনো ছিল না শিশু বা মানুষদের ভয় দেখানোর। কিন্তু হ্যাঁ, আমি এটি করেছি। তাই আমাকে এর পরিপ্রেক্ষিতে যেতে হবে। মার্টিনেজ আরো জানান, ফোনের সময় তিনি ‘প্ররোচিতবোধ’ করেছিলেন, কিন্তু তার কথাগুলো বিভ্রান্তিকর ছিল। তিনি বলেন, দোষ স্বীকার করা মানে নিজের দায়িত্ব গ্রহণ করা।
পুলিশ আরো জানিয়েছে, তদন্তকারীরা মসজিদ নেতাদের দেওয়া আংশিক অডিও রেকর্ডিং, ফোন রেকর্ড বিশ্লেষণ এবং ফেডারেল সমন্বয়ের মাধ্যমে হুমকিগুলো নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনা শহরের মুসলিম সম্প্রদায়ে ভয় ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মার্টিনেজের স্বীকারোক্তি আদালতের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হবে, যা সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় এবং কর্তৃপক্ষ মার্টিনেজের স্বীকারোক্তিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। মসজিদের ইমাম জাবের আলী বলেন, যদি কেউ ভুল করে এবং তার দায় স্বীকার করে, সেটি আমাদের জন্য শান্তির বার্তা। আমরা আশা করি, বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে এবং ভবিষ্যতে এমন হুমকি আর কেউ দেবে না। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের ঘটনার কারণে সম্প্রদায়ের মানুষরা নিরাপত্তাহীনতার শিকার হন, তাই সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও নিশ্চিত করছে যে, মার্টিনেজের এ মামলার মাধ্যমে হুমকিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে শক্ত বার্তা যাচ্ছে। পুলিশ কর্মকর্তা লুইস রোড্রিগেজ জানান, আমরা সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিচ্ছি। এ ধরনের হুমকি কাউকে নীরব থাকার সুযোগ দেয় না। আমাদের লক্ষ্য সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।