০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার, ১১:২৩:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্টিত , সহজ গ্রুপে ব্রাজিল - যুক্তরাষ্ট্র ডি গ্রুপে স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া


গৃহঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ানোর ৯ উপায়
ড. শেখ রহমান
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৮-২০২২
গৃহঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ানোর ৯ উপায়


বর্তমানে আবাসন খাতে একটা তুলনামূলক সংকট চলছে। বাড়ির চাহিদা বেশি, কিন্তু জোগান কম এবং একইসাথে গৃহঋণের পুঁজির জোগানও কিছুটা কম। ফলে ঋণদাতারা তাদের সুদের হার বাড়িয়েছে এবং তারা বেশি হারে ঋণের আবেদন প্রত্যাখ্যান করছে। অর্থাৎ ক্রেতা বা ঋণগ্রহীতাদের জন্য বাজারটা আগের চেয়ে বেশি প্রতিযোগিতমূলক হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় গৃহঋণ পেতে আপন যোগ্যতা বাড়ানোর বিষয়ে কিছুটা যতœবান হওয়ার প্রয়োজন। এই অবস্থায় বাড়ি কিনতে ইচ্ছুক ক্রেতারা নিচে লিখিত ব্যবস্থাগুলো নিতে পারেন:

১। কাজ বা পেশা নিয়মিত রাখুন। ঋণদাতারা বিশেষভাবে দেখতে চায় আপনার আয় নিয়মিত কিনা। একই ধরনের পেশাতে এক প্রতিষ্ঠান থেকে আরেক প্রতিষ্ঠানে গেলে এবং আয় সমান থাকলে বা বেড়ে গেলে অবশ্যই কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ভিন্ন ধরনের পেশা গ্রহণ করলে বা মাঝে বেকার থাকলে, ঋণদাতারা তাদের ঋণ ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে অনিশ্চয়তায় ভোগে। তখন তারা আবেদনে সাড়া দিতে চায় না। সেই কারণে আবেদনের আগে কমপক্ষে অন্তত দু’তিন বছর একই বা একই ধরনের পেশায় থাকতে চেষ্টা করুন।

২। নিয়মিত কর আদায় করুন। আপনার কর আদায়ের কাগজপত্র ঋণদাতাদের কাছে আর্থিক সামর্থ্যরে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ। তাই আবেদনের আগে অন্তত দুই বছর যথাসম্ভব সর্বাধিক কর আদায় করুন। করের কাগজপত্র ছাড়াও গৃহঋণ পাওয়া যায়, কিন্তু সেক্ষেত্রে সম্ভাবনা কমে যাবে এবং সুদের হার বেড়ে যাবে।

৩। ডাউনপেমেন্ট বাড়াতে চেষ্টা করুন। ডাউনপেমেন্ট যতো বাড়াবেন আপনার গৃহঋণের সম্ভাবনা ততো বেড়ে যাবে এবং সুদের হারও কমে যাবে। আপনার নিজের জমানো অর্থ যদি নাও থাকে তবে আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে উপহার নিতে পারেন। যদি ব্যক্তিগতভাবে ধার করতে হয়, তাহলে অমন ধার ব্যাংকে অন্তত দুই মাস রাখুন; তারপর গৃহঋণের আবেদন করুন। এছাড়া ডাউনপেমেন্ট পুঁজির জন্য বিশেষ ঋণ সহায়তার উপায় আছে, যেটি আর একদিন আলাপ করবো। 

৪। ক্রেডিট স্কোর ভালো রাখুন। আর্থিক সামর্থ্যরে পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ক্রেডিট স্কোর। ক্রেডিট স্কোর ৫৮০ বা তার নিচে থাকলেও ঋণ পাওয়া যায়, কিন্তু স্কোর যতো কম হবে আপনার পছন্দের সুযোগ এবং ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা ততো কমে যাবে। স্কোর ৭৪০-এর ওপরে রাখতে চেষ্টা করুন। আমরা অনেক সময়ে আর্থিক সামর্থ্য থাকা সত্তে¡ও ব্যস্ততার জন্য সঠিক সময়ে কিস্তি পরিশোধ করতে ভুলে যাই। এ বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখুন। আপনার ব্যাংকের সাথে আলাপ করে এমন ব্যবস্থা করুন যাতে আপনার ‘মিনিমাম পেমেন্টটা’ স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ব্যাংক হিসাব থেকে পরিশোধ হয়ে যায়। যদি কোনো কারণে পরিশোধের তারিখ মিস করেন, তাহলে যতো শিগগিরই সম্ভব কার্ড কোম্পানি বা পাওনাদারের কাছে ফোন কোরে কারণ ব্যাখ্যা করুন এবং অনুরোধ করুন যাতে পেনাল্টি না করে। এছাড়া ক্রেডিট মেরামতের বিষয়ে কিছু ব্যবস্থা নেয়া যায়। সে ধরনের ব্যবস্থাও আগেভাগে গ্রহণ করুন। 

