২০ মে ২০১২, সোমবার, ০৬:৪০:০০ পূর্বাহ্ন


ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৩-২০২৩
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন ওয়াশিংটনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ


দেশের ন্যায় প্রবাসেও যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করা হয়েছে। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্মসূচির আয়োজন করে। ৭ মার্চ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্স্যুলেট বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচির মধ্যে ছিলো জাতিজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন এবং আলোচনা সভা।

বাংলাদেশ দূতাবাস

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে গত ৭ মার্চ মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালিত হয়েছে। সকালে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দূতাবাসের দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নারে অবস্থিত জাতির পিতার আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান মিনিস্টার (পলিটিক্যাল-১) ও দূতালয় প্রধান দেওয়ান আলী আশরাফ এবং কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল-৩) শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি। পরে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের উপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে পরে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত ইমরান ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং বঙ্গবন্ধুর মহাকাব্যিক ভাষণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি ৭ই মার্চকে বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু সেই গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ প্রদানের মাধ্যমে কার্যত স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক এই ভাষণের গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) এর  বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্যের তালিকা ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল’ রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। রাষ্ট্রদূত ইমরান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার এবং নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার অনুরোধ জানান।

বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শেষ হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ফার্স্ট সেক্রেটারি মোঃ আতাউর রহমান।

রোমস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস 

ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গত ৭ মার্চ ‘ঐতিহাসিক ০৭ মার্চ’ উদযাপন করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ০৭ মার্চ ১৯৭১-এ প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণ স্মরণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান এর নেতৃত্বে এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণের উপস্থিতিতে সকাল ১০টায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতির পিতা ও সমস্ত বীর শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদর্শন এবং সকলের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ঐতিহাসিক এই দিনের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর শহিদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ এর ভাষণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই ভাষণ শুধুমাত্র বাঙালি জাতিকেই স্বাধীনতা অর্জনে অনুপ্রাণিত করেনি, সারা বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত স্বাধীনতাকামী মানুষকে সর্বদা অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাবে। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃত ৭ই মার্চের ভাষণটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনুধাবন করেই ইউনেস্কো ২০১৭ সালে এ ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রমাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে ‘মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারাও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। 

অনুষ্ঠান শেষে সমস্ত শহিদদের আত্মার মাগফেরাত ও বাংলাদেশের অব্যাহত সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। অনুষ্ঠানে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন