০৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার, ০৬:৩৬:৪৪ অপরাহ্ন


পরিকল্পহীন বাংলাদেশ সোসাইটির ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-১১-২০২৫
পরিকল্পহীন বাংলাদেশ সোসাইটির ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান কেক কেটে সুবর্ণজয়ন্তী পালন


প্রবাসের মাদার সংগঠন হিসাবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটি। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল বাংলাদেশ সোসাইটি। সেই ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের ৫০ বছর পূর্তি অর্থাৎ সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান গত ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় টেরেস অন দ্য পার্কে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ও সোনিয়া সিরাজের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা, কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, মূলধারার রাজনীতিবিদসহ সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরিকল্পনার অভাবে বাংলাদেশ সোসাইটির সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের মান কিছুটা ম্লান মনে হয়েছে। সবই যেন ছিল একহাতে বন্দি। ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যেখানে থাকার কথা ছিল উৎসবের রং, সেখানে দেখা গেল সেই বিরক্তিকর বক্তৃতাবাজি। নিজেদের খয়ের খাঁদের না রেখে রাখা যেত সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ। পরিকল্পনা ছিল না বলেই হাতাহাতি এবং ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। একে তো হলের প্রথম অংশ ছিল উঁচু এবং শেষদিকের অংশ ছিল নিচু। সামনের অংশের লোকজন দাঁড়িয়ে থাকলে পেছনের অংশে বসা লোকজনের পক্ষে কিছু দেখা সম্ভব নয়। যে কারণে পেছনের অংশে বসা লোকজন সামনে লোকজনকে বসতে বলে, না বসাতেই বাধলো গোল। নিক্ষেপ করা হলো পানি। আর যায় কোথায়? সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার, হাতাহাতি এবং ধাক্কাধাক্কি। ভাগ্যিস উপস্থিত ছিলেন কর্মকর্তা লিটন চৌধুরী, কামরুজ্জামান কামরুল, নওশাদ হোসেন এবং উপদেষ্টা আজিমুর রহমান বোরহানসহ আরো একজন। যার গায়ে পানি নিক্ষেপ করা হয়েছে, তারা ওই ব্যক্তিকে শান্ত করেন। আবার খাবারের স্বল্পতা নিয়েও কারো কারো ক্ষোভ ছিল। এত বড় অনুষ্ঠানে ছিল না কোন সরকারি প্রতিনিধি, ছিল না সিনেটর, কংগ্রেসম্যান বা নিউইয়র্কের গভর্নর, মেয়র বা মেয়র প্রার্থী। প্রশ্ন করেছেন কেউ কেউ এতো দৈন্যতা কেন?

তবে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তির খবর ছিল বাংলাদেশ সোসাইটির ভবন নিয়ে। ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ ঘোষণা করলেন, বাংলাদেশ সোসাইটির ভবনের জন্য বিল্ডিং সাইন করা হয়েছে। এ ঘোষণায় সবাই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তাকে অনেকেই ধন্যবাদ জানান এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানকে সার্থক করার জন্য তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমান, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু, স্টিভেন রাগা, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ইভেন্টের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন দেওয়ান, উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান ডা. মইনুল ইসলাম মিয়া, উদযাপন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ডা. হামিদুজ্জামান, চিফ ইভেন্ট কো-অডিনের্টর ফখরুল আলম, সহ-সভাপতি ও যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান কামরুল, সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য সচিব আবুল কালাম ভূইয়া, প্রধান সমন্বয়কারী হারুণ উর রশীদ, কুইন্স বরো প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদেক, নতুন প্রজন্মে প্রতিনিধি নামিরা মেহেদী, ভিক্টর ঘোষ, অনিকা জেবা ও শেখ আনাম প্রমুখ।

অ্যাসেম্বলিম্যান ও মূলধারার অন্যান্য রাজনীতিবিদদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকর্তাদের সাইটেশন ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা গ্রহণ করেন সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ। অন্য্যদিকে সোসাইটির পক্ষ থেকে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য প্রথমবারের মতো সোসাইটি পদক দেওয়া হয়। সাংবাদিকতায় পদক পেয়েছেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্যাহ, সাংস্কৃতিকে সেলিমা আশরাফ, শিক্ষায় মোশাররফ হোসেন খান, কমিউনিটিতে অবদানের জন্য কামাল আহমেদ ও কাজী আজহারুল হক মিলন, মানবসেবায় দ্য অপটিমিস্ট, খেলাধুলায় সাঈদুর রহমান ডন। দাদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ, সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদ, ডা. হামিদুজ্জামান, ডা. বিল্লাহ, ডা. ওয়াদুদ ভূইয়া, ডা. মইনুল ইসলাম মিয়া, আব্দুর রব মিয়া, মজিবুর রহমান, আজমল হোসেন কুনু, আব্দুর রহিম হাওলাদার, রানা ফেরদৌস চৌধুরী, ফখরুল আলম, নূরুল হক, রুহুল আমিন সিদ্দিকী, সউদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রয়াত পুলিশ অফিসার দিদারের পরিবারকে সম্মাননা জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয় বাংলাদেশ সোসাইটির প্রয়াত নেতৃবৃন্দকে। সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একটি স্মরলিকা প্রকাশ করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী বাদশা বুলবুল, বাউল সম্রাট কালা মিয়া, প্রতিক হাসান, প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী রানো নেওয়াজ, শাহ মাহবুব, অনিক রাজ। এছাড়াও নৃত্য পরিবেশন করেন নৃতাঞ্জলির শিল্পীরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন সোসাইটির কর্মকর্তা জামিল আনসারি, গীতা পাঠ করেন প্রশান্ত। জাতীয় সংগীত পরিবেশনে সায়েম।

অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শাহ নেওয়াজসহ যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি।

শেয়ার করুন