৫। কোনো ঋণ থাকলে মিটিয়ে ফেলুন। ব্যক্তিগত ঋণের কথা ভিন্ন। কিন্তু যদি ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে আপনার কোনো ঋণ থাকে, তাহলে সেগুলো যথাসম্ভব মিটিয়ে ফেলুন এবং গৃহঋণ পাওয়ার আগে নতুন কোনো ঋণ বা ক্রেডিটের মধ্যে যেমন- গাড়ি কেনা ইত্যাদিতে যাবেন না।

৬। ব্যাংকে কমপক্ষে দুই বছরের নিয়মিত আদান-প্রদান রাখুন। বর্তমানের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে যার ব্যাংক হিসাব যতো নিয়মিত এবং দীর্ঘ তিনি ততো বেশি সুযোগ পাবেন। যদিও অনেক ঋণদাতা অপেক্ষাকৃত কম সময়ের ব্যাংক হিসাব সত্তে¡ও ঋণ দেয়, কিন্তু সেক্ষেত্রে সম্ভাবনা কমে যাবে এবং দেখা যাবে যে তারা সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। 

৭। চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট নিয়োগ করুন। আপনার আয়-ব্যয়ের হিসাব রক্ষায় প্রয়োজনে চার্টার্ড অ্যাকাউডেন্ট নিয়োগ করুন, অন্তত দুই বছরের জন্য। আপনার হিসাবের ওপর একজন অ্যাকাউন্ট্যান্টের সনদ থাকলে ঋণদাতারা বেশি ভরসা পায়। তাবে খেয়াল রাখবেন অ্যাকাউন্ট্যান্টরা সাধারণত ট্যাক্স কমানের জন্য আয় কমানো বা ব্যয় বাড়ানোর চেষ্টা করে থাকেন। ট্যাক্স কমানোটা ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে আপনার বিপক্ষে যেতে পারে।

৮। মাল্টিইউনিট বাড়ি কেনার চেষ্টা করুন। চেষ্টা করুন দুই, তিন বা চার ইউনিটবিশিষ্ট বাড়ি কেনার। তাতে একটি ইউনিট আপনার প্রাথমিক আবাসনের জন্য ব্যবহার করে অন্যগুলো ভাড়া দিতে পারবেন। ভাড়ার আয় আপনার কিস্তির একটি বড় অংশ মেটাতে পারে। তাই ঋণদাতা আপনার পরিশোধের সামর্থ্যরে ব্যাপারে আশ্বস্ত হতে পারে।

৯। ‘সেলার্স ক্রেডিট’ নিতে চেষ্টা করুন। বিক্রেতার সাথে বাড়ির দরাদরির পর যথাসম্ভব বেশি ‘সেলার্স ক্রেডিট’ নিতে চেষ্টা করুন। এমনকি বিক্রেতা দরাদরিতে যতোটুকু দাম কমাতে রাজি হয়েছেন, তার কিছু অংশ তাকে ‘সেলার্স ক্রেডিট’ হিসেবে দিতে অনুরোধ করুন। বিক্রেতানা ক্ষেত্রবিশেষে ৩-৬ শতাংশ ‘সেলার্স ক্রেডিট’ হিসেবে দান করতে পারেন। এই অর্থ ক্লোজিং কস্ট মেটাতে ব্যবহার করা যায়; ঋণদাতা কোনো প্রশ্ন তোলে না। তাছাড়া এই বাড়তি অর্থ সুদের হার কিনে নামানোর জন্যও ব্যবহার করা যায়।


শেয়ার করুন