০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০৮:৫২:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন : ২০ সংগঠনের উদ্যোগে সভা
সাধারণ সম্পাদকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার দাবি, সাধারণ সভার তারিখ পুনর্নির্ধারণের আহ্বান
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৫-২০২৩
সাধারণ সম্পাদকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার দাবি, সাধারণ সভার তারিখ পুনর্নির্ধারণের আহ্বান


প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন। স্বপ্নের ভবনকে কেন্দ্র করে দুঃস্বপ্ন দেখা দিয়েছে। প্রবাসের জালালাবাদবাসী বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এক পক্ষ ভবনের পক্ষে আরেক পক্ষ ভবন চায় না, চায় অর্থ। দুই পক্ষের মধ্যে যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে, তা কোনোভাবেই দূর করা যাচ্ছে না। আবার সমঝোতাও করা যাচ্ছে না। কারণ পেছন থেকে ইন্ধন দিচ্ছেন নাটের গুরুরা। ইন্ধন বললে ভুল হবে, আসলে তারাই পুরো কমিটিকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের কথার বাইরে কার্যকরি কমিটির যেন যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কার্যকরি কমিটির অধকাংশ সদস্য যেন নিয়ন্ত্রকের কাছে আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। আবার কার্যকরি কমিটিও বিভক্ত হয়ে পড়েছে। চলছে অসাংবিধানিক কার্যক্রম। যে সংবিধানের দোহাই দিয়ে ভবন ক্রয়ের বিষয়টি মহীরূহে পরিণত হয়েছে। সেই গঠনতন্ত্রকে একের পর পদদলিত করে চলেছেন সভাপতি বদরুল হোসেন খানের নেতৃত্বাধীন কার্যকরি কমিটির অংশ। সাধারণ সম্পাদককে অসাবিধানিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে, সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক থাকা সত্ত্বেও একজনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে, সাধারণ সভা ডাকা হচ্ছে। কার্যকরি কমিটির সভাও বাতিল করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে কার্যকরি কমিটির সভা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। সব কিছুই যেন গায়ের জোরেই চলছে। ভবনের ব্যাপারে গঠনতন্ত্র গঠনতন্ত্র বলে যারা চিৎকার দিচ্ছে, তারাই গঠনতন্ত্র বার বার লঙ্ঘন করছেন। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বলছেন, কুইনিন জ্বর সারাবে বটে, কিন্তু কুইনিন সারাবে কে? তারপরেও চলছে সমঝোতার নানা উদ্যোগ। এবার উদ্যোগ নিয়েছে সিলেটের ২০টি আঞ্চলিক সংগঠন।

জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনকের ভবন ক্রয়কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংকট নিরসনের লক্ষ্যে সিলেট সদর সমিতির সভাপতি দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী ও শ্রীমঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মামুনুর রশীদ শিপুর যৌথ আহ্বানে বৃহত্তর সিলেটের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান ও সাবেক কার্যকরি কমিটির সদস্যবৃন্দের উপস্থিতিতে গত ১৫ মে সোমবার রাতে এস্টোরিয়াস্থ হ্যালো বংলাদেশ রেস্টুরেন্টে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশনের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সৈয়দ শওকত আলী। সঞ্চালনা করেন মামুনুর রশীদ শিপু ও দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী। সভার শুরুতে গত সভার কার্যবিবরণী শুনানো হয়। বৃহত্তর সিলেটের ২০টি আঞ্চলিক সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সভায় জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ কার্যকরি কমিটির সদস্য ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো সত্ত্বেও তারা সভায় উপস্থিত হননি।

সভায় নেতৃবৃন্দ জালালাবাদ ভবন ক্রয়সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নেন এবং নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করেন। সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম ভবনের ইন্সপেকশন রিপোর্ট, অ্যাপ্রাইজাল রিনোভেশনের ডকুমেন্ট উত্থাপন করে তথ্যের ভিত্তিতে সবকে বিস্তারিত অবগত করে বলেন, গঠনতন্ত্রের বিবেচনায় ব্যাপারটি ভুল হতে পারে এবং এক্ষেত্রে যেসব ভুলত্রুটি হয়েছে তা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করে অনুতপ্ত হন। তিনি জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবেছেন। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামকে সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত ছাড়া বরখাস্ত করাকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ বলে সবাই।

অভিমত ব্যক্ত করেন। অ্যাসোসিয়েশনের আগামী ১১ জুনের সাধারণ সভার নোটিশে শুধুমাত্র আজীবন সদস্য ও ২০২১ সালে নবায়ণকৃত সদস্যরা সভায় যোগদান করতে পারবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে সদস্য-সদস্যাসহ সব জালালাবাদবাসীর উপস্থিত নিশ্চিত করা ও সাধারণ সম্পাদকের বরখাস্ত প্রত্যাহার এবং সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদকের আজীবন সদস্যপদ বাতিলকে পুনর্বহাল করে নতুন করে সাধারণ সভার তারিখ নির্ধারণ করার জন্য জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরি কমিটিকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত হয়। বৃহত্তর সিলেটবাসীর প্রাণের সংগঠন ৩৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনের একটি ভবন ক্রয়কে কেন্দ্র করে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনের জন্য জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের বৃহত্তর স্বার্থে অনতিবিলম্বে কার্যকরি কমিটি ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের প্রতি আবারও জোর দাবি জানানো হয়। সভায় একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটি জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরি কমিটি ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও তাদের প্রতিনিধির মধ্যে যারা উপস্থিত হয়েছিলেন তারা হলেন-সিলেট সদর থানা অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনকের সভাপতি আব্দুল মালিক খান লায়েক, সিলেট সমিতির সভাপতি দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী, মৌলভী বাজার জেলা সমিতির সভাপতি আজমল খান, মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলু মিয়া, মো. আবুল খায়ের সদস্য, যুক্তরাষ্ট্র হবিগঞ্জ সদর সমিতির সভাপতি সভাপতি মিয়া মো. আসকির, হবিগঞ্জ সোসাইটির উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ ফজলুর রহমান, বিয়ানীবাজার সমিতির উপদেষ্টা মো. শফিকুর রহমান, শ্রীমঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মামুনুর রশীদ শিপু, কুলাউড়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ আলাউদ্দীন, ওসমানী নগর অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি আজিজ আহমদ ছালিক, সাধারণ সম্পাদক ফকরুল চৌধুরী মিসলু, রাজনগর উপজেলা উন্নয়ন পরিষদ ইউএসএ ইনকের সভাপতি মাসুক মিয়া, উপদেষ্টা শাহ রকিব আলী, রাজনগর উপজেলা পরিষদ ইউএসএ ইনকের সভাপতি হেলালুর রহমন খান, নবীগঞ্জ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি শাহ জামাল হোসেইন, সাধারণ সম্পাদক ইমরান আলি টিপু, বিশ্বনাথ প্রবাসী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শিহাব উদ্দিন আহমদ, বড়লেখা সমিতির সভাপতি আব্দুল জব্বার, জুড়ি সমিতির আব্দুল করিম, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনকের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম, সহ-সভাপতি শাহীন কামালি (সুনামগঞ্জ), সদস্য হেলিম উদ্দিন (সিলেট), সাবেক কোষাধ্যক্ষ আসাদুল গণি আসাদ, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট ইমাদ চৌধুরী, ইয়ামিন চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যাংকার আজাদ উদ্দীন, মনসুর চৌধুরী, মইনুজ্জামান চৌধুরী, মখন মিয়া, জয়নাল উদ্দিন লায়েক, মোজাফফর আহমদ, এনায়েত হোসেন জালাল, আল আমিন জিলা।

সভায় অনেক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নিউইয়র্কের বাহিরে ও দেশে থাকায় উপস্থিত হতে পারেননি। অনেকে ফোন করে সভার সিদ্ধান্তের প্রতি তাদের সম্মতি জানিয়েছেন। নিউইয়র্ক গোলাপগঞ্জ সোসাইটির সভাপতি এবাদ চৌধুরী, জকিগঞ্জ সোসাইটির সভাপতি আবিদুর রহমান। পরিশেষে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ সবাই একমত প্রকাশ করে বলেন যে, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের মানমর্যাদা রক্ষার জন্য আমরা সব সময় ঐক্য থাকবো, আমাদের মধ্যে কোনো দ্বিমত থাকবে না।

এই সংকট নিরসনের জন্য বৃহত্তর সিলেটের নেতৃবৃন্দ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সব সামাজিক সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে বড় পরিসরে সভার আয়োজন করার পক্ষে অনেকে মত প্রকাশ করেন। পরিশেষে সভার আয়োজক ও সভাপতিসহ সব নেতৃবৃন্দকে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

শেয়ার করুন